নতুন শিক্ষাক্রমে এসএসসি পরীক্ষা ডিসেম্বরে

28

কাজির বাজার ডেস্ক

নতুন শিক্ষাক্রমে প্রথম ‘মাধ্যমিক ও সমমান’ (সেকেন্ডারি স্কুল সার্টিফিকেট বা এসএসসি) পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ২০২৬ সালে। এখন শিক্ষার চিরস্থায়ী ক্যালেন্ডার অনুসারে প্রতি বছরের ফেব্রæয়ারি মাসে এসএসসি ও সমমান এবং এপ্রিল মাসে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। নতুন শিক্ষাক্রমে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে শিক্ষাবর্ষের শেষ মাসে অর্থ্যাৎ ডিসেম্বরে। করোনাকাল বাদে গত এক যুগের বেশি সময় ধরে এসএসসি পরীক্ষা ফেব্রæয়ারি মাসেই শুরু হয়েছে।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) থেকে জানা গেছে, নতুন শিক্ষাক্রমে শুধু দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ের ওপর ভিত্তি করে এসএসসি পরীক্ষা নেওয়া হবে। লিখিত মূল্যায়নে ওয়েটেজ ৬৫ শতাংশ এবং কার্যক্রমভিত্তিক মূল্যায়নে থাকবে ৩৫ শতাংশ। পুরো পরীক্ষা হবে ৫ ঘণ্টাব্যাপী। এসব নতুন পদ্ধতি ঠিক করে প্রায় চ‚ড়ান্ত করা হচ্ছে পরীক্ষা পদ্ধতি। আগামী ৩১ মে- এর মধ্যে তা চ‚ড়ান্ত করা হবে। শিক্ষাক্রম সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে গঠিত উচ্চ পর্যায়ে কমিটি এ সংক্রান্ত মূল্যায়ন পদ্ধতি চ‚ড়ান্ত করার কাজ শেষ পর্যায়ে নিয়ে এসেছে। মূল্যায়নে স্কুলের বার্ষিক ও অর্ধবার্ষিক (ষাণ¥াসিক) মূল্যায়ন প্রক্রিয়া নির্ধারণে সাতটি ধাপ বা স্কেল নির্ধারণ করা হয়েছে। এসএসসি পরীক্ষায়ও বেশ কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। ফেব্রæয়ারির পরিবর্তে পরীক্ষা হবে ডিসেম্বরে। সব কিছু চ‚ড়ান্ত করতে চলতি মাসের মধ্যে এ সংক্রান্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে একটি বৈঠক ডেকেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ফরহাদুল ইসলাম বলেন, এসএসসি পরীক্ষা নিয়ে বেশ কিছু নতুন সিদ্ধান্ত আসতে যাচ্ছে নতুন কারিকুলামে। সেখানে পরীক্ষা সময় বাড়ার পাশাপাশি পরীক্ষা সময় পরিবর্তন হতে পারে। সব কিছু আরেকটি বৈঠকের চ‚ড়ান্ত হওয়ার পর সবাইকে জানিয়ে দেওয়া হবে। তিনি জানান, মূল্যায়ন নির্দেশনা যেটি ