জঙ্গি নির্মূলে বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা কাজে লাগাচ্ছেন বিদেশীরা

10

কাজিরবাজার ডেস্ক :
জঙ্গি নির্মূলে বাংলাদেশ এখন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কাছে রোল মডেল। বিশ্বের বহু দেশ বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে জঙ্গিবাদ নির্মূলের অভিজ্ঞতা ও কলাকৌশল সম্পর্কে আলোচনা করে। ওইসব দেশ বাংলাদেশের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাচ্ছে। অনেক দেশ তাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পদস্থ কর্মকর্তাদের বাংলাদেশে পাঠিয়ে সরেজমিনেও বিভিন্ন কর্মকৌশল দেখিয়ে বাস্তবজ্ঞান অর্জন করিয়ে নেয়। বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে উচ্চতর প্রযুক্তিগত জ্ঞানঅর্জন করছেন। হলি আর্টিজানের পর বাংলাদেশে আইএসের তৎপরতা থাকার ভয়ে বহু বিদেশী চলে যান। হলি আর্টিজানে হামলার কিছুদিনের মধ্যেই দেশে জঙ্গিবাদের অস্তিত্ব প্রায় নিঃশেষ করে দেয়ার বিষয়টি বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দেয়। বর্তমানে বিদেশীরা আবার বাংলাদেশে কাজ করছেন এবং বেড়াচ্ছেন আস্থার সঙ্গে।
শুধু জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ নিয়ে কাজ করার জন্য সরকার পুলিশের এন্টি টেররিজম ইউনিট গঠন করে। ইউনিটটির অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বলেন, ২০১৬ সালের ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারীতে জঙ্গিরা হামলা করে ১৭ জন বিদেশী ও তিনজন বাংলাদেশীকে জবাই করে ও গুলি চালিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে। এর আগে পুলিশ অভিযান চালাতে গেলে গ্রেনেড হামলা করে দুইজন পুলিশ কর্মকর্তাকে হলি আর্টিজানের গেটের সামনেই হত্যা করে। ২২ জনকে হত্যার পর এ নিয়ে সারা পৃথিবীতে তোলপাড় শুরু হয়।
ঘটনার পরপরই আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট বা আইএসের নামে হামলার দায় স্বীকার করে বিবৃতি প্রকাশিত হয়। এর আগে রংপুরে এক জাপানী নাগরিক ও ঢাকার গুলশানে ইটালির এক নাগরিককে গুলশানে গুলি করে হত্যার ঘটনা ঘটে। একের পর এক জঙ্গি হামলার পর বাংলাদেশে আইএসের তৎপরতা আছে বলে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় মনে করতে থাকে। তারা তাদের নাগরিকদের নিরাপদে নিজ দেশে ফিরে যেতে উৎসাহিত করেন। অনেক বিদেশী নাগরিক ওই সময় চলেও যান। এরপর সারাদেশে শুরু হয় জঙ্গিবাদ বিরোধী সাঁড়াশি অভিযান। কমপক্ষে ৫০টি জঙ্গি আস্তানায় অভিযান চালানো হয়। শতাধিক জঙ্গি নিহত হয়।
পুলিশের এন্টি টেররিজম ইউনিটের প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক কামরুল আহসান বলেন, আমরা সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদ নিয়ে গভীরভাবে কাজ করছি। ভবিষ্যতে দেশে যাতে আর কোনদিন সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে এ জন্য সবধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও তারা অভিযান অব্যাহত রেখেছেন। এটি তাদের কন্টিনিউয়াস প্রসেস।
ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম এ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের প্রধান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেন, আমরা জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদের মূল উৎপাটন করতে চাই। সে লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছি। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই আবারও জঙ্গিদের বিষয়ে কৌশলী অভিযান শুরু হবে। যারা জামিন নিয়ে বেরিয়ে গেছে এবং জেলে আছে তাদের বিষয়ে নজরদারি অব্যাহত আছে।