যুব সমাজের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ ॥ চাকরির পেছনে না ছুটে উদ্যোক্তা হতে হবে

12
গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধমে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় বাংলাদেশ সচিবালয় প্রান্তের সঙ্গে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল বেজা গভর্ণিং বডির ৭তম সভা ও “বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগর” গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

কাজিরবাজার ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুবকদের চাকরির পেছনে না ছুটে উদ্যোক্তা হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। একইসঙ্গে উদ্যোক্তা হতে যুবকদের সহযোগিতা ও উৎসাহিত করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দিয়ে বলেছেন, আমাদের যুব সমাজকে যেন আকৃষ্ট করতে পারি, তাদের যেন উৎসাহিত করতে পারি। সেদিকে আমাদের দৃষ্টি দিয়ে কাজ করতে হবে। বৃহস্পতিবার বেজার গবর্নিং বডির ৭ম ভার্চুয়াল বৈঠকে এই আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা দেশের সামাজিক অর্থনৈতিক অগ্রগতির ধারা আরও গতিশীল করতে চাকরির পেছনে ছোটার পরিবর্তে বিনিয়োগ করতে (একশ’টি বিশেষ অর্থনৈতিক জোন) ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের বিশেষ করে যুবসমাজকে উৎসাহিত করতে কাজ করছি।
সরকারপ্রধান দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ধারা আরও গতিশীল করতে বিদেশী বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার পাশাপাশি বিশেষ অর্থনৈতিক জোনে বিনিয়োগে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের বিশেষ করে যুবসমাজকে উদ্বুদ্ধ করতে আরও পদক্ষেপ নেয়ার জন্য বাংলাদেশ অর্থনৈতিক জোন কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান।
দেশের অর্থনীতি শক্তিশালী করতে ও কর্মসংস্থান বাড়াতে দেশী-বিদেশী বিনিয়োগ বাড়ানোর তাগিদ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের লক্ষ্য বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা। এখন অনেক বিনিয়োগ- এটা সব সময় এদেশ থেকে ওদেশে ঘুরতে থাকে। আমরা যত বেশি আনতে পারি আমাদের জন্য ভালো। কাজেই বিদেশী বিনিয়োগ যেমন আসবে, দেশেও আমাদের যাদের বিনিয়োগ করার সক্ষমতা আছে তারাও যেন বিনিয়োগ করতে পারে। যারা ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী তাদেরও আমরা যেন উৎসাহিত করতে পারি।
প্রধানমন্ত্রী আবাদি জমি এবং পরিবেশ রক্ষা করে চাকরির সুযোগ সৃষ্টিতে স্থানীয় বিনিয়োগ ও বিদেশী বিনিয়োগ বৃদ্ধির মাধ্যমে শিল্পায়নের পাশাপাশি কৃষি উন্নয়নের জন্যও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতিও অনুরূপ আহ্বান জানান। শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভার্চুয়াল বৈঠকে যোগ দেন। গবর্নিং বডির অন্যান্য সদস্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এবং সচিবালয় থেকে সংযুক্ত হন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোন সন্দেহ নেই, আমাদের অর্থনীতি কৃষির ওপর নিভর্রশীল। তবে আমাদের আরো শিল্পায়নের প্রয়োজন। শিল্পায়ন ছাড়া কোন দেশের অগ্রগতি হতে পারে না। শিল্পায়ন করতে হলে জায়গা সুনির্দিষ্ট করে দিতে হবে। কারণ একটা কাজ করতে গেলে আমাদের সমস্যা হয়ে যায় ভূমি নিয়ে। এই সমস্যাটা যাতে না থাকে সেটা মাথায় রেখে আবার পাশাপাশি ফসলি জমি, কৃষি জমি সেটাও রক্ষা করতে হবে। বনভূমি রক্ষা করতে হবে। এসব কিছু চিন্তা-ভাবনা করে আমরা বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার পদক্ষেপ নেই। তিনি বিপুল জনগোষ্ঠীর খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আবাদি জমি রক্ষায় প্রয়োজনীয়তার ওপরও গুরুত্বারোপ করেন।
বেজার সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী গবর্নিং বডির চেয়ারম্যান শেখ হাসিনা শিল্পায়নের ক্ষেত্রে পরিবেশগত ভারসাম্য বজায় রাখতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়ে বলেন, তাঁর সরকার ইতোমধ্যে ডেল্টা প্লানও গ্রহণ করেছে। আমরা আবাদি জমি এবং পরিবেশ রক্ষায় একশ’টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার জন্য বিশেষ এলাকা নির্বাচিত করেছি।
তিনি বলেন, সরকার দেশে কর্মসংস্থান এবং দেশবাসীর ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে বিশেষ করে রফতানি বৃদ্ধি করতে সারাদেশে পরিকল্পিত শিল্পায়ন করতে চায়। এ লক্ষ্যে দেশের বিভিন্ন এলাকায় (কেবলমাত্র রাজধানী ও বন্দর এলাকা বাদে) বিশেষ অর্থনৈতিক জোন স্থাপন করা হচ্ছে। এছাড়া আমরা কৃষি পণ্য কাঁচামাল হিসাবে ব্যবহার করতে একটি বিশেষ এলাকায় খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প স্থাপন করছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের সরকারে প্রধান লক্ষ্যই হচ্ছে দেশের সার্বিক উন্নয়ন করা। এজন্য শিল্পোন্নয়ন এবং নতুন নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। শেখ হাসিনা বাংলাদেশসহ বৈশ্বিক অর্থনীতিতে কোভিড-১৯ এর বিরূপ প্রভাব সত্ত্বেও দেশের আর্থ-সামাজিক অগ্রগতি আরও জোরদার হবে বলে আশা প্রকাশ করেন।