গ্রামোন্নয়ন পরিকল্পনা

3

‘মুজিব শতবর্ষে বাংলাদেশে একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না’- এটি বর্তমান সরকারপ্রধান বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার অন্যতম একটি লালিত স্বপ্ন, যেটি তিনি শতবর্ষ আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করে চলেছেন গত বছরের ২৬ নভেম্বর থেকে। এর এক দৃষ্টিনন্দন শৈল্পিক পরিণতি চলতি জুন মাসেই শেষ হতে চলেছে যশোর সদর উপজেলার চাঁচরা মৌজায়। সেখানে ৯০ শতক জমির ওপর হান্ড্রেড প্যাটার্নে নির্মিত হয়েছে ১০০টি ঘর। যেখানে কিছু দিন আগেও ছিল ঘনবসতিপূর্ণ ঘিঞ্জি বস্তি, নোংরা পুঁতিগন্ধময় আবর্জনা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে আবাসস্থল অসহায় ছিন্নমূলদের। বর্তমানে সেখানে বাস্তবায়ন হয়েছে শতবর্ষ আশ্রয়ণ প্রকল্প। পাখির চোখে দেখলে ইংরেজী হরফের শতক সদৃশ এই শত ঘরে থাকছে ২ শতক জমির ওপর পরিকল্পিতভাবে নির্মিত দুটি ঘর, রান্নাঘর, টয়লেট ইত্যাদি। এর পাশাপাশি রয়েছে বিনোদন কেন্দ্র, পুকুর, বৃক্ষরাজি শোভিত বনায়ন, বিদ্যুত, পাকা সড়ক, মসজিদ ইত্যাদি। ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ বর্তমান সরকারের অন্যতম একটি অঙ্গীকার। সেটি যথাযথভাবে বাস্তবায়নে সরকার বিভিন্নমুখী শিল্প ও কৃষিভিত্তিক উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। এর ফলে গত কয়েক বছরে দেশে দারিদ্র্যের হার কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে ২০ শতাংশের নিচে। অবশ্য করোনা মহামারীর ধাক্কায় কর্মহীন থাকায় দরিদ্র মানুষের সংখ্যা কিছু বেড়েছে। এর পাশাপাশি নগর উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে সরকার বিশেষ জোর দিয়েছে গ্রামের আধুনিকায়নে। শহরের সব সুযোগ-সুবিধা যেমন বিদ্যুত, পানি, গ্যাস, জ্বালানি-শিক্ষা-স্বাস্থ্য-খাদ্য নিরাপত্তা ইত্যাদি গ্রামে পৌঁছে দেয়া গেলে শহরমুখী বিশেষ করে রাজধানীমুখী মানুষের ঢল কমে যাবে নিশ্চিতভাবে। সরকারের একটি বাড়ি একটি খামার সার্থক ও স্বনির্ভর একটি প্রকল্প।
সে অবস্থায় যত্রতত্র আবাসন, যততত্র স্থাপনা ও কল-কারখানা না করে স্থানীয় জনসংখ্যা ও চাহিদার প্রেক্ষাপটে নিতে হবে সুদূরপ্রসারী ও পরিকল্পিত উন্নয়ন প্রকল্প। আর তাহলেই কেবল সম্ভব একটি আধুনিক ও ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণ। আবহমান গ্রাম-বাংলার চিরায়ত সৌন্দর্য ও প্রাকৃতিক আবেদনকে যথাসম্ভব অক্ষুণœ রেখেই গ্রহণ করতে হবে গ্রামোন্নয়ন পরিকল্পনা।