গ্রেফতারি পরোয়ানা থানায় পৌঁছামাত্র খালেদা জিয়া গ্রেফতার’ হবেন -শেখ হাসিনা

34

BC-04-03-15-N_49কাজিরবাজার ডেস্ক :
খালেদা জিয়ার গ্রেফতার প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আদালত নির্দেশ দিয়েছেন খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয় তল্লাশি করতে। এই নির্দেশ গুলশান থানায় পৌঁছালেই সেখানে তল্লাশি হবে। এটা করা একান্ত প্রয়োজন। একই সঙ্গে গ্রেফতারি পরোয়ানা গুলশান থানায় পৌঁছামাত্র খালেদাকে গ্রেফতার করা হবে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
বুধবার (১১ মার্চ) বিকেলে জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বকালে এম এ আউয়ালের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে সংসদ নেতা এ কথা বলেন।
প্রধামন্ত্রী আরও বলেন, খালেদা জিয়া এখন আর কোনো রাজনৈতিক দলের নেত্রী নন। তিনি জঙ্গিবাদের নেত্রী। তার কার্যালয় তল্লাশি করা একান্ত প্রয়োজন। কেন-না তিনি বাড়ি ছেড়ে অফিসে বসে আছেন। দেশকে একটা জঙ্গিবাদী রাষ্ট্র বানাতে চান। দেশে জঙ্গি শাসন কায়েম করতে চান।
আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিমের অপর এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশের আইনের অভাব নেই। ট্রাইবুন্যালও আছে। আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে। যারা মানুষ পুড়িয়ে মারছে, তাদের কেউ আইনের ঊর্ধ্বে থাকতে পারে না। এসব অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা সময়ের ব্যাপার মাত্র।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা নিষ্ঠুরভাবে এতো মানুষকে হত্যা করেছে-করছে, তাদের বিচারের মুখোমুখি হতেই হবে। এটা শুধু এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। আইন তার নিজস্ব গতিতেই চলবে, আইন অনুযায়ী সব হত্যাকাণ্ডের বিচার করা হবে।
‘বিএনপি নেত্রী বাড়ি ছেড়ে কেন কার্যালয়ে গিয়ে বসে আছেন সেটাই মূল রহস্য’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, খালেদা জিয়া এখন আর রাজনৈতিক দলের নেত্রী নন, জঙ্গিবাদী নেত্রীতে পরিণত হয়েছেন। দেশে জঙ্গিবাদী শাসন প্রতিষ্ঠা করতে উনি জঙ্গি-সন্ত্রাসীমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন। কোনো সুস্থ মানুষ দেশের মানুষকে এভাবে পুড়িয়ে হত্যা করতে পারে না। নিজের মৃত পুত্রের প্রতিও যার দরদ নেই, সেই নেত্রীর কাছ থেকে দেশবাসী কী আশা করতে পারে? তাই গুলশান থানায় তল্লাশি পরোয়ানা পৌঁছালেই ওই কার্যালয়টি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তল্লাশি চালাবে, গ্রেফতারি পরোয়ানা থানায় আসলে তা বাস্তবায়ন করা হবে- যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।
শফিকুল ইসলাম শিমুলের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আমরা দেশের নতুন প্রজন্মকে তথ্য-প্রযুক্তি ও কারিগরী শিক্ষায় শিক্ষিত করছি। আর বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া সাইকেল বোমা, পেট্রোল বোমা বানিয়ে মানুষ মারার জঙ্গিবাদী শিক্ষা দিচ্ছেন। এসব করে উনি বিদেশেও বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করছেন।
শেখ হাসিনা বলেন, এই জঙ্গি ও সন্ত্রাসী নেত্রীর চেহারা (খালেদা জিয়া) শুধু দেশেই নয়, বিশ্ববাসীর সামনে উন্মোচিত হয়ে গেছে। উনি এতোদিন বসে ছিলেন কেউ এসে ক্ষমতার দুয়ার খুলে তাকে নিয়ে গিয়ে বসাবেন, কিন্তু কেউ আসেনি। যেসব বিদেশিদের দিকে উনি চেয়েছিলেন, তারাও এসব জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বন্ধ করার দাবি জানাচ্ছেন। তাই এখন বিএনপি নেত্রীর পাশে কেউ নেই।
জাতীয় পার্টির শওকত চৌধুরীর এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, আপনারাই বিএনপি নেত্রীকে অনুরোধ করুন, বারেবারে হরতাল-অবরোধ ডেকে কী লাভ। একবারে ডাকলেই তো হয়। তবে দেশের জনগণ আর বিএনপি নেত্রীর হরতাল-অবরোধ মানছে না।
তবে দেশবাসীকে সহিংসতার বিরুদ্ধে আরও সজাগ ও সচেতন হয়ে এগিয়ে আসতে হবে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
নুর জাহান বেগমের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, দেশের জনগণের জানমাল রক্ষায় সরকারের পক্ষ থেকে যা যা পদক্ষেপ গ্রহণ করা দরকার, তার সবই নেওয়া হবে। হরতাল-অবরোধের নামে নাশকতা-জঙ্গিবাদী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে জনগণ স্বতঃস্ফুর্তভাবেই মাঠে মেনেছে। বিএনপি নেত্রী আন্দোলনের নামে গণহত্যার মতো কাজ করেই যাচ্ছেন। দেশবাসীর কাছে অনুরোধ, প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় কে-কে এসব ঘৃণ্য কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত তাদের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট থানায় জানান। সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি এ ব্যাপারে দেশবাসীর সর্বাত্মক সহযোগিতাও কামনা করেন।