জনকল্যাণের পথে এগুতে হবে

4

কল্যাণমুখী সরকারের একটি ব্রত থাকে। জনকল্যাণের সেই ব্রত পালনে যে সরকার যত বেশি কাজ করতে পারবে, সেই সরকারই জনগণের কাছে নিজেদের গ্রহণযোগ্যতা তুলে ধরতে পারবে। ৭ মার্চের আলোচনাসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে উদ্যোগের কথা তুলে ধরেছেন, তাতে তাঁর কর্তব্যনিষ্ঠার বিষয়টি নতুন করে আমাদের কাছে স্পষ্ট হয়েছে। তিনি বলেছেন, ‘মুজিববর্ষে একটি মানুষও গৃহহীন থাকবে না।’ আমরা মনে করি, এটি শুধু তাঁর সরকারের উদ্যোগ নয়, দৃঢ়প্রত্যয়ই ব্যক্ত করেছেন তিনি। অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা, শিক্ষা এসব তো মানুষের মৌলিক অধিকার। এই অধিকার নিশ্চিত করতে চেয়েছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আমাদের সংবিধানেও মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করার কথা বলা আছে। চলতি বছরটি পালিত হচ্ছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ হিসেবে। এই বছরে দেশের মানুষের বাসস্থান নিশ্চিত করা গেলে তা হবে বঙ্গবন্ধুর প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন। ৭ মার্চের আলোচনাসভার বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর সরকারের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, শিক্ষার সম্প্রসারণ এবং স্বাস্থ্যসেবাকে জনগণের দোরগোড়ায় নিয়ে আসার উদ্যোগগুলো তুলে ধরেন। একই সঙ্গে তিনি আওয়ামী লীগের কর্মীদের দায়িত্বশীলতার বিষয়টিও তুলে ধরে বলেন, ‘জাতির পিতার আদর্শের সৈনিক হিসেবে আওয়ামী লীগের প্রত্যেক নেতাকর্মীরও দেশের ও জাতির জন্য একটা দায়িত্ব আছে।’ তিনি দলের প্রধান হিসেবে কর্মীদের কাছে এই দায়িত্বশীলতা দাবি করেছেন। দলের প্রধান হিসেবে তিনি দলকে নিয়ে যেতে চান সাধারণ মানুষের কাছে। কল্যাণমুখী রাজনীতির আদর্শ যে তিনি গড়তে চান, তা তাঁর বক্তব্যে স্পষ্ট হয়েছে।
আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকার গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে ক্ষমতায়। একটি রাজনৈতিক দল যত বেশি জনমুখী হবে ততই দেশের মঙ্গল। জনবিচ্ছিন্ন রাজনৈতিক দল কখনো কোনো কল্যাণ বয়ে আনতে পারে না। আবার দলকে জনমুখী করতে হলে দলের নেতাকর্মীদের মানুষের কাছে যেতে হবে। মানুষের প্রয়োজন বুঝে রাজনৈতিকভাবে সমাধানের চেষ্টা করতে হবে। বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে দারিদ্র্য। এ দেশের অনেক মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করে। অনেক মানুষের বাসস্থান নেই। সবার জন্য শিক্ষা নিশ্চিত করা যায়নি। চিকিৎসাসেবা শতভাগ সবার জন্য নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। এখন সরকার তথা রাজনৈতিক দলগুলো যদি নিজেদের রাজনৈতিক অঙ্গীকার হিসেবে এই মৌলিক চাহিদা পূরণে মানুষের পাশে দাঁড়ায়, দেশের রাজনীতিতে নতুন অধ্যায়ের সূচনা হবে। মুজিব শতবর্ষে নতুন উদাহরণ সৃষ্টি হবে। ‘এখনো আমাদের দেশে নদীভাঙনে মানুষ গৃহহীন হয়ে যায়। এখনো কিছু মানুষ খুঁজে পাওয়া যায়, যারা ভূমিহীন ও গৃহহীন’ প্রধানমন্ত্রীর এই উপলব্ধি যথার্থ। গৃহহীন মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর মধ্য দিয়ে রাষ্ট্র তথা সরকার কল্যাণের পথে এগিয়ে যাবে এটাই আমাদের প্রত্যাশা।