কাজিরবাজার ডেস্ক :
পেশোয়ারের ভয়াবহ হত্যাকাযজ্ঞের প্রতিক্রিয়ায় জঙ্গিদের বিরুদ্ধে আরও কঠোর নীতি গ্রহণ করছে পাকিস্তান সরকার। সামনের দিনগুলোতে আরও ৫শ’ জঙ্গির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হবে বলে পাক কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম।
পেশোয়ারের সেনা পরিচালিত স্কুলে সংঘটিত ওই হামলার পর মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের ওপর থেকে অলিখিত স্থগিতাদেশ তুলে নেয় পাকিস্তান। পাশাপাশি শুক্রবার থেকে এ পর্যন্ত (সোমবার) কার্যকর করা হয়েছে সন্ত্রাসবাদে অভিযুক্ত ছয় জঙ্গির মৃত্যুদণ্ড।
গত মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) পেশোয়ারের আর্মি পাবলিক স্কুলে হামলা চালিয়ে ১৪১ জনকে হত্যা করে পাকিস্তানের নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন তেহরিক ই তালিবানের (টিটিপি) আত্মঘাতী হামলাকারীরা। নিহতদের মধ্যে ১৩২ জনই বিদ্যালয়টির শিশু শিক্ষার্থী।
এ ঘটনার চরম প্রতিশোধ নেয়ার অঙ্গীকার করে পাকিস্তান সেনাবাহিনী। পাশাপাশি জঙ্গিদের বিরুদ্ধে আরও কঠোর অবস্থা গ্রহণের ঘোষণা দেন পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ। এরপরই মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের ওপর থেকে দীর্ঘ ছয় বছরের অলিখিত নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়ে শুক্রবার থেকে ছয় জঙ্গির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে সরকার।
পাশাপাশি সামনের সপ্তাহগুলোতে কারাগারে আটক আরও ৫শ’ জঙ্গির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হবে বলেও জানায় পাক কর্তৃপক্ষ।
যে ছয়জনকে ফাঁসিতে ঝোলানো হয়েছে তাদের মধ্যে ৫ জন ২০০৩ সালে পাকিস্তানের সাবেক স্বৈরশাসক পারভেজ মোশাররফকে হত্যা প্রচেষ্টার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। অপর জন ২০০৯ সালে সেনা হেডকোয়ার্টারে হামলার সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে জানা গেছে।
পাক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এ প্রসঙ্গে সংবাদমাধ্যমকে জানান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সব আপিলে হেরে যাওয়া ৫শ’ অভিযুক্তের ফাইল চূড়ান্ত করছে। তাদের ক্ষমা প্রার্থনার আবেদনও রাষ্ট্রপতি নাকচ করে দিয়েছেন। আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই তাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হবে।
প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ ইতোমধ্যেই মৃত্যুদণ্ডের মামলাগুলো নিষ্পন্নে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিসকে তাগাদা দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন একজন সরকারি মুখপাত্র। তবে পাকিস্তান সরকারের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের এ পরিকল্পনার কঠোর সমালোচনা করেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো। এছাড়া পাকিস্তানকে এ সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছে পাকিস্তানও।
শনিবার এক বিবৃতিতে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলেছে, এই গণমৃত্যুদণ্ড প্রদানের ঘটনা পেশোয়ার হত্যাকাণ্ডের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত প্রতিক্রিয়া।
এদিকে জঙ্গিদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরে পাক কর্তৃপক্ষের উদ্যোগের প্রেক্ষিতে দেশজুড়ে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা সহ বিমানবন্দর ও কারাগারে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। মোতায়েন করা হয়েছে সামরিক ও আধা সামরিক বাহিনীর সদস্যদের।