সড়ক ও মহাসড়ক সংস্কার হোক

28

সামনে ঈদুল আজহা। কয়েক দিন পরই শুরু হতে যাচ্ছে ঈদ যাত্রা। সড়কপথে চলাচলকারী বাসের টিকিট বিক্রি শেষ। প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে ঘরে ঘরে প্রস্তুতিও শুরু হয়েছে। কিন্তু এবারও দেশের কয়েকটি মহাসড়ক ঈদ যাত্রায় আনন্দের অন্তরায় হতে পারে—এমন আশঙ্কা করা হচ্ছে। যদিও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছে, ঈদের আগেই সব মহাসড়ক চলাচলের উপযোগী হবে। সড়ক, মহাসড়ক বরাবরই মৃত্যুফাঁদ হিসেবে পরিচিত। বর্ষার সামান্য বৃষ্টিতেই অনেক সড়ক চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। কোথাও কোথাও জমে থাকে পানি। সংস্কারকাজ চলতে থাকায় কোথাও কোথাও সড়ক সংকুচিত হয়ে যানজটের সৃষ্টি হয়। কয়েক বছর ধরেই দেখা যাচ্ছে, বর্ষা মৌসুমে দেশের সড়ক, মহাসড়কগুলো গর্ত আর খানাখন্দে ভরে যায়। এ নিয়ে পত্রপত্রিকায় বিস্তর লেখালেখিও হয়। গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচারের পর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের টনক নড়ে। তার আগে সেই সড়কে দুর্ঘটনায় হয়তো প্রাণহানির ঘটনাও ঘটে।
এমন কিছু সড়ক, মহাসড়কের সাম্প্রতিক অবস্থার যে চিত্র পাওয়া গেছে, তাতে ঘরমুখো মানুষের মনে আশঙ্কা দেখা দেওয়া অমূলক নয়। ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক দিয়ে রাজধানী থেকে উত্তরবঙ্গে ১৬টি জেলার যানবাহন চলাচল করে। এই মহাসড়কে এখনো চলছে চার লেনের কাজ। চন্দ্রা থেকে এলেঙ্গা পর্যন্ত ফোর লেনে গাড়ি চলাচল করলেও সড়কের ওই অংশের দুই পাশে এখনো পিচ ঢালাই হয়নি। ফলে আসন্ন ঈদ যাত্রা নিয়ে চরম ভোগান্তির কারণ হতে পারে এই অংশ। ওদিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম ও সিলেট মহাসড়কে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার মেঘনা সেতু টোল প্লাজার পশ্চিম পাশের অংশটি খানাখন্দে ভরা। ফলে প্রতিবছরের মতো এবারও ভোগান্তি পোহাতে হতে পারে এ পথে চলাচলকারীদের। কাঁচপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় সেতুর নির্মাণকাজ চলার কারণে মহাসড়কের একাংশ কেটে ফেলা হয়েছে। ফলে এখন থেকেই যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ভোগান্তির জায়গা গাজীপুর অংশে। চান্দনা চৌরাস্তা থেকে টঙ্গীর তুরাগ সেতু পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার অংশে পানি জমে দুই পাশে তৈরি হয়ে আছে বিশাল নালা। এতে ঈদ যাত্রায় দুর্ভোগ আরো বাড়বে। ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কেরও বেশ কিছু এলাকায় রয়েছে ছোট-বড় অনেক গর্ত। ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়ক এখন বেহাল।
এ অবস্থা থেকে মুক্তির একমাত্র উপায় দ্রুত সড়ক সংস্কার। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সংস্কারকাজ চলছে কিন্তু কাজের গতি বাড়াতে হবে। বর্ষায় নষ্ট হয়ে যাওয়া সড়ক-মহাসড়ক অবিলম্বে মেরামত করা প্রয়োজন। একই সঙ্গে মহাসড়কের পাশে অবৈধ পার্কিং বন্ধ করতে হবে। অবৈধ হাটবাজার, বিশেষ করে কোরবানির পশুর হাট যেন যানজটের কারণ না হয় সেদিকেও দৃষ্টি দিতে হবে। আমরা আশা করব, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সড়ক-মহাসড়ক চলাচলের উপযোগী করতে জরুরি ব্যবস্থা নেবে।