মৌলভীবাজারে নদী ভাঙ্গনে নিঃস্ব হচ্ছে মানুষ

23

পলি জমে ভরাট হওয়ায় নাব্যতা হারিয়েছে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার ভেতর দিয়ে প্রবাহিত ধলাই নদী। অল্প বৃষ্টিতেই বন্যার আশংকায় থাকেন ধলাই পারের মানুষ। এ বছর আগাম বৃষ্টি ও অতিবৃষ্টির কারণে কয়েক দফা বন্যার পর এখন বেড়েছে নদী ভাঙন। ইতোমধ্যে অনেকে হারিয়েছেন বসতবাড়ি ফসলি জমি।
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিরক্ষা বাঁধ মেরামত না হওয়ায় শঙ্কিত রয়েছেন মানুষ। ধলাই নদী দ্রুত খননসহ স্থায়ী প্রতিরোধ বাঁধ নির্মাণ করে নদী ভাঙনের কবল থেকে এলাকার মানুষকে রক্ষার দাবী এলাকাবাসীর।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কমলগঞ্জ উপজেলার চৈতন্যগঞ্জ গ্রামের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত ধলাই নদী পাশে দরিদ্র মানিক দাসের বাড়ি। বাড়িতে দুটি ঘরের মধ্যে একটি ইতোমধ্যে বিলীন হয়েছে নদীগভে, বাকি ঘরটিও প্রায় বিলীন হবার পথে। এভাবে এই পরিবারের মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছেন বাধ্য হয়ে।
শুধু মানিক দাস নন এই গ্রামের ১৭টি দলিত রবিদাস পরিবারসহ কমলগঞ্জ সদর, আদমপুর, মাধবপুর, মুন্সিবাজার, রহিমপুর ইউনিয়নের প্রায় শতাধিক বাড়িঘর ধলাই নদীর ভাঙনে এর মধ্যে বিলীন হয়েছে। বিলীন হয়েছে রাস্তাঘাট, ফসলি জমি, সার্বজনীন শশ্মান ঘাট, গাছপালাসহ নানা স্থাপনা। এছাড়া সামান্য বৃষ্টি হলে নদীর পানি বেড়ে ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিরক্ষা বাঁধ দিয়ে ফসলী জমিতে প্রবেশ করে।
এলাকাবাসীর দাবী দীর্ঘদিন ধরে নদী খনন না হওয়া এবং এবছর তিন দফা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিরক্ষা  বাধ এখনও মেরামত না করার কারণে সামান্য বৃষ্টিপাত হলেই বন্যার কবলেও পড়তে হচ্ছে তাদের। যার ফলে হারাতে হচ্ছে ক্ষেতের ফসল ও পৈতৃক ভিটেমাটি।
উপজেলার চতিয়া গ্রামের আব্দুল হান্নান বলেন, ধলাই নদীর ভাঙনে আমাদের দুই ভাইয়ের ঘর বাড়ী নদীগর্ভে চলে গেছে। এখন আমরা অন্যের বাড়ীতে বসবাস করছি। নদীগর্ভে বাড়ি বিলীন যাওয়ায় আমরা এখন নিঃস্ব।
বাদে উবাটা গ্রামের মরম মিয়া বলেন, এ কয়েকবার বন্যার পানি ধানি জমিতে প্রবেশ করে রূপণকৃত চারা বার বার নষ্ট হয়েছে। এ বছর চারবার জমিতে চারা রূপণ করতে হয়েছে।
চৈতন্যগঞ্জ গ্রামের সাবিত্রী রাণী দাস বলেন, ধলাই নদীর ভাঙনে আমার বাড়িতে দুটি ঘরের মধ্যে একটি ইতোমধ্যে  বিলীন হয়েছে নদী গর্ভে বাকি ঘরটিও প্রায় বিলীন হবার পথে। এভাবে আমরা জীবনের ঝুঁকিপূর্ণভাবে ছেলেমেয়েদের নিয়ে বসবাস করছি। যেকোনো সময় আমার বাকি ঘরটিও বিলীন হয়ে যেতে পারে।
মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী বিজয় ইন্দ্র শংকর চক্রবর্তী বলেন, ‘স্থায়ী প্রতিরোধ বাঁধ নির্মাণের জন্য কারিগরি কমিটি গঠন করা হয়েছে। পানি নামলে অস্থায়ীভাবে প্রতিরক্ষা বাধের ভাঙন মেরামত করা হবে। (খবর সংবাদদাতার)