সুলতান মনসুরের শপথ, বহিষ্কার করল গণফোরাম

72
স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী সুলতান মনসুরকে শপথ বাক্য পাঠ করাচ্ছেন।

কাজিরবাজার ডেস্ক :
অবশেষে শপথ নিলেন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সুনামগঞ্জ-২ আসন থেকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মনোনয়ন ও ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচিত সুলতান মোহাম্মদ মনসুর। তবে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে জাতীয় সংসদের সদস্য হিসেবে স্পীকারের কাছে শপথ নেয়ায় তাকে গণফোরাম থেকে বহিষ্কার করা হয়। বেলা ১১টায় জাতীয় সংসদ ভবনে স্পীকার শিরিন শারমীন চৌধুরীর কাছে শপথ নেন সুলতান মোহাম্মদ মনসুর। আর বিকেলে গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মোহসীন মন্টু সংবাদ সম্মেলন করে তাকে দল থেকে বহিষ্কারের ঘোষণা দেন।
উল্লেখ্য, গণফোরাম নেতা ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য সুলতান মোহাম্মদ মনসুর জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের হয়ে বিএনপির ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে একাদশ সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হন। তিনি ডাকসু ভিপি ছাড়াও এক সময়ের আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। তবে ওয়ান-ইলেভেনের সময় সংস্কারপন্থী হিসেবে দলে অপাক্তেয় হয়ে পড়েন। এরপর আওয়ামী লীগে ফিরতে না পেরে গণফেরামে যোগ দেন। তবে সুলতান মনসুর ভোটে জেতার পর দাবি করেন, তিনি বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগের আদর্শেই আছেন।
গণফোরামের আরেক কেন্দ্রীয় নেতা ও সিলেট-২ আসন থেকে নির্বাচিত মোকাব্বির খান বৃহস্পতিবার শপথ নেননি। তিনি এ দিন শপথ নেয়ার জন্য স্পীকারের কাছে আগে আবেদন করলেও বুধবার গণফোরাম নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাত করতে গেলে তাকে শপথ নিতে বারণ করা হয়। তাই দলের সিদ্ধান্ত মেনে তিনি শপথ নেননি।
আগের দিনই ড. কামাল হোসেনের সভাপতিত্বে গণফোরামের এক বৈঠকে শপথ নিলে সুলতান মোহাম্মদ মনসুরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়ে রাখা হয়। তাই বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় শপথ নেয়ার পর থেকেই সুলতান মোহাম্মদ মনসুরকে বহিষ্কারের বিষয়টি আলোচনায় আসে।
গণফোরাম বহিষ্কার করলে সংসদ সদস্য পদ থাকবে কি না এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি এর আগেও সংসদ সদস্য ছিলাম। সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ জেনে-বুঝেই এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সুলতান মনসুর বলেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট থেকে আমরা ৮ জন জয়ী হয়েছি। বাকি ২৯২ আসনে তারা একটি মিছিলও বের করতে পারেনি। তারা জনগণকে সম্পৃক্ত করতে পারলে হয়ত আরও অনেকেই জয়ী হতে পারত।
নিজেকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের অনুসারী দাবি করে সুলতান মোহাম্মদ মনসুর বলেন, জাতীয় ঐক্যপ্রক্রিয়ার প্রতিনিধি হিসেবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে ছিলাম। ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য ছিলাম। সেই সদস্য হিসেবে স্পীকারের কাছে চিঠি দিয়েছি। নির্বাচনের পর থেকে আমি আমাদের ফোরাম এবং গণমাধ্যমে বলেছি- আমি অসুস্থ ছিলাম। আমি সংসদে যাব। সেই ধারাবাহিকতায় যা বলেছিলাম তা করেছি। আমরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের অনুসারী, ৩০ ডিসেম্বর পর যা বলেছি তাই করেছি।
যোগ দিলেন সংসদে ॥ সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নিলেন ধানের শীষ মার্কা নিয়ে বিজয়ী জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ও সাবেক ডাকসু ভিপি সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ। সকাল শপথ গ্রহণ শেষে বিকেলে একাদশ জাতীয় সংসদ অধিবেশনে যোগ দেন তিনি। অধিবেশনে বিরোধী দলের আসনের দ্বিতীয় সারিতে নির্ধারিত আসনে বসেন।