ময়লা-আবর্জনা ও চামড়ার দুর্গন্ধে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে দক্ষিণ সুরমাবাসী

100
ডাম্পিং স্টেশনের পাশে সড়ক ঘেঁষে ফেলে রাখা হয়েছে আবর্জনার স্তুপ।

সিসিকের ময়লা-আবর্জনা, চামড়া ও পশুর হাড্ডির পচা দুর্গন্ধের কারণে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছেন দক্ষিণ সুরমাবাসী। ময়লার দুর্গন্ধে পরিবেশ দূষিত হওয়ার পাশাপাশি সিলেট-ফেঞ্চুগঞ্জ সড়ক দিয়ে যাতায়াতকারীরা জনসাধারণ নাক চেপে ধরে যানবাহনে চলাচল করতে হচ্ছে। লালমাটিয়া নামক স্থান থেকে শুরু করে পীর হবিবুর রহমান চত্বর পর্যন্ত ঐ এলাকায় বিকট দুর্গন্ধের কারণে মোটর সাইকেল আরোহীরাও গন্ধ থেকে রক্ষা পেতে নাক চেপে ধরে প্রতিনিয়ত যাতায়াত করতে হয়।
দক্ষিণ সুরমার লালমাটিয়ায় সিটি কর্পোরেশনের বর্জ্যরে দুর্গন্ধে জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারণা করেছে। বিশেষ করে ডাম্পিং ষ্টেশনে পচা চামড়া আর পশুর হাড্ডির দুর্গন্ধে এ এলাকা দুর্গন্ধময় হয়ে উঠেছে। পঁচা চামড়ার দুর্গন্ধে লালমাটিয়া এলাকার এক কিলোমিটার জুড়ে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে। গত কয়েকদিন যাবৎ এখানের দুর্গন্ধ চরম আকারে পৌঁছেছে। এ এলাকা দিয়ে যাতায়াতকারী লোকজন দুর্গন্ধের কারণে চলাফেরা করতে পারছেন না।
গত ১৭ আগষ্ট শনিবার দক্ষিণ সুরমায় সিটি কর্পোরেশনে ডাম্পিং ষ্টেশন পরিদর্শন করতে যান সিলেট সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। মেয়রের আসার খবর পেয়ে নড়েচড়ে উঠে ডাম্পিং ষ্টেশনের কর্মরত পরিচ্ছন্ন কর্মীরা। তারা মেয়র আসার আগেই ডাম্পিং ষ্টেশনের কাছে রাস্তার পাশে পড়ে থাকা পশুর বর্জ্য ও চামড়া পরিষ্কার করে সরিয়ে নেয়। এছাড়া রাস্তায় পড়ে থাকা আবর্জনাও সরিয়ে ফেলে পরিচ্ছন্ন কর্মীরা।
এ বছর চামড়ার ন্যায্য মূল্য না পেয়ে চামড়া সংগ্রহকারীরা চরম অসহায় অবস্থায় পড়েন। রাতভর অপেক্ষা করেও চামড়া বিক্রি করতে না পেরে অনেকেই সেই চামড়া সড়কে ফেলে যান। রাস্তায় ফেলে রাখা এসব চামড়া পচে দুর্গন্ধ সৃষ্টি হওয়ায় সেগুলো ঈদের রাতেই অপসারণ করে সিটি কর্পোরেশন। সিলেট নগরীর বিভিন্ন স্থানে ফেলে রাখা এসব চামড়া অপসারণ করে নিয়ে ফেলা হয় দক্ষিণ সুরমার লালমাটিয়ার ডাম্পিং ষ্টেশনে।
জানা গেছে, ডাম্পিং ষ্টেশনে গর্ত করে চামড়াগুলো পুতে রাখা হয়। কিন্তু গর্তের উপরে মাটি ভরাট না দিয়ে দেয়া হয় ময়লা-আবর্জনা। এতে করে চামড়ার পচা দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে চতুরদিকে। প্রকট দুর্গন্ধে এ এলাকা দিয়ে চলাচল করতে কষ্টকর হয়ে পড়ে।
সিলেট-ফেঞ্চুগঞ্জ সড়ক দিয়ে যাতায়াতকালে লালমাটিয়া এলাকায় নাক চেপে ধরতে হয় যাত্রীদের। সিলেট সিটি কর্পোরেশনের আবর্জনার বাগাড়ের দুর্গন্ধ থেকে বাঁচতে যাত্রীদের এই নাক চেপে ধরা। আবর্জনার বাগাড়ের কারণে পরিবেশ হচ্ছে বিপন্ন। বায়ু দুষণের ফলে হচ্ছে বিভিন্ন রোগবালাই। আবর্জনার ভাগাড়ের কারণে লালমাটি এলাকায় আবাসন প্রকল্প থাকলেও তা সফলতার মুখ দেখছে না।
এলাকাবাসী অবিলম্বে পরিবেশ দূষণ বন্ধ সহ বর্জ্য যাতে কোন অবস্থাতে বিলে, রাস্তায় এবং কৃষি জমিতে না যায় এবং দুর্গন্ধ না ছড়ায় সে ব্যাপারে সিটি কর্পোরেশনের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবী জানান। অন্যথায় দক্ষিণ সুরমার সচেতন মহল সিসিকের ময়লাবাহী গাড়ী আটক, সড়ক অবরোধসহ কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করেন। এছাড়াও সচেতন মহলের অভিযোগ সিসিকের ময়লা নির্ধারিত স্থানে না ফেলে ময়লাবাহী ট্রাক সিলেট-ফেঞ্চুগঞ্জ সড়কের উপর ময়লা ফেলে রাখে। এখান থেকে পরিচ্ছন্ন কর্মীরা ময়লা টেনে ছেছড়ে গন্তব্য স্থানে নেয় এতে দুর্গন্ধ আরো বেশী ছড়িয়ে পড়ে। ময়লা বুঝাই ট্রাকগুলো ময়লা নিয়ে যাতায়াতের সময় কাপড় দিয়ে ঢেকে নিয়ে যাওয়ার কথা থাকলেও প্রায়ই খোলামেলা অবস্থায় ময়লা নিয়ে যাতায়াত করতে দেখা যায়। এতে গাড়ী চলাচলের সময় বাতাসে ময়লা আবর্জনা ও প্লাষ্টিকের বোতলসহ সামগ্রী যাতায়াতকারী মানুষের উপর পড়ে। (খবর সংবাদদাতার)