অসময়ের বৃষ্টিতে তাহিরপুরে শীতকালিন সবজির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি

13
তাহিরপুরের বাদাঘাট ইউনিয়নে মোল্লাপাড়া গ্রামে বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে যাওয়া সবজি ক্ষেত।

বাবরুল হাসান বাবলু তাহিরপুর থেকে :
অসময়ের বৃষ্টিতে তাহিরপুরে শীতকালীন সবজির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি। দু দিনের ভারী বর্ষণে তলিয়ে গেছে বীজতলা, রবি শস্যের জমি। বিগত দফায় দফায় বন্যায় আমন ধান নষ্ট হয়ে এমনিতেই কৃষক সর্বশান্ত। সেই ক্ষতির হিসেব শেষ হতে না হতেই সাগরে গভীর নিম্নচাপের ফলে গত বৃহস্পতিবার থেকে ভারী বৃষ্টিতে রবি শস্য চাষীদের শীতকালীন সবজি ক্ষেত ও বীজতলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতিতে কৃষক দিশেহারা। কি করবেন কৃষক বুঝতে পারছেন না।
উপজেলার বাদাঘাট ও উত্তরবড়দল ইউনিয়নে ব্যাপকহারে রবি শস্য চাষাবাদকরা হয়। তাছাড়া বালিজুরী, তাহিরপুর সদর ও উত্তর শ্রীপুর ইউনয়িনে কিছু কিছু এলাকা রবিশস্য চাষাবাদ করেন চাষীরা।
শনিবার সরজমিন উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় গিয়ে দেখা যায় এ চিত্র। অনেক কৃষক জমি চাষাবাদ করে বীজতলাতে মুলা, ডাটা, পালং শাক, লাল শাক, ধনে পাতা টমেটো, বেগুন, মরিচ, লাউ, সীম, ফুলকপি, বাঁধাকপি, বরবটি, করোলা সহ নানা শীতকালীন সবজির বীজ বপন করেছেন। বর্তমানে তাদের বপনকৃত অনেক বীজতলা দু’দিনের বৃষ্টির পানিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে। অনেক জমিতে কাদা জমে বীজতলা নষ্ট হয়ে পড়েছে। অধিকাংশ চাষীরাই বলছেন, ভারী বৃষ্টিতে তাদের বপনকৃত সকল রবি শস্যই নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা বেশী।
এ অবস্থায় রবিশস্য চাষীরা কি করবেন তা নিয়ে তাদের মধ্যে দেখা দিয়েছে নানা হতাশা। নতুন করে জমি চাষাবাদ করে বীজতলা তৈরী, বীজ বপন, বীজ ক্রয়, সার, কীটনাশক সহ নানা আনুষঙ্গিক বিষয়ের হিসেব নিকেশ মিলাতে রবি শস্য চাষীরা বিপাকে। কি করবেন বুঝে উঠতে পারছেন না।
বাদাঘাট ইউনিয়ন মোল্লাপাড়া গ্রামের রবি শস্য চাষী জুবায়ের আহমেদ বলেন, কিছুদিন পূর্বে তিনি জমিতে আগাম টমেটো রোপণ করেছিলেন বছরের শেষ বন্যায় রোপণকৃত টমেটোর চারা নষ্ট হয়ে গেছে। কিছুদিন পূর্বে নতুন চারা তুলে জমিতে আবারো টমেটো রোপন করেছেন বর্তমানে দু’দিনের ভারী বৃষ্টিতে টমেটো ক্ষেত পানিতে নিমজ্জিত অবস্থায় আছে। পানিতে নিমজ্জিত গাছ নষ্ট হয়ে যাবে বলে তিনি জানান।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস তাহিরপুর উপসহকারী (বাদাঘাট ইউনিয়ন) আবুল হাসান বলেন, ইউনিয়নের একাধিক রবি শস্য চাষী তাদের ক্ষয়ক্ষতির কথা জানিয়েছেন। তাছাড়া আমি নিজেও ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ঘুরে দেখেছি। বৃষ্টিতে রবি শস্যের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
উত্তরবড়দল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল কাশেম বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সরকারীভাবে সার, বীজ, কীটনাশক সহায়তা না দিলে কৃষক উঠে দাঁড়াতে পারবে না।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাসান উদ-দৌলা বলেন, অসময়ের বৃষ্টিতে রবি শস্যের ক্ষতি হতে পারে। তবে কি পরিমাণ ক্ষতি হবে এখনই বলা যাচ্ছে না। তবে এ বৃষ্টি আমন চাষীদের উপকারে আসবে বলেও তিনি জানান।