এফআর টাওয়ারে অগ্নিকান্ডে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৫, ২৪ লাশ হস্তান্তর

42

কাজিরবাজার ডেস্ক :
রাজধানীর বনানীর এফআর টাওয়ারে অগ্নিকান্ডে ২৫ জনের মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। তাদের নামের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। শুক্রবার দুপুরে দুর্ঘটনাস্থলের কাছে স্থাপন করা পুলিশের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে এই তালিকা দেয়া হয়। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেছেন, এটাই চূড়ান্ত তালিকা। এর বাইরে আর কেউ নিখোঁজ নেই। পুলিশের গুলশান বিভাগের উপকমিশনার মুশতাক হোসেন জানান, শুক্রবার সকাল পর্যন্ত বনানী এফআর টাওয়ারে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় নিহত ব্যক্তির সংখ্যা ২৫ জনে পৌঁছেছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছে ৭৩ জন। একজনের লাশ ছাড়া বাকি সবার লাশ স্বজন বা পরিচিতদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
নিহতদের নাম-পরিচয় হচ্ছে, সৈয়দা আমিনা ইয়াসমিন (৪৮), বাবা সৈয়দ মহিউদ্দিন আহমেদ, গ্রাম-রামপাশা, পোঃ কেরামতনগর, থানা-কোমলগঞ্জ, জেলা- মৌলভীবাজার। বর্তমান ঠিকানা- ২০৬/ কাফরুল, ঢাকা। তার লাশ রাখা ছিল এ্যাপোলো হাসপাতালে। মোঃ মনির হোসেন সর্দার (৫২), বাবা-মৃত মোতাহার হোসেন সর্দার, গ্রাম-উত্তর কড়াপুর (সর্দারবাড়ি), থানা-বিমানবন্দর, জেলা-বরিশাল। বর্তমান ঠিকানা-৬৮৫/২ মোল্লার রোড, পূর্ব মনিপুর, মিরপুর, ঢাকা। তার লাশ রাখা ছিল ইউনাইটেড হাসপাতালে। মোঃ মাকসুদুর রহমান (৩২), বাবা-মৃত মিজানুর রহমান। বর্তমান ঠিকানা-১১ নং আলমগঞ্জ, থানা-গেন্ডারিয়া, জেলা-ঢাকা। তার লাশ রাখা ছিল ইউনাইটেড হাসপাতালে। মোঃ আবদুল্লাহ আল মামুন (৪০), বাবা-মৃত আলহাজ আবুল কাশেম, গ্রাম-বালুয়াডাঙ্গা, কোতোয়ালি, দিনাজপুর। বর্তমান ঠিকানা- বাসা-১৫/৬/২, রোড-১, কল্যাণপুর, মিরপুর, ঢাকা। তার লাশ রাখা ছিল ইউনাইটেড হাসপাতালে। মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান (৩৬), বাবা-মৃত আব্দুর রশিদ মুন্সি, গ্রাম-চতরা, থানা-পীরগঞ্জ, জেলা- রংপুর। বর্তমান ঠিকানা-বাসা-২/এ/২/১৬, মিরপুর-২, থানা মিরপুর, ঢাকা। তার লাশ সিএমএইচে রাখা ছিল। মোঃ মিজানুর রহমান, গ্রাম-কোদলা, থানা- তেরখাদা, জেলা-খুলনা। বর্তমান ঠিকানা-হেরিটেজ এয়ার এক্সপ্রেস, এফআর টাওয়ার (১০ তলা), রোড-১৭, বনানী, ঢাকা। তার লাশ রাখা ছিল সিএমএইচে। ফ্লোরিডা খানম পলি (৪৫), স্বামী-ইউসুফ ওসমান, বাবা- আফজাল হোসেন, বাসা নং-২, রোড নং-৪, রূপনগর হাউজিং, থানা-রূপনগর, ঢাকা। তার লাশ সিএমএইচে রাখা ছিল। আতাউর রহমান (৬২), বাবা- মৃত হাবিবুর রহমান, বাসা-১৭/২, তাজমহল রোড, ব্লক-সি, মোহাম্মদপুর, ঢাকা। তার লাশ রাখা ছিল সিএমএইচে। মোঃ রেজাউল করিম (৪০), পিতা-নাজমুল হাসান, মাতা-তহুরা বেগম, গ্রাম-দক্ষিণ নাগদা, থানা-তমলব (দক্ষিণ), জেলা-চাঁদপুর। বর্তমান ঠিকানা- বাড়ি নং-১৬, রোড-২৩, ফ্ল্যাট বি/টু, বনানী। তার লাশ কুর্মিটোলা হাসপাতালে ছিল। জেবুন্নেছা (৩০)। বাবা- আবদুল ওয়াহাব, মা-কামরুন্নাহার, লক্ষ্মীনারায়ণপুর, বেগমগঞ্জ, নোয়াখালী। বর্তবান ঠিকানা-৬৬/৩, পশ্চিম রাজাবাজার, শেরেবাংলা নগর, ঢাকা। তার লাশ রাখা ছিল কুর্মিটোলা হাসপাতালে। মোঃ সালাউদ্দিন মিঠু (২৫), পিতা- মোঃ সামসুদ্দিন, মাতা- মাকছুদা বেগম, বাসা নং- ৩৪৯, মধুবাগ মগবাজার, রমনা, ঢাকা। বিনা ময়নাতদন্তে কুর্মিটোলা থেকে সালাউদ্দিনের লাশ হস্তান্তর করা হয় তার বাবার কাছে। নাহিদুল ইসলাম তুষার (৩৫), পিতা-মোঃ ইছাহাক আলী, মাতা-নুরুন্নাহার, সাং- ভানুয়াবহ, মির্জাপুর, টাঙ্গাইল। মোঃ আবুল হোসেন নিহতের