টিউশন ফি’র যৌক্তিক সমাধান জরুরী

14

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে টিউশন ফি নিয়ে জটিলতা দেখা দিয়েছে। করোনা দুর্যোগের এই সময়ে অনেক অভিভাবক কর্মহীন, অনেকের আয় কমে গেছে। আর্থিক সংকটে পড়েছেন তাঁরা। অনেকেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের টিউশন ফি পরিশোধ করতে পারছেন না। অন্তত তিন মাস স্কুলগুলোতে ক্লাস হয়নি। কিছু প্রতিষ্ঠানে ধারাবাহিকতা রক্ষার্থে অনলাইনে কিছু ক্লাস হয়েছে, হোমওয়ার্ক দেওয়া হয়েছে মাঝে মাঝে। এখনো স্কুল খোলেনি সেই অর্থে। তবে অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার আয়োজন বাড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে টিউশন ফি বিষয়ক পর্যালোচনা জরুরি ছিল। কিন্তু সেটা হয়নি, হচ্ছে না। অভিভাবকরা বলছেন, টিউশন ফি ৫০ শতাংশ কমানো হোক। স্কুল কর্তৃপক্ষ বলছে, সব শিক্ষার্থীর অভিভাবক বেতন দিচ্ছেন না। তাই টিউশন ফি কমানো যাচ্ছে না। এ নিয়ে আন্দোলন-কর্মসূচির কথা ভাবছেন অভিভাবকরা।
সমস্যাটি বেশ প্রকট ধারণ করেছে। বাস্তবেই বেশির ভাগ অভিভাবক আর্থিক সমস্যায় রয়েছেন, অনেকে বেকারত্বের সমস্যায় আছেন। শিক্ষকরাও যে সমস্যায় নেই তাও কিন্তু নয়। তাঁরাও আর্থিক সমস্যায় রয়েছেন। অনেক স্কুল বন্ধ হয়ে গেছে। এ ক্ষেত্রে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়ার কথা ছিল সরকারের। কিন্তু টিউশন ফি সংক্রান্ত জটিলতা নিরসনে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ‘নিরপেক্ষ অবস্থান’ নিয়ে আছে। শিক্ষামন্ত্রী সাম্প্রতিক একাধিক অনুষ্ঠানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ ও অভিভাবকদের মানবিক হতে বলেছেন। তাঁর বক্তব্য, যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আগামী কয়েক মাস চলার সামর্থ্য আছে তাদের উচিত সর্বোচ্চ ছাড় দেওয়া। আর সামর্থ্যবান অভিভাবকদের উচিত টিউশন ফি পরিশোধ করা। অভিভাবকদের মতে করোনা মহামারির কারণে আয় কমেছে সবার। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় এবং অনলাইন ক্লাস চলায় প্রতিষ্ঠানের খরচও অনেক কমেছে। এ অবস্থায় শতভাগ বেতন আদায় করা যুক্তিসংগত নয়। অভিভাবকরা মনে করেন, ৫০ শতাংশের বেশি বেতন নেওয়া উচিত নয়। আর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের মতে টিউশন ফি থেকেই শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন দিতে হয়। টিউশন ফি পাওয়া যাচ্ছে না বলে শিক্ষকদের বেতন দিতে সমস্যা হচ্ছে তাদের।
সমস্যাটি বেশ কঠিন, শিক্ষকদের জীবনযাত্রা নিয়ে ভাবতে হবে; ভাবতে হবে অভিভাবকদের কথাও। ক্লাস না নিয়ে পুরো বেতন দাবি করা যৌক্তিক নয়, তেমনি বেতন একেবারে না দিতে চাওয়াও ঠিক নয়। আবার কোথাও আগাম বেতন দাবি করা হচ্ছে। একটা যৌক্তিক সমাধান দরকার। তাতে সরকারকে অবশ্যই নিশ্চায়কের ভূমিকা পালন করতে হবে।