কৌশলী পথ খুঁজছে বিএনপি

13

কাজিরবাজার ডেস্ক :
জাতীয় নির্বাচন পরবর্তী অন্যসব নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করলেও ঢাকার দুই সিটির আসন্ন নির্বাচনে অংশ নেয়ার চূড়ান্ত পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে বিএনপি। এজন্য কারচুপি ঠেকানোর কৌশলী পথ খুঁজে বের করে এখন থেকেই নির্বাচনী প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে সংশ্লিষ্টদের। দুই সিটির মেয়র পদে উত্তর সিটিতে আগের প্রার্থী তাবিথ আউয়াল ও দক্ষিণ সিটিতে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকার ছেলে প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন খোকা হাইকমান্ডের কাছ থেকে সবুজ সংকেত পেয়েছেন এমন আলোচনা এরই মধ্যে শুরু হয়েছে। এর বাইরে দলের সমর্থন নিয়ে ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করতে আগ্রহীরাও কাজ শুরু করছেন। বিএনপির সিনিয়র এক নেতা জানান, আগামী ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ বা আগামী বছরের মার্চ-এপ্রিলে তিন সিটিতে ভোট করার বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের আভাসের পর থেকেই কাজ শুরু করেছে বিএনপি। জাতীয় নির্বাচনের মতো সিটি নির্বাচনে যাতে কারচুপি না করতে পারে সে ব্যাপারে এখন থেকেই শক্ত প্রস্তুতি নিতে চায় বিএনপি। সঙ্গত কারণে আগে থেকেই সম্ভাব্য প্রার্থীদের কাজ করতে বলা হয়েছে। দলের জন্য মাঠের আন্দোলনে গিয়ে মামলা মোকাদ্দমা না জড়িয়ে সিটি নির্বাচনের আগে সামাজিক কর্মকান্ডের মাধ্যমে এলাকায় পরিচিতি বাড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়ে বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব অনেক আগে থেকেই ইতিবাচক। এজন্য দুই সিটির সম্ভাব্য প্রার্থীদের কাজে মনোযোগ দেয়ার নির্দেশও দিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সিটি নির্বাচনে কারা প্রার্থী হতে পারেন এর একটি তালিকাও ঠিক করেছেন দলের হাইকমান্ড। এরই মধ্যে উত্তরে তাবিথ আউয়াল ও দক্ষিণে সাদেক হোসেন খোকার ছেলে ইশরাক হোসেন খোকা হাইকমান্ডের ইতিবাচক ইঙ্গিত পেয়েছেন বলে দলের বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনা আছে। জানা যায়, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডন থেকে টেলিফোনে দুই সিটিতে তাদের প্রার্থী করার ইঙ্গিত দিয়েছেন। এখন থেকেই দুই সিটির সমস্যাগুলো নিয়ে নিজেদের সাধ্যমতো কাজ করার দিকনির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তরুণ দুই নেতা নির্দেশিত হয়ে ডেঙ্গুসহ রাজধানীর চলমান সমস্যা নিয়ে কাজ শুরু করেছেন। তারা নেতাকর্মীদের নিয়ে জনগণের পাশে থাকার চেষ্টা করছেন। দলের ভেতরেও তারা কাজ করে যাচ্ছেন। মেয়র পদে সবুজ সংকেতের বিষয়ে তাবিথ আউয়াল বলেন, বিগত সময়ে নির্বাচনে অংশ নেয়ার কারণেই হয়তো গণমাধ্যমে সবুজ সংকেতের বিষয়টি আসছে। মূল বিষয় হচ্ছে, দল নির্বাচনে অংশ নিলে এবং মনোনয়ন দিলে প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছা রয়েছে। অতীতের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে নির্বাচনে ভালো ফল করার ব্যাপারেও আশাবাদী তাবিথ। একই বিষয়ে প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন খোকা বলেন, মাঠের আন্দোলনের সিংহ পুরুষ এবং ঢাকার নির্বাচনী রাজনীতিতে সবচেয়ে জনপ্রিয় হিসেবে পরিচিত সাদেক হোসেন খোকা। প্রথমে তার ছেলে হিসেবে এবং পরে ইতিবাচক রাজনীতিতে নিজেকে কিছুটা যোগ্য করার প্রাথমিক কাজ দলের নেতাকর্মীদের হয়তো পছন্দ হয়েছে এজন্য মেয়র পদে নির্বাচনের আলোচনায় নাম এসেছে। দল যদি নির্বাচনে অংশ নেয় এবং এই পদের জন্য যোগ্য মনে করে তাহলে দলের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য প্রস্তুতি রয়েছে। সেভাবেই কাজ চলছে। সূত্রমতে, এরই মধ্যে কাউন্সিল পদে আগ্রহীরাও মেয়র পদে আলোচনায় থাকা দুই নেতার সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। মেয়র পদের এই দুই নেতার পাশাপাশি আগ্রহী কাউন্সিলর প্রার্থীরা নির্বাচনের প্রস্তুতি এবং পরবর্তী কার্যক্রমের বিষয়েও হোমওয়ার্ক শুরু করেছেন। জানা গেছে, স্থানীয় সরকারসহ সব নির্বাচনেই অংশ নেয়ার নীতিনির্ধারকদের ঘোষণার পরপরই সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে লড়তে আগ্রহীরা নড়েচড়ে বসে। সিটি নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিচ্ছে এমনটা ধরে নিয়ে তারা প্রস্তুতি শুরু করেছেন।