সম্মিলিত নাট্য পরিষদের আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তারা ॥ কামরানের মৃত্যুতে সিলেটের সংস্কৃতিকর্মীরা একজন অভিভাবকে হারিয়েছেন

15

বদর উদ্দিন আহমদ কামরান ছিলেন সিলেটের সংস্কৃতিকর্মীদের কাছে অভিভাবকতুল্য। যে কোনো সংগ্রামে-উৎসবে তাকে পাশে পাশে পেয়েছেন সংস্কৃতিকর্মী। সংস্কৃতির প্রতি এমন নিখাদ প্রেম আজকালকার রাজনীতিকদের মধ্যে বিরল। কামরানের অকাল মৃত্যুতে সত্যিকারের একজন সজ্জন অভিভাবককে হারিয়েছেন সিলেটের নাট্য ও সংস্কৃতিকর্মীরা।
সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র বদরউদ্দিন আহমদ কামরানের মৃত্যুতে সম্মিলিত নাট্য পরিষদ, সিলেট আয়োজিত শোকসভায় বক্তারা এমন কথা বলেন।
শুক্রবার রাত ৮ টায় ভার্চুয়াল নেটওয়ার্ক ‘জুম’ এর মাধ্যমে এই স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়। নিজেদের বাসা থেকে সংস্কৃতি অঙ্গনের বিশিষ্টজনেরা এতে যুক্ত হন।
শুক্রবার নাট্যপরিষদ আয়োজিত স্মরণ সভায় বক্তারা বলেন, কামরানের উদ্যোগেই সুরমা নদীর পাড়ে শারদা হলে সংস্কৃতিকর্মীদের জন্য সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়। সিলেটের নাট্যাঙ্গনের জন্য তিনি সবসময়ই ছিলেন আন্তরিক ও উদার। কামরান তাঁর কর্মের মধ্য দিয়ে নাট্য ও সংস্কৃতিকর্মী দের অন্তরে স্থান করে নিয়েছেন। নাট্য পরিষদ আয়োজিত একুশের চেতনায় নাট্য প্রদর্শনীর শুরু থেকে বদর উদ্দিন আহমদ কামরান এগিয়ে এসেছিলেন একজন অভিভাবক হয়ে।
বক্তারা বলেন, একটা মানুষের সঙ্গে চলে যায় গোটা একটি পৃথিবী। বদর উদ্দিন কামরান এমনই এক ব্যক্তিত্ব। যিনি কর্মে কীর্তিতে, মেধায়, মননে, স্নেহ, ভালবাসায় ও সখ্যতায় অনন্য স্বাক্ষর রেখে দিয়ে গেছেন এই সিলেটের মাটি আর মানুষের সংগে। যিনি বঙ্গবন্ধুর অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণের এক বিমূর্ত কারিগর।
জনমানসের সংবেদী, ন্যায়িক ও মানবিক সত্ত্বা প্রজ্বলনকারী এ জনপদের অন্তর্গত সৌন্দর্য ও সামর্থ্যরে এক অগ্নিপুরুষের নাম বদর উদ্দিন আহমদ কামরান এমনটি উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, তাঁর এ হঠাৎ চলে যাওয়া মানে সম্ভাবনার একটি অপরিপক্ব যবনিকা, যুগসন্ধিক্ষণে আরও গভীরতর কোনো বিপন্নতার প্রতীক- আমরা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি এমন ক্ষণজন্মা বীর সামর্থ্যবানকে।
ভার্চুয়াল নেটওয়ার্ক মাধ্যমে আয়োজিত এ স্মরণসভায় সম্মিলিত নাট্য পরিষদের সভাপতি মিশফাক আহমদ মিশু এর সভাপতিত্ব ও সাধারণ সম্পাদক রজত কান্তি গুপ্তের সঞ্চালনায় স্মৃতিচারণে অংশ নেন সম্মিলিত নাট্য পরিষদের সাবেক প্রধান পরিচালক নাট্যজন নিজাম উদ্দিন লস্কর ময়না, বিশিষ্ট নজরুল সংগীত শিল্পী হিমাংশু বিশ্বাস, সম্মিলিত নাট্য পরিষদের প্রধান পরিচালক অরিন্দম দত্ত চন্দন, আনন্দলোকের পরিচালক বিশিষ্ট রবীন্দ্রসংগীত শিল্লী রানা কুমার সিনহা, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট সিলেটের সভাপতি আমিনুল ইসলাম চৌধুরী লিটন, সম্মিলিত নাট্য পরিষদের সাবেক সভাপতি এড. সৈয়দ মনির হেলাল, নাট্য ও সংস্কৃতি সংগঠক বিভাষ শ্যাম যাদন, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের কেন্দ্রীয় সদস্য শামসুল আলম সেলিম, নাট্য সংগঠক নিলাঞ্জন দাশ টুকু, ম. আনোয়ার হোসেন রনি, সম্মিলিত নাট্য পরিষদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুকুল আব্দুল কাইয়ুম, সম্মিলিত নাট্য পরিষদের সাবেক সহ-সভাপতি খোয়াজ রহিম সবুজ, বাংলাদেশ নৃত্য শিল্পী সংস্থার সাধারণ সম্পাদক নিলাঞ্জনা দাশ জুই, নাট্য ও সংস্কৃতি সংগঠক ফয়সল মহসিন, পরিষদের সহসভাপতি উজ্জ্বল দাস, যুগ্ম সম্পাদক সুপ্রিয় দেব শান্ত, প্রচার সম্পাদক অচিন্ত অমিত, দেশের বাইরে থেকে অংশ নেন নাট্য সংগঠক মুরাদ খান ও শক্তিব্রত হাওলাদার মানু। বিজ্ঞপ্তি