জেলা ও মহানগর যুবলীগের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে বক্তারা ॥ বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণ ঠেকানোর সাধ্য কারো নেই

68
জঙ্গিবাদ, মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে মহানগর যুবলীগের বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ।

সিলেট জেলা যুবলীগ নেতৃবৃন্দ বলেছেন, স্বাধীন বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক শক্তি আবারও মাথাচাড়া দিয়ে উঠার পাঁয়তারা করছে। তারা জাতির পিতার ভাস্কর্য উপড়ে ফেলার মতো স্পর্ধা দেখাচ্ছে। বঙ্গবন্ধুর একজন সৈনিক ‘‘বেঁচে থাকতে সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে এদেশে বেড়ে উঠতে দেওয়া হবে না। বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নিয়ে অপরাজনীতির দাঁতভাঙ্গা জবাব দেয়া হবে। স্বাধীনতার বিরোধীতাকারী জঙ্গিবাদ ও মৌলবাদিরা আজ ভাস্কর্যের বিরোধীতার নামে বঙ্গবন্ধু কন্যার নেতৃত্বে এগিয়ে চলা বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা ব্যাহত করার ষড়যন্ত্র করছে।
৩০ নভেম্বর সোমবার কেন্দ্রিয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে সিলেট জেলা যুবলীগ আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল পূর্ববর্তী সমাবেশে বক্তারা উপরোক্ত কথা বলেন। জেলা যুবলীগের সভাপতি শামীম আহমদ ভিপির সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমদের পরিচালনায় মিছিল পূর্ব সমাবেশে বক্তারা বলেন, ভাস্কর্য আর মূর্তি এক বিষয় নয়। কিন্তু দেশের ধর্মপ্রাণ মানুষকে বিভ্রান্ত করে মৌলবাদী অপশক্তি বিএনপি জামায়াতের স্বপ্ন বাস্তবায়নে উঠে পড়ে লেগেছে। স্বাধীনতা বিরোধী চক্রের পেছনের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতেই চরমোনাই আর মামুনুলরা তৃতীয় শক্তিকে পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় আনার অপচেষ্টা করছে। তাই অবিলম্বে চরমোনাই পীর ও উগ্রবাদী মামুনুল হককে গ্রেফতার করে

সারাদেশে মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে জেলা যুবলীগের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ।

আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। বক্তারা আরো বলেন, দেশের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে জাতির পিতার ভাস্কর্য নির্মাণে কোনো বাধা আসলে যুবলীগ তা প্রতিহত করতে প্রস্তুত রয়েছে।
সিলেটের ঐতিহাসিক রেজিস্ট্রারি মাঠ থেকে বের হওয়া মিছিলটি নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ মিছিল পরবর্তী বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেলা যুবলীগ সভাপতি শামীম আহমদ ভিপি ও সাধারণ সম্পাদক মো. শামীম আহমদসহ জেলা যুবলীগের নেতৃবৃন্দ। এর আগে খন্ড খন্ড মিছিল নিয়ে সিলেটের ঐতিহাসিক রেজিস্ট্রারি মাঠে সমবেত হোন জেলা যুবলীগে নেতৃবৃন্দ।
এদিকে জঙ্গিবাদ, মৌলবাদ ও সম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে দেশব্যাপী কেন্দ্রিয় কর্মসূচীর অংশ হিসেবে সিলেট মহানগর যুবলীগের উদ্যোগে ৩০ নভেম্বর সোমবার দুপুর ২টায় ঐতিহাসিক কোর্ট পয়েন্ট থেকে এক বিশাল বিক্ষোভ মিছিল বের হয়।
মিছিলটি নগরীর প্রদান প্রদান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে চৌহাট্টা পয়েন্টে এক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
মিছিল শেষে প্রতিবাদ সমাবেশে সিলেট মহানগর যুবলীগের সভাপতি আলম খান মুক্তি বলেন, বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণের বিরোধিতা করছে ধর্মভিত্তিক কয়েকটি দল। ইসলামী আন্দোলন হুমকি দিয়েছে ভাস্কর্য নির্মাণ হলে তারা বুড়িগঙ্গায় ফেলে দেবে। তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণ ঠেকানোর সাধ্য কারও নেই। সিলেট মহানগর যুবলীগ এদেরকে প্রতিহত করতে মাঠে থাকবে। ‘করোনা মহামারির সময়েও প্রধানমন্ত্রীর একান্ত চেষ্টায় যখন দেশ এগিয়ে যাচ্ছে তখন স্বাধীন বাংলার শত্র“রা আবার পাঁয়তারা শুরু করেছে যেন পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করা যায়। ‘বঙ্গবন্ধুর এই বাংলায় কোনো জঙ্গি, মৌলবাদীদের স্থান নেই। জঙ্গিবাদ, মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টিকারীদের রাজপথে থেকে প্রতিহত করবে যুবলীগ।
সিলেট মহানগর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মুশফিক জায়গীরদার বলেন, জঙ্গিবাদ, মৌলবাদ ও সন্ত্রাসবাদ এই তিনটি শব্দ বর্তমানে আমাদের কাছে অতি পরিচিত কারন এই তিনটিরই সম্মুখীন আমাদের দেশ বাংলাদেশ। আমরা সবাই জানি যে, এই জঙ্গিবাদ ও মৌলবাদ শব্দ দুটি একে অপরের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত কারণ মৌলবাদের সর্বোচ্চ পর্যায়কে আমরা জঙ্গিবাদ বলি। এরপর এই দুটোই হচ্ছে সন্ত্রাসমূলক কাজের অর্ন্তভুক্ত। সুতরাং কোনো রাজনৈতিক বা ধর্মীয় বা আদর্শিক উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্য যেকোনো ধরনের সন্ত্রাসী বা হিংসাত্মক কর্মকান্ডকে জঙ্গিবাদ বলে। অতিরঞ্জিত ধর্মীয় অনুভূতির কারণেও উগ্র মৌলবাদের সৃষ্টি হয় এবং সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টি হয়। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে তাদের প্রতিহত করবে যুবলীগ। নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, কথিত ধর্ম ব্যবসায়ী নেতা মামুনুল হককে ২৪ ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানান।
বিক্ষোভ মিছিলে উপস্থিত ছিলেন সাবেক ছাত্রনেতা, সিলেট মহানগর আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদ। এ সময় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে সিলেট মহানগর যুবলীগের নেতৃবৃন্দ ও ২৭টি ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক সহ মহানগর যুবলীগের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।