রোহিঙ্গাদের দেশে ফেরাতে তুরস্কের সহায়তা আহবান প্রধানমন্ত্রীর

9
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে গণভবনে ঢাকায় সফররত তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত চাভুসুগ্লু সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।

কাজিরবাজার ডেস্ক :
গণহত্যা ও জাতিগত বিদ্বেষের শিকার হয়ে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা নাগরিকদের দেশে ফেরার ব্যাপারে তুরস্কের সহায়তা আহ্বান করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত চাভুসুগ্লু গণভবনে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে প্রধানমন্ত্রী এই আহবান জানান।
প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব হাসান জাহিদ তুষার পরে বৈঠক সম্পর্কে বলেন, “রোহিঙ্গা ইস্যুতে আলোচনাকালে প্রধানমন্ত্রী জোরপূর্বক বিতাড়িত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের নাগরিকদের নিজ মাতৃভূমিতে প্রত্যাবর্তন নিশ্চিতে তুরস্ককে সম্পৃক্ত হওয়ার আহ্বান জানান।”
সর্বশেষ ২০১৭ সালে মিয়ানমারের রাখাইনে সেনা অভিযান শুরুর পর থেকে কয়েক দফায় সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। আগে থেকে বাংলাদেশে ছিল আরও চার লাখ রোহিঙ্গা। এদের ফিরিয়ে নেয়ার জন্য আন্তর্জাতিক চাপ থাকলেও মিয়ানমার সরকার এ ব্যাপারে কোন আগ্রহ দেখাচ্ছে না। ২০১৭ সালের শেষ দিকে বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি করা হলেও, সেই প্রত্যাবাসন আজও শুরু হয়নি।
রোহিঙ্গারা যেন দেশে ফিরে যাওয়ার পর নিরাপদ পরিবেশ পায় সেজন্য অনেকদিন ধরেই আন্তর্জতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করে আসছে বাংলাদেশ। তুরস্ক অবশ্য এই আহবানে সাড়া দিয়ে আসছে শুরু থেকেই।
উপ-প্রেস সচিব আরো বলেন, বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে তুরস্ককে আরও বেশি বিনিয়োগ করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ভূ-রাজনৈতিক অবস্থানের কারণে বাংলাদেশের বিশাল আঞ্চলিক বাজার এবং অভ্যন্তরীণ বাজারের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, “দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার কেন্দ্রে অবস্থানের কারণে বাংলাদেশের বিশাল মার্কেট রয়েছে। এখানে বিনিয়োগ করলে উভয়ই লাভবান হবে।”
বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বাড়াতে তুরস্কের আগ্রহের কথা জানিয়ে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন, তার দেশ বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে ‘মূল্য দেয়’। দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্ককে শক্তিশালী করার জন্য যা কিছু করার তার দেশ সেটা করবে। জ্বালানি থেকে পর্যটন- সকল খাতেই তুরস্ক বাংলাদেশে বিনিয়োগ করছে বলে জানান দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রী।
এসময় তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়িপ এরদোয়ানকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। সেজন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন,
করোনাভাইরাস মহামারী পরিস্থিতির উন্নতি হলে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ-জয়ন্তীর মাস মার্চে প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান ঢাকা সফরে আসতে পারেন।
বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারকে কেন্দ্র করে ২০১৩ সালের পর ঢাকা ও আঙ্কারার সম্পর্কে টানাপোড়েন দেখা গিয়েছিল, কিন্তু সম্প্রতি এই দুই দেশের সম্পর্ক আবার স্বাভাবিক হয়ে উঠছে।