এ টি এম তুরাব, বিয়ানীবাজার থেকে :
বিয়ানীবাজারে বিএনপি, ছাত্রলীগ ও পুুলিশের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে বিএনপি নেতাকর্মী, সাধারণ জনতাসহ অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। সংঘর্ষ চলাকালে পুলিশ অন্তত ২৫ রাউন্ড শর্টগানের গুলি বর্ষণ করে বলে প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী দফায় দফায় সংঘর্ষ চলাকালে পুলিশ ছাত্রলীগ সহায়তা নিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের ধাওয়া করে ছত্রভঙ্গ করে। পরে ছাত্রলীগ-পুলিশ একত্রিত হয়ে বিএনপি’র বিরুদ্ধে অবস্থান নিলে সংঘর্ষ আরো ব্যাপক আকার ধারণ করে। রবিবারের হরতালের সমর্থনে শনিবার বিকেলে উপজেলা বিএনপি তার অঙ্গ এবং সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীরা শহরে মিছিল বের করে স্থানীয় পোষ্ট অফিস মোড়ে এসে পৌছলে পুলিশ তাতে বাঁঁঁঁধা প্রদান করে। শুরু হয় পুলিশের সাথে বিএনপি’র নেতাকর্মীদের ধস্তাধস্তি। পরে পুলিশকে লক্ষ্য করে বিএনপি নেতাকর্মীরা ইট পাথর নিক্ষেপ শুরু করলে উভয়ের মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়লে শহরে আশা লোকজনের মধ্যে দেখা দেয় আতংক। ব্যবসায়ীরা দোকানপাট বন্ধ করে দেন। এ সময় বেশ কয়েকটি গাড়ী ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। পুলিশ এ সময় সাইফুর রহমান নামের এক বিএনপি নেতাকে আটক করেছে।
জানা যায়, বিএনপি আহূত রবিাবারের হরতালের সমর্থনে উপজেলা বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদল শনিবার বিকেল ৪ টায় শহরে মিছিল বের করে। মিছিলটি স্থানীয় পোষ্ট অফিস রোডের সামনে আসা মাত্র পূর্ব থেকে অবস্থানরত পুলিশ বিএনপি’র মিছিলে বাধা প্রদান করে। এ সময় বিএনপি নেতারা পুলিশের সাথে বাক বিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েন। এরই এক পর্যায়ে মিছিলকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট পাথর নিক্ষেপ শুরু করে। মুহূর্তের মধ্যে শুরু হয় উভয়ের মধ্যে সংঘর্ষ। পুলিশ এ সময় ২৫ রাউন্ড টিয়ার সেল নিক্ষেপ করলেও বিএনপি নেতাকর্মীদের ঢিল নিক্ষেপের কারণে পুলিশ অনেকটা পিছু হটতে বাধ্য হয়। এদিকে সংঘর্ষের এক পর্যায়ে ছাত্রলীগ কর্মীরাও বিএনপি’র সাথে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ছাত্রলীগ পুলিশ মিলে বিএনপি’র বিরুদ্ধে অবস্থান নিলে তারা কিছুটা পিছু হঠে কলেজ রোড মোড়ে গিয়ে আবারো সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। সংঘর্ষে অন্তত ২০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। তাদেরকে বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসা প্রদান করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। ঘটনার পর থেকে ব্যাপক সংখ্যক পুলিশ শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে অবস্থান নিয়েছে। শহরে টান টান উত্তেজনা বিরাজ করছে।
বিয়ানীবাজার উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি নজমুল হোসেন পুতুল জানিয়েছেন, তাদের পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচী চলাকালে দলীয় সিদ্ধান্ত মোতাবেক মিছিল বের করা হয়। শান্তিপূর্ণ মিছিলটি পোষ্ট অফিস রোডে পৌছলে পুলিশ মিছিলকে লক্ষ্য করে গুলি বর্ষণ শুরু করে। এতে তার দলের অনেক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে বিয়ানীবাজার থানার ওসি জুবের আহমদ জানিয়েছেন, সংঘর্ষ পরবর্তী বিয়ানীবাজারের পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। সংঘর্ষের সাথে জড়িতদের আটকের জন্য পুলিশ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালাচ্ছে। মামলা দায়েরের প্রস্তুুতি চলছে।
এদিকে সংঘর্ষের পর শহরে উপজেলা আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের বিভিন্ন গ্র“প বিক্ষোভ মিছিল করে।