রেমিট্যান্স বাড়ানোর পদক্ষেপ নিন

18

দেশের অর্থনীতিতে ভালো কোনো খবর নেই। সব সূচকই নিম্নমুখী। রপ্তানি আয়েও লক্ষ করা যাচ্ছে ভাটার টান। কমতে শুরু করেছে দেশের অর্থনীতির অন্যতম প্রধান এই সূচক। গত নভেম্বর মাসে রপ্তানি আয় কমেছে ১০ শতাংশের বেশি। শুধু এক মাসেই রপ্তানি আয়ে এমন ধস নামেনি। রপ্তানি আয় কমছে গত চার মাস ধরেই। অর্থাৎ গত অর্থবছরের শুরু থেকে যে নিম্নগামিতা শুরু, তা আর ঊর্ধ্বমুখী হতে পারেনি। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর মাসিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী গত বছরের অক্টোবর মাসের তুলনায় চলতি বছর একই মাসে রপ্তানি আয় কমেছিল ৬.৮২ শতাংশ। নভেম্বরে আয় কমেছে ১০.৭০ শতাংশ। আশঙ্কার কথা হচ্ছে, রপ্তানি আয়ের প্রধান খাতগুলোর প্রায় প্রতিটিরই আয় কমেছে। অথচ সুখবর নিয়েই শুরু হয়েছিল নতুন অর্থবছর। প্রথম মাস জুলাইয়ে গত বছরের জুলাইয়ের চেয়ে সাড়ে ৮ শতাংশ বেশি রপ্তানি আয় দেশে এসেছিল।
বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতায় যে বাংলাদেশ পিছিয়ে পড়ছে তার বড় প্রমাণ দেশের সবচেয়ে বড় রপ্তানি খাত তৈরি পোশাকশিল্প। বিজিএমইএ সভাপতি স্বীকার করে নিয়েছেন, এই খাতে রপ্তানির অবস্থা খুবই খারাপ। সব অর্ডার ভিয়েতনাম-ভারতে চলে যাচ্ছে। জুলাই-নভেম্বর সময়ে পাট ও পাটজাত পণ্য, শাকসবজি, হ্যান্ডিক্র্যাফট, তামাক রপ্তানি বাড়লেও চামড়া এবং চামড়াজাত পণ্য, হিমায়িত মাছ, ওষুধ, স্পেশালাইজড টেক্সটাইল রপ্তানি কমেছে। পণ্য রপ্তানির মতো সেবা রপ্তানিও কমছে। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার আওতায় সেবা খাতে স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে অগ্রাধিকারমূলক বাজার সুবিধা প্রদানের ক্ষেত্রে প্রদত্ত শুল্কমুক্ত সুবিধার মেয়াদ ২০৩০ সাল পর্যন্ত বর্ধিত করা হলেও সেবা খাতের রপ্তানিতে কোনো ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে না। বর্তমান বিশ্ববাজার প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ যে তার প্রতিযোগিতা সক্ষমতা হারিয়েছে—এর বাস্তব চিত্র রপ্তানি আয়ের এই নিম্নমুখিতা।
রপ্তানি আয় বাড়াতে ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমানো ছাড়া এই মুহূর্তে বাংলাদেশের সামনে আর কোনো বিকল্প পথ নেই বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদদের অনেকে। তাঁদের মতে, ডলারের দাম বাড়ালে রপ্তানি আয়ে বিপর্যয় যেমন কেটে যাবে, তেমনি প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সও বাড়বে। রপ্তানি আয়ের এই নিম্নমুখী প্রবণতা দূর করতে সঠিক সিদ্ধান্তই প্রত্যাশিত।