কানাইঘাট চাতল হাওরে ৪টি স্লুইচ গেইট নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ

339
কানাইঘাট চাতল হাওরে স্লুইচ গেইটের কাজ মাটি সিঙ্গেল ও ভাঙ্গা লোভার পাথর দিয়ে চলছে।

কানাইঘাট থেকে সংবাদদাতা :
কানাইঘাট উপজেলার সাতবাঁক ইউপির চাতল হাওরের উন্নয়নে চলতি অর্থবছরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের অর্থায়নে প্রায় ২ কোটি ৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে পানি সেচের সুবিধার্র্থে ৯টি ছোট-বড় স্লুইচ গেইট নির্মাণ কাজ করা হবে। ইতি মধ্যে কাজের শুরুতে ছোট ৩টি ও ১টি বড় স্লুইচ গেইট নির্মাণ কাজে ব্যাপক অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় জনসাধারণকে অন্ধকারে রেখে স্লুইচ গেইট কাজের নির্মাণস্থলে কোন ধরনের কাজের ব্যয়ের কার্যাদেশের সাইনবোর্ড ছাড়াই চিন্ময় বাবু নামে একজন ঠিকাদার ১ কোটি ১৩ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ৮টি স্লুইচ গেইট অপর দিকে নাছির নামে একজন ঠিকাদার ৯০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ১টি বড় স্লুইচ গেইটের নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। স্লুইচ গেইটের নির্মাণ কাজে সিডিউল বহির্ভূত স্থানীয় লোভাছড়া কোয়ারির নি¤œ মানের ভাঙ্গা পাথর, মাটিযুক্ত বালু ব্যবহার করা হচ্ছে। অপর দিকে সঠিক মতো রড ও সিমেন্ট ব্যবহার না করে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে স্লুইচ গেইটের কাজ করা হজ্বে বলে স্থানীয় সচেতন মহল জানিয়েছেন। সরেজমিনে গতকাল শনিবার দুপুরে চাতল হাওর পরিদর্শন করে ৪টি চলমান স্লুইচ গেইটের কাজের স্থলে গিয়ে অনিয়মের বিষয়টি ধরা পড়ে। সেখানে গিয়ে দেখা যায় কাজের দেখা শুনার দায়িত্বে থাকা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোন কর্মকর্তা ও কাজের ঠিকাদার কে খোঁজে পাওয়া যায়নি। লোভাছড়ার নি¤œ মানের পাথর ব্যবহার করে স্লুইচ গেইটের গার্ড ওয়াল ঢালাই, রিং পাইপ, ব্লকের অধিকাংশ কাজ ইতিমধ্যে শেষ হয়ে গেছে। নির্মাণ শ্রমিকরা তাদের ইচ্ছা মতো নি¤œমানের ভাঙ্গা পাথর, মাটিযুক্ত বালু দিয়ে সিমেন্ট মিশ্রিত করে সুইচ গেইটের কাজ করছেন। সিডিউল মতো সেখানে রড ও ব্যবহার করা হচ্ছে না। নির্মাণ শ্রমিক সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলায় বাড়ী দেবস দাস, দেবল দাস, ইসাক আলী, বিকাশ দাস, রিপেন্ত্র ও রাজু দাস জানান তারা কাজের ঠিকাদার চিন্ময় বাবুর ৩টি সুইচ গেইটের কাজ করছেন। ২টি ছোট স্লুইচ গেইটের কাজ ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। চিন্ময় বাবু এই হাওরে আরো ৫টি স্লুইচ গেইটের কাজ করবেন। কাজের সাইডে সরকারী কোন কর্মকর্তা অথবা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোন কর্মকর্তাকে দেখা শুনার কাজ তদারকী করেন কি না ও ঠিকাদার চিন্ময় বাবু আসেন কি না জানতে চাইলে তারা বলেন আমরা নির্মাণ শ্রমিক কাজ করে মাইনা পাই। এখানে কে আসল কে গেল তা আমাদের জানা নেই। তবে ঠিকাদারে পক্ষে স্থানীয় খুলুরমাটি গ্রামের ইসলাম উদ্দিন যাবতীয় কাজের দেখা শুনা করে থাকেন। পরিদর্শন কালে হঠাৎ করে সেখানে ইসলাম উদ্দিন উপস্থিত হয়ে বলেন, আমি স্লুইচ গেইটের কাজের ঠিকাদার সিলেটের চিন্ময় বাবুর অধীনে কাজের সাইড দেখাশুনা করি। জাফলং, ভোলাগঞ্জের পাথর না, লোভার পাথর দিয়ে কাজ হবে তা আমার জানা নেই। জানা গেছে স্লুইচ গেইটের নির্মাণ কাজে সরকারী বিধি অনুযায়ী জাফলং ও ভোলাগঞ্জের ভাঙ্গা পাথর ও সারি নদীর বালু ব্যবহারের কথা থাকলেও কাজের ঠিকাদার অনিয়ম ও দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে স্থানীয় সচেতন মহলের বাধা নিষেধ উপেক্ষা করে নি¤œ মানের সামগ্রী দিয়ে স্লুইস গেইটের কাজ করে যাচ্ছেন। স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কে মৌখিক ভাবে স্লুইস গেইটের কাজের অনিয়মের বিষয়টি তুলে ধরার পরও স্থানীয়রা কোন প্রতিকার পাচেছন না। এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের এসডিএফ আব্দুল লতিফের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন চাতল হাওরে স্লুইচ গেইট নির্মাণ কাজে কোন ধরনের অনিয়ম দুর্নীতি বরদাশত করা হবে না। নি¤œমানের কাজ করা হলে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে তদন্ত পূর্বক শীঘ্রই সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ৩টি স্লুইচ গেইটের বর্তমান কাজের ঠিকাদার চিন্ময় বাবুর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বিধি মোতাবেক পানি সেচের স্লুইচ গেটের কাজ করা হচ্ছে। কাজের কোন ধরনের নি¤œ মানের মালামাল ব্যবহার করা হচ্ছে না বলে তিনি পরবর্তীতে কথা বলবেন বলে ফোন কেটে দেন।