বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব শুরু, জুম্মায় লাখো মুসল্লির নামাজ আদায়

48

কাজিরবাজার ডেস্ক :
টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে চার দিন বিরতি দিয়ে শুক্রবার শুরু হয়েছে পবিত্র হজ্বের পর দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় জমায়েত তাবলিগ জামাতের তিন দিনব্যাপী বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব। পথে পথে নানা ভোগান্তি উপেক্ষা করে দেশের ১৩ জেলা থেকে মুসল্লিদের কাফেলা আসছে টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমাস্থলে। ইতোমধ্যে অগণিত ধর্মপ্রাণ মুসল্লির অংশ গ্রহণ ও মুসল্লিদের আগমনে টঙ্গীর ইজতেমাস্থল এবং আশপাশের এলাকা এখন মুসল্লিদের পদচারণায় মুখরিত।
প্রথম পর্বের তুলনায় এ পর্বে শীতের তীব্রতা হ্রাস পেয়েছে। দেশ-বিদেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মুসল্লিরা জামাতভুক্ত হয়ে এখনও ইজতেমাস্থলের দিকে ছুটে আসছেন। আসছেন বিদেশী মুসল্লিরাও। জুম্মা’বারে লাখো মুসল্লির ঢল নামে টঙ্গীর তুরাগ তীরে। নামাজের আগেই ইজতেমার পুরো প্যান্ডেল ও ময়দান কানায় কানায় ভরে যায়। প্যান্ডেলের নিচে জায়গা না পেয়ে মুসল্লিরা অংশ নেন ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কসহ আশপাশের সড়ক ও গলিগুলোর ওপরে। রবিবার আখেরি মোনাজাতের পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত মুসল্লিদের এ ঢল অব্যাহত থাকবে। এদিকে ইজতেমার অন্যতম আকর্ষণ যৌতুকবিহীন বিয়ে এবারের এ পর্বেও অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। আগামীকাল রবিবার আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় পর্বের বিশ্ব ইজতেমা শেষ হবে।
শুক্রবার বাদ ফজর তাবলিগ জামাতের বাংলাদেশের মাওলানা ফারুক হোসেনের আমবয়ানের মধ্য দিয়ে টঙ্গীর তুরাগ তীরে শুরু হয়েছে বিশ্ব ইজতেমার ২য় পর্বের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম। মূলমঞ্চ থেকে দেয়া এ বয়ান বিভিন্ন ভাষায় অনুবাদ (তরজমা) করে প্রচার করা হয়। দুপুরে বৃহত্তম জুম্মার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। ওই নামাজের ইমামতি করেন কাকরাইল মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মোহাম্মদ জোবায়ের। এতে লাখ লাখ মুসল্লি অংশ নেন।
ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বে পুরো ময়দানকে ২৮টি খিত্তায় ভাগ করা হয়েছে। এতে ঢাকাসহ (একাংশ) দেশের ১৩টি জেলার মুসল্লিরা অংশ নিচ্ছেন। এদিকে নিরাপত্তা চাদরে ঢেকে ফেলা হয়েছে পুরো বিশ্ব ইজতেমা ময়দানকে। ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা যাতে টঙ্গীর ইজতেমাস্থলে স্বাচ্ছন্দ্য এবং নিরাপদে পৌঁছতে পারে সেজন্যও বৃহস্পতিবার সকাল থেকে গাজীপুরে র‌্যাব ও পুলিশের অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
বৃহত্তম জুম্মার নামাজ : বিশ্ব ইজতেমার শুরুর দিন জুম্মা বার হওয়ায় ইজতেমা মাঠে অনুষ্ঠিত হয়েছে বৃহত্তম জুম্মার জামাত। জুম্মা নামাজের ইমামতি করেন তাবলিগ জামাতের মুরব্বি বাংলাদেশের কাকরাইল মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মোহাম্মদ জোবায়ের। ইজতেমায় যোগদানকারী মুসল্লি ছাড়াও জুম্মার নামাজে অংশ নিতে ঢাকা-গাজীপুরসহ আশপাশের এলাকার লাখ লাখ মুসল্লি ইজতেমাস্থলে হাজির হন। প্রথম পর্বের তুলনায় এ পর্বে শীতের তীব্রতা কম হওয়ায় ভোর থেকেই রাজধানীসহ আশপাশের এলাকা থেকে ইজতেমা মাঠের দিকে মানুষের ঢল নামে। জুম্মার নামাজ আদায় করতে রাজধানীর আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে বিপুল সংখ্যক মুসল্লি ছুটে আসেন। ইজতেমার মাঠ উপচিয়ে জামাত চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। ঢাকা-ময়মনসিংহ রোডের পাশ ঘেঁষে ইজতেমা মাঠের উত্তর দিকের রাস্তায়ও জামাত দাঁড়ায়। মূল প্যান্ডেলে জায়গা না পেয়ে অগণিত মুসল্লিদের রাস্তায় কিংবা মহাসড়ক ও খোলা জায়গার উপর খবরের কাগজ, জায়নামাজ, পলিথিন এবং হোগলা বিছিয়ে নামাজ আদায় করতে দেখা গেছে।
আখেরি মোনাজাত রবিবার সকালে : বিশ্ব ইজতেমার মারকাজের শূরা সদস্য মুরব্বি মোঃ মাহফুজ বলেন, প্রথম পর্বের মতো দ্বিতীয় পর্বেও বাংলাদেশের কাকরাইল মসজিদের হাফেজ মাওলানা মোহাম্মদ জোবায়ের আরবী ও বাংলা ভাষায় আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করবেন। মুসল্লিদের ভোগান্তি কমাতে রবিবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে সাড়ে ১১টার মধ্যে আখেরি মোনাজাত শেষ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।