মাদক নিয়ন্ত্রণে কঠোর আইন চাই

10

সরকার ঘোষিত জিরো টলারেন্স, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযান কোনো কিছুই যেন মাদকের বিস্তার ঠেকাতে পারছে না। গণমাধ্যমে এক পরিসংখ্যানের তথ্য বলছে, দেশে মাদকসেবীর সংখ্যা বাড়ছে। শুধু তরুণ-যুবকরাই নয়, কিশোররাও ঝুঁকছে মাদকের দিকে। সহজলভ্য হওয়ায় অনেকেই নতুন করে মাদকে আসক্ত হচ্ছে। একবার মাদকে আসক্ত হয়ে পড়লে সহজে তা থেকে মুক্ত হওয়া যায় না। মিরপুরের শাহ আলী মাজারকে কেন্দ্র করে মাদক কারবার করছে একটি চক্র। প্রতি রাতে সেখানে ভাসমান মাদক বিক্রেতারা জড়ো হয়। পুরো মোহাম্মদপুর এলাকায় ছড়িয়ে গেছে মাদক। শুধু রাজধানী নয়, প্রত্যন্ত অঞ্চলেও মাদকের বাজার নতুন করে বিস্তৃত হয়েছে। গ্রামেও হাত বাড়ালেই মাদক পাওয়া যায়। বরিশালে মাদক বিস্তারের ট্রানজিট পয়েন্ট হিসেবে স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে পরিচিত গৌরনদী। গত এক বছরে গৌরনদী ও আগৈলঝাড়া উপজেলা থেকে বিপুল পরিমাণ ইয়াবা বড়ি, ফেনসিডিলসহ বিভিন্ন ধরনের মাদকদ্রব্য উদ্ধার করা হয়। সীমান্ত জেলা জয়পুরহাটে মাদকের ভয়াবহ বিস্তার উদ্বেগের বড় কারণ হয়ে আছে। মাদকসেবী ও কারবারিদের ধরতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও তৎপর। গ্রেপ্তার হচ্ছে অনেকে। কিন্তু মামলা ও গ্রেপ্তারের সংখ্যাই শুধু বাড়ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলা ইয়াবা পাচারের নতুন রুট হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। অনেক খুনের ঘটনার নেপথ্যে রয়েছে মাদকের কারবার। জেলা জুড়ে রয়েছে মাদকের বিস্তার। জেলার ২৭৮ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে ভারতের তিনটি প্রদেশের সঙ্গে। সদর, ফুলবাড়ী, রাজারহাট, নাগেশ্বরী, ভূরুঙ্গামারী, উলিপুর, রৌমারী ও রাজীবপুরের ৬০টি পয়েন্ট দিয়ে প্রতিদিন পাচার হয়ে আসছে ইয়াবা, মদ, গাঁজা ও ফেনসিডিল। এসব নিয়ে উদ্বেগ-উত্কণ্ঠায় সাধারণ মানুষ।
মাদকের অপব্যবহার শুধু মাদকেই সীমিত থাকে না, আরো বহু অপরাধের কারণ হয়। অন্যদিকে মাদকসেবীরা যেমন পরিবারের জন্য, তেমনি সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়ায়। এভাবে চলতে থাকলে সমাজ ক্রমেই পঙ্গু হয়ে যাবে। সব উন্নয়ন প্রচেষ্টা মুখথুবড়ে পড়বে। মাদকের প্রায় সবটাই আসে বাইরে থেকে অবৈধ পথে। তাই মাদক নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রথমেই কঠোরভাবে মাদক চোরাচালান বন্ধ করতে হবে। মাদকসংক্রান্ত মামলাগুলো ঝুলে থাকে, অপরাধীরা পার পেয়ে যায়। তাদের জন্য দ্রুত ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। প্রয়োজনে নতুন আইন করতে হবে।