রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন চায় বাংলাদেশ

20

কাজিরবাজার ডেস্ক :
আগামী ২২ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও’র আয়োজনে আন্তর্জাতিকভাবে রোহিঙ্গা বিষয়ক একটি ভার্চুয়াল সম্মেলন হতে যাচ্ছে। পশ্চিমা বিশ্বগুলোর উপস্থিতিতে অনুষ্ঠানে বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তবে আয়োজকদের পক্ষ থেকে আলোচনার বিষয়বস্তু নিয়ে কোনো তথ্য না জানালেও বিভিন্ন সূত্রে বাংলাদেশ জানতে পেরেছে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য একসঙ্গে ১০ বছরের মানবিক সাহায্য দেয়ার প্রস্তাব করা হবে।
কিন্তু ঢাকা এই প্রস্তাবে রাজি হবে না বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের মূল লক্ষ্য রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন। আমরা যত দ্রুতসম্ভব রোহিঙ্গাদের বিদায় করতে চাই।’
সোমবার মন্ত্রী সভার বৈঠক শেষে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এসব তথ্য জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবমূল মোমেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা শুনতে পেলাম, তারা ১০ বছরের মানবিক সাহায্য নিয়ে আলাপ করবে। কিন্তু আমরা এখন এক বছরের জন্য সাহায্য নিচ্ছি। দীর্ঘমেয়াদী বিষয়ে আমাদের কোনো আগ্রহ নেই। আমরা যত দ্রুতসম্ভব রোহিঙ্গাদের বিদায় করতে চাই।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তারা মাল্টি-ইয়ার প্ল্যানিং’এর কথা বলছেন। কিন্তু আমরা মাল্টি-ইয়ার প্ল্যানিংয়ে যেতে রাজি নই। মাল্টি ইয়ার পরিকল্পনা রোহিঙ্গা পুনর্বাসনের জন্য। কিন্তু আমরা এ বিষয়ে আগ্রহী নই।’
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও’র আয়োজনে আন্তর্জাতিকভাবে অনুষ্ঠেয় রোহিঙ্গা বিষয়ক ভার্চুয়াল সম্মেলনে সহযোগী দেশ হিসেবে থাকছে যুক্তরাজ্য, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ও জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থা।
রোহিঙ্গাদের অবশ্যই ফিরে যেতে হবে উল্লেখ করে মোমেন বলেন, ‘আমাদের মূল লক্ষ্য রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন। এটা বিশ্বের দায়িত্ব। রোহিঙ্গাদের অবশ্যই ফিরে যেতে হবে। রোহিঙ্গা চলে গেলে বাংলাদেশ খুশি।’
এদিকে আগামী ১৪ অক্টোবর দুই দিনের সফরে ঢাকায় আসছেন মার্কিন উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্টিফেন ই বিগুন। মার্কিন উপপররাষ্ট্রমন্ত্রীর ঢাকা সফরে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনা হবে বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
মার্কিন উপ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ঢাকা সফরে ইন্দো প্যাসিফিকের সামরিক অধ্যায়ে বাংলাদেশ যুক্ত হবে কি না- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মোমেন জানান, বাংলাদেশ ইন্দো প্যাসিফিকের সামরিক অধ্যায়ে যুক্ত হতে আগ্রহী নয়।
মন্ত্রী বলেন, ‘তারা আমাদের কাছে অস্ত্র বিক্রি করতে চায়, আমরা চাই শান্তি।’
রবিবার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং এর বৈঠকের বিষয়ে মোমেন জানান, চীন রোহিঙ্গা ইস্যুতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের প্রস্তাব দিয়েছে।
মোমেন বলেন, ‘চীনের রাষ্ট্রদূত আমার কাছে জানতে চাইলেন আমরা রাজি কি না। আমি বললাম অবশ্যই, আপনারা মিয়ানমারকে রাজি করান।’
মিয়ানমারের ডি ফ্যাক্টো নেত্রী অং সান সুচি ছাড়া ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে বাংলাদেশ বসবে বলে চীনা রাষ্ট্রদূতকে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
মোমেন বলেন, ‘সেটির তারিখ তারা ঠিক করবে এবং আমরা এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছি।’