পূর্ণাঙ্গ নাম ঠিকানা আদালতে দাখিল ॥ ফুটপাত দখলদার ও আশ্রয়দাতা রকিব সহ ২৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা

45

স্টাফ রিপোর্টার :
নগরীর ফুটপাত অবৈধ দখলদার ও তাদের আশ্রয়দাতাদের পূর্ণাঙ্গ নাম ঠিকানা চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট rokibiআদালতে গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টায় কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গৌছুল হোসেন দাখিল করেছেন।
আদালতের বিচারক মো: সাইফুজ্জামান হিরো ফুটপাতের অবৈধ দখলদার ও তাদের আশ্রদাতাদের পূর্ণাঙ্গ নাম ঠিকানা পেয়ে ২৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারী করে আগামী ৫ নভেম্বর গ্রেফতারী পরোয়ানা ফেরতের দিন ধায্য করেন। এর আগে গতকাল একই আদালতে ওই ২৬ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ বাদী হয়ে সিআর-১৪০৬ নং ফৌজদারী কার্যবিধি আইনে একটি মামলা রেজিষ্ট্রিভুক্ত করা হয়।
গ্রেফতারী পরোয়ানাকৃত আসামীরা হচ্ছে- সিলেট মহানগর হর্কাস কল্যাণ সমবায় সমিতির সভাপতি রকিব আলী, সহ-সভাপতি আতিয়ার রহমান, শফিক আহমদ, মো: আব্দুল বাশার, রুহুল আমিন রুবেল, মখলেছুর রহমান, মো: আব্দুল আহাদ, সাধারণ সম্পাদক খোকন ইসলাম, জিন্দাবাজার মুক্তিযোদ্ধা/ কোর্ট পয়েন্ট অটোরিকশা ষ্ট্যান্ডের আহবায়ক কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক রুমন আহমদ, আহবায়ক কামরুল ইসলাম, যুগ্ম আহবায়ক মো: ইসলাম উদ্দিন, শফিক উদ্দিন, মধুবন পয়েন্ট ইমা/ লেগুনা ষ্ট্যান্ডের সদস্য সচিব ইউসুফ আলী, সভাপতি সোহাগ মিয়া, সহ-সভাপতি মো: আদিল, সাধারণ সম্পাদক মো: কবির মিয়া, রংমহল টাওয়ার অটোরিক্সা/ সিএনজি ষ্ট্যান্ডের অর্থ সম্পাদক মো: বাবুল মিয়া, সভাপতি মো: আজমল হোসেন, তামাবিল (ধোপাদীঘিরপার) ইমা/ লেগুনা ষ্ট্যান্ডের সহ-সভাপতি মো: মুরাদ হোসেন, সভাপতি মো: সাহাব উদ্দিন সাবু, সহ-সভাপতি ফয়জুল মিয়া, কার্যকরী সভাপতি মো: নাজিম উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক মো: বদরুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক আ: নুর হিরন, কোষাধক্ষ্য মো: আব্দুর রশিদ এবং অটোরিক্সা শ্রমিক ইউনিয়ন আম্বরখানা-সালুটিকর শাখার নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য তেরা মিয়া।
আদালতের আদেশ থেকে জানা গেছে, গত ১৬ অক্টোবর সিলেট সিটি কপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ও কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গৌছুল হোসেন কর্তৃক দাখিলকৃত প্রতিবেদনসহ নথি আদালত পর্যালোচনা করেন। উল্লেখিত প্রতিবেদনসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অর্থাৎ সিলেট নগরীতে অবৈধভাবে ফুটপাত, রাস্তা স্থাপনা দখল বিষয়ে ইতিমধ্যে জাতীয় ও স্থানীয় দৈনিকের কয়েকটি পত্রিকায় একাধিক রিপোর্ট প্রকাশিত হয়। সিলেট সিটি কপোরেশনের মেয়র ও কোতোয়ালী থানার ওসির দাখিলী প্রতিবেদন পর্যালোচনায় ইহা সুস্পষ্টভাবে আদালতের নিকট প্রতীয়মান হয়েছে যে, কয়েকটি হর্কাস সমিতির নামে কিছু অবৈধ দখলকারী ব্যক্তিবর্গ দীর্ঘদিন যাবৎ পুলিশ প্রশাসনকে কোররূপ তোয়াক্কা না করে বা তাদের নিষক্রিয়তার সুযোগে সম্পূর্ণ বেআইনীভাবে জনসাধারণের ব্যবহার্য সরকারী সড়কে নানা ধরনের দোকানপাট বাসিয়ে এবং উক্ত দোকানপাট বিভিন্ন লোকজনের কাছে ভাড়া দিয়ে ভাড়ার নামে অবৈধভাবে চাঁদা তুলে লাভবান হয়ে আসছিল। বিভিন্ন হর্কাস সমিতির ব্যানারে অবৈধভাবে সরকারি রাস্তা, স্থাপনা, ফুটপাত দখল করে দখলকারীরা জনসাধারণের স্বাভাবিক যাতাযাতে চরমভাবে বাধা বিঘœ সৃষ্টিসহ সরকারী সম্পত্তির ক্ষতিসাধন করে চলেছে।
আদেশ থেকে আরো জানা যায়, ওই অভিযুক্ত অবৈধ দখলদারদের এহেন বেআইনী কার্যক্রম দন্ডবিধির ২৮৩/৪৩১/৪৩২/৩৮৫/৩৫৩ ধারায় গুরুতর আমলযোগ্য অপরাধ বিধায় অবৈধ দখলকারী ২৬ জনের বিরুদ্ধে ফৌজদারী কার্যবিধির ১৯০ এর সি ধারার ক্ষমতা বলে অপরাধটি আমলে নেন উল্লেখিত আদালত।
উল্লেখ্য, সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির লিখিত আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৫ মে ফুটপাত দখলকারীদের তালিকা প্রস্তুত করে প্রতিবেদন আকারে জমা দিতে মেয়রকে নির্দেশ দেন মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত। এ ক্ষেত্রে মেয়রকে সহযোগিতার জন্য কোতোয়ালি থানার ওসিকেও নির্দেশ দেন আদালত। এর প্রেক্ষিতে গত ১৬ অক্টোবর তারা প্রতিবেদন দাখিল করেন ওই আদালতে। দাখিলকৃত তালিকায় যাদের নাম আছে, তাদের পূর্ণাঙ্গ ঠিকানা ছিল না। ফলে আদালত গতকাল বৃহস্পতিবার ফুটপাত দখলদারদের পূর্ণাঙ্গ নাম ও পরিচয় দাখিল করতে কোতোয়ালী থানার ওসি গৌছুল হোসেনকে নির্দেশ দিয়েছিলেন।