স্টাফ রিপোর্টার
নিজের ফেসবুক আইডিতে তিন মিনিটের একটি ভিডিও আপলোড করেছেন সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) সদ্য সাবেক মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। শনিবার সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে এই ভিডিওটি প্রকাশ করেন। এতে তিনি বর্তমান অন্তর্র্বর্তীকালীন সরকারের ব্যাপক সমালোচনা করে নিজের বিরুদ্ধে ১৩টি মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানান আনোয়ারুজ্জামান।
এর আগে ২৪ আগস্ট বিকেল ৫টার দিকে নিজের ফেসবুক আইডিতে লাইভে এসে ১৮ মিনিট কথা বলেন সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) সদ্য সাবেক মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। সেই ভিডিওতেও তিনি ড. ইউনূস সরকারের কড়া সমালোচনা করেন।
গত ১৯ আগস্ট সিলেটসহ দেশের ১২টি সিটি কর্পোরেশনের মেয়রকে অপসারণ করা হয়। তাদের অপসারণের পর সব সিটিতে প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় সরকার বিভাগের নির্দেশ মেয়র আনোয়ারুজ্জামানের বদলে সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার সিসিক প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর পরই সিলেটের অনেক আওয়ামী লীগ নেতা এবং জনপ্রতিনিধির সঙ্গে আনোয়ারুজ্জামানও লাপাত্তা হয়ে যান। সম্প্রতি খবর পাওয়া যায়- দেশ ছেড়ে লন্ডনে চলে গিয়েছেন তিনি। তবে তিনি কবে ও কীভাবে লন্ডনে গেছেন তা জানা যায়নি।
একটি সূত্র বলছে- সিলেট বিভাগের মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে তিনি ভারতে চলে যান। সেখান থেকে যান লন্ডনে।
গত শুক্রবার রাতে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ ফারুকের কাছে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর লন্ডনে আসার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে বলেন, আনোয়ারুজ্জামান লন্ডনে চলে এসেছেন এবং তাঁর সঙ্গে আমার দেখাও হয়েছে। আনোয়ারুজ্জামানের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা থাকার পরও তিনি কবে ও কীভাবে দেশ থেকে বের হলেন, জানতে চাইলে সে ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে চাননি তিনি।
আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর বিরুদ্ধে সিলেটে প্রথম মামলা হয়েছে ১৯ আগস্ট। এটি হত্যা মামলা। সিলেটে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ১৮ জুলাই সন্ধ্যায় পুলিশের ধাওয়া খেয়ে আখালিয়া এলাকায় পানিতে পড়ে মারা যান শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) ছাত্র রুদ্র সেন। এ ঘটনায় ১৯ আগস্ট সিলেটের অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল মোমেনের আদালতে বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শাবিপ্রবির সমন্বয়ক হাফিজুল ইসলাম। এই মামলায় সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীকে ৬ নম্বর আসামি করা হয়েছে। এরপর আরও ৮টি হত্যা মামলার আসামি করা হয়েছে তাকে। আর মোট মামলা ১৩টি বলে শনিবারের ভিডিওতে নিজেই জানিয়েছেন আনোয়ারুজ্জামান।
উল্লেখ্য, আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী একজন ব্রিটিশ নাগরিক ও যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। গত বছরের ২১ জুন অনুষ্ঠিত সিলেট সিটি করপোরেশনের পঞ্চম নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করে বিজয়ী হন। এ নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ছিলেন।