রায়হানের পরিবার ও এলাকাবাসীর সংবাদ সম্মেলন ॥ ৭২ ঘন্টার মধ্যে হত্যার সাথে জড়িত এসআই আকবর সহ অন্যান্যদের গ্রেফতার করতে না পারলে হরতাল-অবরোধসহ কঠোর কর্মসূচি

10
পুলিশ হেফাজতে নৃশংসভাবে মো: রায়হান আহমদ হত্যার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ।

স্টাফ রিপোর্টার :
নগরীর বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে পুলিশী নির্যাতনে রায়হান উদ্দিন আহমদ হত্যায় অভিযুক্ত ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াসহ জড়িত পুলিশ সদস্যদের সাথে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার না করা হলে হরতাল-সড়ক অবরোধসহ কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দিয়েছেন নগরীর বৃহত্তর আখালিয়াবাসী। একই সাথে ৬ দফা দাবিও তুলে ধরেছেন রায়হানের মা সালমা বেগম।
গতকাল রবিবার দুপুরে নিহত রায়হানের আখালিয়া নেহারীপাড়া ডি ব্লকের ১ নং বাড়িতে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন তার মা সালমা বেগম। তিনি বলেন, আমার ছেলে কোনো দল করতো না। তাকে নির্মমভাবে নির্যাতন করে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। আমার একটাই দাবি, আমার ছেলের হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই। সংবাদ সম্মেলনে নিহত রায়হানের মা সালমা বেগমের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন রায়হানের মামাতো ভাই ও এলাকার মুরব্বী শওকত হোসেন।
দাবিগুলো হলো: ১. রায়হান হত্যাকাণ্ডে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি, ২. রায়হান হত্যায় জড়িত পুলিশের উপ পরিদর্শক (এসআই) আকবর ভূঁইয়াসহ দোষীদের দ্রুত গ্রেফতার, ৩.পলাতক এসআই আকবর ভূঁইয়াকে গ্রেফতার আইজিপির নির্দেশ, ৪.পুলিশ কমিশনারের পক্ষ থেকে পুর্ণাঙ্গ বক্তব্য, ৫.নিহতের পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদানে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন, ৬.৭২ ঘণ্টার মধ্যে জড়িতদের গ্রেফতার না করলে হরতাল-সড়ক অবরোধসহ বৃহত্তর আন্দোলন।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, রায়হান একটি ডাক্তারের চেম্বারে কাজ করতো। কে বা কারা তাকে বন্দরবাজার ফাঁড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে নির্যাতন করা হয়। ভোরে তৌহিদের মোবাইল থেকে রায়হান ফোন করে বলে তাকে বাঁচাতে। তিনি জানায় ১০ হাজার টাকা নিয়ে থাকায় যেতে। ভোরে বন্দরবাজার ফাঁড়িতে গেলে রায়হানের চাচা হাবিবুল্লাহ চৌধুরীকে দেখা করতে না দিয়ে সকালে আসতে বলেন। সকালে গেলে রায়হানের শরীর খারাপ করেছে এবং মেডিক্যাল যেতে বলে। হাসপাতালে ৭টা ৫০মিনিটে রায়হানের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার তান্নি বাদী হয় কোতোয়ালি থানায় মামলা দিতে গেলে পুলিশ মামলা নিতে গড়িমিস করে। লিখিত আরো বক্তব্যে বলা হয়, পরে উপ পুলিশ কমিশনারের নির্দেশে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়। মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনে (পিবিআই) গেলে আমরা আশাবাদী হলেও এখন মামলার ভবিষ্যত অন্ধকার দেখতে পাচ্ছি। তাই তাদের আইনের আওতায় না আনলে কঠোর আন্দোলনে নামবো আমরা। তিনি বলেন, ক্ষতিপূরণ বলতে আমি একটাই চাচ্ছি আমার ছেলের হত্যাকারীদের প্রকাশ্যে ফাঁসি দেওয়া হোক। কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিলেও আমার ছেলেকে ফিরে পাবো না। ক্ষতিপূরণ একটাই আমার ছেলে হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, আওয়ামী লীগের সাবেক,কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, স্থানীয় কাউন্সিলর মখলিছুর রহমান কামরান, ৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলন রেজাউল হাসান কয়েস লোদি, ১০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলন তারেক উদ্দিন তাজ, ৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইলিয়াসুর রহমান, কাউন্সিলর তৌফিক বক্স লিপন, নারী কাউন্সিলর রেবেকা বেগম, সাবেক কমিশনার জগদীশ দাশ ও রায়হানের চাচা হাবিবুল্লাহসহ এলাকার মুরব্বিয়ানরা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া এ সময় নিহত রায়হানের পুরো বাড়িতে লোকজন ভিড় ছিল।