চাচা। তার কাছে বিনা ময়নাতদন্তে কুর্মিটোলা থেকে লাশ হস্তান্তর করা হয়। তানজিলা মৌলি (২৫), স্বামী- রায়হানুল ইসলাম, পিতা- মোঃ মাসুদার রহমান। সাং- সান্তাহার বলিপুর, আদমদিঘী, বগুড়া। বর্তমান ঠিকানা- মিতালী হাউজিং, দক্ষিণ কাফরুল, বাড়ি-ই/৩, কাফরুল, ঢাকা। কুর্মিটোলা থেকে লাশ হস্তান্তর। মোঃ পারভেজ সাজ্জাদ (৪৬), পিতা-মৃত নজরুল ইসলাম মৃধা, মাতা- নাছিমা বেগম, সাং-বালুগ্রাম, কাশিয়ানী, গোপালগঞ্জ। কুর্মিটোলা থেকে লাশ হস্তান্তর। আহাম্মেদ জাফর (৫৯)। বাবা-হাজি হেলাল উদ্দিন (মৃত), মা-আলভি বেগম। নবীনগর, সোনারগাঁ, নারায়ণগঞ্জ। তার লাশ রাখা ছিল ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ মর্গে। হীরস (৩৫), বিগনাবাজার, শ্রীলঙ্কা। বর্তমান ঠিকানা-বাসা নং-৭৬, রোড- ১৮, ব্লক-এ, বনানী, ঢাকা। ঢাকা মেডিক্যাল থেকে লাশ হস্তান্তর। মোঃ ইফতিয়ার হোসেন মিঠু (৩৭), বাবা-ইসহাক আলী, বানিয়াপাড়া, কুমারখালী, কুষ্টিয়া। বর্তমান ঠিকানা- সিনিয়র হিসাবরক্ষক ফ্লোগাল, এফআর টাওয়ার, বনানী, ঢাকা। লাশ রাখা ছিল ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ মর্গে। শেখ জারিন তাসনিম বৃষ্টি (২৫), বাবা-শেখ মোজাহিদুল ইসলাম, মা-নীনা ইসলাম, ৭৪, বেজপাড়া, মেইন রোড, যশোর। বর্তমান ঠিকানা-খিলক্ষেত বটতলা, খিলক্ষেত, ঢাকা। লাশ রাখা ছিল ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ মর্গে। মোঃ ফজলে রাব্বি (৩০), বাবা- মোঃ জহিরুল হক, মা-শাহানাজ বেগম, উত্তর ভূঁইগড়, ফতুল্লা, নারায়ণগঞ্জ। লাশ রাখা ছিল ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ মর্গে। আতিকুর রহমান (৪২), বাবা-আবদুল কাদির মির্জা (মৃত), মা-হাজেরা বেগম, পূর্ব সারেন গাঁ, শৈলপাড়া, পালং, শরীয়তপুর। বর্তমান ঠিকানা- আমতলী, মানিকদী ক্যান্টনমেন্ট, ঢাকা। লাশ রাখা ছিল ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ মর্গে। আনজির সিদ্দিক আবির (২৭), বাবা- আবু বক্কর সিদ্দিক, কলেজ রোড, পাটগ্রাম, লালমনিরহাট। বর্তমান ঠিকানা- পাইকপাড়া, মিরপুর, ঢাকা। লাশ রাখা ছিল ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। আব্দুল্লাহ আল ফারুক (৬২), বাবা-মকবুল আহমেদ, পূর্ব বগাইব, ডেমরা, ঢাকা। লাশ রাখা ছিল ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ মর্গে। রুমকি আক্তার (৩০), স্বামী-মাকসুদুর রহমান, বিল্লালাড়, জলঢাকা, নীলফামারী। লাশ রাখা ছিল ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ মর্গে। মোঃ মঞ্জুর হাসান (৪৯), বাবা-মনসুর রহমান (মৃত), মা-মিসেস রোকেয়া বেগম, বোয়ালিয়া, নওগাঁ। বর্তমান ঠিকানা- ২৬২/২, ছাপড়া মসজিদ, ইব্রাহিমপুর, কাফরুল, ঢাকা। লাশ রাখা ছিল ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ মর্গে। মোঃ আমির হোসেন রাব্বি (২৯), পিতা-আউয়ুব আলী, মাতা-রতœা খাতুন, সাং- গাঙ্গাহাটি (চরপাড়া), আতাইকুলা, পাবনা। বর্তমান ঠিকানা- বাসা নং- ২৩, রোড-৯, ব্লক-এ, নিকুঞ্জ-২, খিলক্ষেত, ঢাকা। লাশ রাখা ছিল ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ মর্গে।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা ৫৫ মিনিটে ২১ তলা বনানীর এফআর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ফায়ার সার্ভিসের ২৫টি ইউনিট আগুন নেভানো ও হতাহতদের উদ্ধারে কাজ করে। পাশাপাশি সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী, নৌবাহিনী, পুলিশ, র‌্যাব, রেড ক্রিসেন্টসহ ফায়ার সার্ভিসের প্রশিক্ষিত অনেক স্বেচ্ছাসেবী কাজ করে। প্রায় সাড়ে ছয় ঘণ্টা চেষ্টার পর রাত ৭টায় আগুন নেভানো সম্ভব হয়। এই ঘটনায় ২৫টি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।