স্পোর্টস ডেস্ক :
বিশ্বমঞ্চে নিজেদের গ্র“প পর্বের শেষ ম্যাচে প্রত্যাশিত জয় পেল শ্রীলংকা। অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজের দল স্কটল্যান্ডকে ১৪৮ রানে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালের ম্যাচে নামবে। লংকানদের ছুড়ে দেওয়া ৩৬৪ রানের টার্গেটে ব্যাটিংয়ে নেমে ৪৩.১ ওভারে ২১৫ রান করতেই থেমে যায় স্কটিশদের ইনিংস।
টস জিতে আগে ব্যাটিং করা শ্রীলংকার ওপেনার তিলেকারতেœ দিলশান আর ক্রিকেট বিশ্বের বিস্ময় কুমার সাঙ্গাকারার ব্যাটে ভর করে লংকানরা স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ৯ উইকেটে ৩৬৩ রান সংগ্রহ করে। যা স্কটিশদের বিপক্ষে ওয়ানডে ক্রিকেটে যেকোনো দলের সর্বোচ্চ দলীয় স্কোর।
এ ম্যাচে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ২২তম শতক তুলে নেন লংকান ওপেনার দিলশান। ৯৭ বল খেলে তিনি তিন অংকের ম্যাজিক ফিগারে পৌঁছান। তবে, ইনিংসের ৩৫তম ওভারে ১০৪ রান করে আউট হন দিলশান। ডেভির বলে ম্যাকলউডের তালুবন্দি হয়ে আউট হওয়ার আগে দিলশান ৯৯ বলে ১০টি চার আর একটি ছক্কা হাঁকান।
টানা চার ম্যাচে শতক পূর্ণ করা বিরল ক্রিকেটার কুমার সাঙ্গাকারার সঙ্গে দিলশান এ ম্যাচে ২৮.৫ ওভার থেকে ১৯৫ রানের জুটি গড়েন।
স্কটিশ বোলারদের উপর দিয়ে ঝড় তুলে ৯৫ বলে ১২৪ রান করে আউট হন কুমার সাঙ্গাকারা। ডেভির বলে উইকেটের পিছনে ধরা পড়ার আগে সাঙ্গাকারা ১৩টি চারের পাশাপাশি ৪টি ছক্কা হাঁকান। এর আগে ৮৬ বলে সাঙ্গা তার ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ২৫তম শতক পূর্ণ করেন।
দলীয় ২১৬ রানে সেঞ্চুরিয়ান দিলশান ফিরে যাওয়ার পর আরেক সেঞ্চুরিয়ান ও চলতি আসরে টানা চারটি শতক হাঁকানো কুমার সাঙ্গাকারা বিদায় নেওয়ার আগে বিশ্বের একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে টানা চার ম্যাচে শতক হাঁকানোর বিশ্বরেকর্ড গড়েন।
টপঅর্ডারের চার ব্যাটসম্যান ফিরে গেলে ব্যাটিং ক্রিজে এসে মাত্র ১৩ বলে দুটি করে চার ও ছয়ে ২৪ রান করে বিদায় নেন কুশল পেরেরা। আর চলতি বিশ্বকাপের আসরে দ্বিতীয় দ্রুততম অর্ধশতক হাঁকান লংকান দলপতি অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ। তিনি ২১ বলে ৫১ রান করে বাউন্ডারি সীমানায় ধরা পড়েন।
তবে, আউট হওয়ার আগে ম্যাথুজ একটি চারের পাশাপাশি ছয়টি ছক্কা হাঁকান। আর শেষ ১৮ বলে ২৭ রানের জুটি গড়েন অপরাজিত থাকা দুসমান্থা চামিরা এবং নুয়ান কুলাসেকারা।
স্কটল্যান্ডের হয়ে সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট তুলে নেন জস ডেভি। চলতি বিশ্বকাপের আসরে ৫ ম্যাচ খেলে সর্বোচ্চ ১৪টি উইকেটও এ স্কটিশ বোলারের দখলে। এছাড়া দুটি করে উইকেট নেন ইভান্স ও বেরিংটন।
৩৬৪ রানের টার্গেট নিয়ে ব্যাটিংয়ে নামে স্কটল্যান্ড। স্কটিশদের হয়ে ব্যাটিং উদ্বোধনের দায়িত্ব নিয়ে ক্রিজে আসেন কাইল কোয়েটজার এবং ম্যাকলউড। ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই লাসিথ মালিঙ্গা নিজের বলে নিজেই ক্যাচ নিয়ে কোয়েতজারকে শুন্য হাতেই ফিরিয়ে দেন।
দলীয় ৪৪ রানে দিলশানের বলে এলবিডব্লু হয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন ম্যাট মাচান (১৯)। এর আগে নুয়ান কুলাসেকারার বলে কালাম ম্যাকলউড (১১) আউট হলে দ্বিতীয় উইকেট হারায় স্কটিশরা।
দলীয় ৪৪ রানে তৃতীয় উইকেটের পতনের পর প্রেস্টন মমসেন ও ফ্রেডলি কোলম্যান দলকে এগিয়ে নেওয়ার দায়িত্ব নেন। এ দু’জন মিলে ১১৮ রানের জুটি গড়েন। ইনিংসের ৩২তম ওভারের শেষ বলে আউট হন স্কটিশ দলপতি প্রেস্টন মমসেন। পেরেরার বলে থিরিমান্নের তালুবন্দি হওয়ার আগে মমসেন খেলেন ৬০ রানের একটি ইনিংস। ওয়ানডে ক্যারিয়ারের পঞ্চম অর্ধশতক হাঁকিয়ে ৭৫ বলে তার সাজানো ইনিংসে ছিল ৭টি চারের মার।
ওয়ানডে ক্যারিয়ারের পঞ্চম অর্ধশতক হাঁকিয়ে ৬০ রানে স্কটিশ দলপতি মমসেন ফিরে গেলে ব্যাটিং ক্রিজের দায়িত্ব নেন ওয়ানডে ক্যারিয়ারের প্রথম অর্ধশতক পার করা ফ্রেডি কোলম্যান। তবে, ৭০ রান করে আউট হন তিনি। কুলাসেকারার বলে পেরেরার হাতে ধরা পড়ার আগে কোলম্যান ৭৪ বলে ৭টি চারের সাহায্যে ৭০ রান করেন।
এরপর দ্রুত ফিরে যান মিচেল লেস্ক, ম্যাথিউ ক্রুস, রব টেইলর। তবে, শেষ দিকে ২২ বলে দুই চার আর দুই ছয়ে ২৯ রান করেন বেরিংটন।
এ ম্যাচের মধ্য দিয়ে অভিষিক্ত হওয়া লংকান পেসার দুসমান্থা চামিরা আস্থার প্রতিদান দিয়ে তুলে নেন তিনটি উইকেট। ৭.১ ওভার বল করে তিনি ৫১ রান দেন। এছাড়া কুলাসেকারা ৭ ওভার বল করে ২০ রান খরচায় নেন তিনটি আর ৯ ওভারে ২৯ রান দিয়ে দুইটি উইকেট নেন মালিঙ্গা।