কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে উদ্যোগ

16

প্রতিবছর দেশে কর্মক্ষম তরুণ-যুবকের সংখ্যা যে হারে বাড়ছে, সে হারে বাড়ছে না কর্মসংস্থানের সুযোগ। দুর্ভাগ্যজনকভাবে বিদেশে বাংলাদেশিদের কর্মসংস্থানের সুযোগও ক্রমেই কমছে। ফলে বেকারের সংখ্যা বাড়ছে দ্রুতগতিতে। বাংলাদেশ থেকে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক শ্রমিক যেত মালয়েশিয়ায়। বর্তমানে মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানো বন্ধ রয়েছে। সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েত, ইরাক, লিবিয়া ও লেবাননের মতো বড় শ্রমবাজারগুলোও বাংলাদেশি কর্মী নেওয়া বন্ধ রেখেছে। সৌদি আরব, ওমান ও কাতারে বাংলাদেশি কর্মী নেওয়া হলেও আগের তুলনায় সেই সংখ্যা অনেক কমে গেছে। মধ্যপ্রাচ্যে অর্থনৈতিক সংকটসহ নানা কারণে কর্মীদের বেতন-ভাতা ও সুযোগ-সুবিধাও অনেক কমেছে। আবার আকামা না পাওয়া বা ছাঁটাই হওয়ার কারণে অনেকে ফিরেও আসছে। নারী কর্মীদের অনেকেই ফিরে আসছে নির্যাতনের শিকার হয়ে। দীর্ঘদিন ধরে নতুন বাজার অনুসন্ধানের কথা বলা হলেও বাস্তবে তার কোনো সুফল চোখে পড়ছে না। এ অবস্থায় বেকারত্বের জ্বালা থেকে মুক্তি পেতে অনেকে অবৈধ পথে বিদেশে পাড়ি জমাতে গিয়ে নানাভাবে বিপদগ্রস্ত হচ্ছে। গত সপ্তাহে ইউরোপে পাড়ি জমাতে গিয়ে ভূমধ্যসাগরে ডুবে মৃত্যু হয়েছে ৪০ বাংলাদেশির। এর আগেও অবৈধভাবে মালয়েশিয়ায় সমুদ্রপথে পাড়ি জমাতে গিয়ে অনেকের সলিলসমাধি হয়েছে। থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ার জঙ্গলে বাংলাদেশিদের গণকবরেরও সন্ধান পাওয়া গেছে। তার ওপর আছে নানা ধরনের প্রতারণার শিকার হওয়া।
বিশেষজ্ঞদের মতে, কায়িক শ্রমের দিন শেষ হয়ে গেছে। বাংলাদেশে দক্ষ কর্মীর অভাব থাকায় বিদেশে বাংলাদেশের শ্রমবাজার এভাবে কমে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে জনশক্তি মন্ত্রণালয়ের অদক্ষতাকেও দায়ী করছেন অনেকে। তাঁদের মতে, নতুন বাজার খোঁজার নামে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা প্রতিবছর কোটি কোটি টাকা খরচ করে বিদেশ ভ্রমণ করছেন; ফল কিছুই হচ্ছে না।
বিপুল বেকারত্ব ঘোচানোর লক্ষ্যে দেশে কর্মসংস্থান যেমন বাড়াতে হবে, একইভাবে বিদেশে বাংলাদেশের শ্রমবাজার শক্তিশালী করার ওপরও গুরুত্ব আরোপ করতে হবে। এ জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে আরো তৎপর হতে হবে। কূটনৈতিক উদ্যোগের পাশাপাশি রাজনৈতিক দূতিয়ালিকেও কাজে লাগাতে হবে। সর্বোপরি দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলার ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে।