এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বৈশাখী ভাতা

75

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের ৫ শতাংশ ইনক্রিমেন্ট ও ২০ শতাংশ বৈশাখী ভাতা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের জন্য এটি অবশ্যই বড় সুখবর। এখন অর্থ মন্ত্রণালয় প্রধানমন্ত্রীর এ ঘোষণা কার্যকর করবে। নিজেদের বেতন-ভাতা নিয়ে দেশের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিক্ষকদের দাবি পুরনো। বেসরকারি শিক্ষকদের বেতন-ভাতা অনেক কম। অথচ তাঁরাই দেশের ভবিষ্যৎ নাগরিক তৈরি করে দেন। সবচেয়ে কঠিন কাজটি তাঁদেরই করতে হয়। এ অবস্থায় বেসরকারি শিক্ষকদের বেতন-ভাতাদি নিয়ে যে অসন্তোষ ছিল, তা অনেকাংশেই কেটে যাবে। সরকার যে সত্যিকার অর্থেই জনবান্ধব এবং শিক্ষা ও শিক্ষকবান্ধব, প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে তা আবার প্রমাণিত হলো। এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা অষ্টম বেতন কাঠামো অনুযায়ী মূল বেতন পেলেও ইনক্রিমেন্ট ও বৈশাখী ভাতা থেকে এত দিন বঞ্চিত ছিলেন। এ জন্য তাঁরা দীর্ঘদিন আন্দোলন-সংগ্রামও করেছেন। এত দিনে তাঁদের বহু কাঙ্ক্ষিত একটি দাবি পূরণ হলো।
বর্তমান সরকারের আমলে অনেক বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ হয়েছে। এটি মানতে হবে, সর্বসাধারণের মধ্যে শিক্ষা ছড়িয়ে দিতে হলে এ খাতকে সর্বাধিক গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা প্রয়োজন। রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়া শিক্ষার প্রসার কখনো সম্ভব নয়। শিক্ষার মান বৃদ্ধির বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করতে হবে। পাসের হার কিংবা জিপিএ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি দিয়ে মান নির্ধারণ করা যাবে না। মানসম্পন্ন শিক্ষক তৈরি করতে হবে। মেধাবীদের এই পেশায় আগ্রহী করতে না পারলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যে মেধাশূন্য হয়ে গড়ে উঠবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এখন থেকে শিক্ষকদের বার্ষিক ৫ শতাংশ ইনক্রিমেন্ট ও সরকারি চাকরিজীবীদের মতো ২০ শতাংশ বৈশাখী ভাতা দেওয়ার যে নির্দেশনা প্রধানমন্ত্রী দিয়েছেন, তা বেসরকারি শিক্ষকদের জন্য বিশেষ প্রণোদনা হিসেবে কাজ করবে। মেধাবীরা শিক্ষকতা পেশায় আসতে উৎসাহিত হবে। প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষণা শিক্ষকদের দায়িত্ব আরো বাড়িয়ে দিল। দেশের প্রায় ২৮ হাজার এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রায় পাঁচ লাখ শিক্ষক-কর্মচারীকে এখন থেকে আরো দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে। শ্রেণিকক্ষে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। ইনক্রিমেন্ট ও বৈশাখী ভাতার জন্য বাজেটে নতুন করে বড় অঙ্কের অর্থ বরাদ্দ করতে হবে। মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করার দায়িত্ব শিক্ষকদের। দক্ষ ও যোগ্য শিক্ষকরা মেধাবী প্রজন্ম গড়ে তুলতে মূল ভূমিকা পালন করবেন, এটিই আমাদের প্রত্যাশা।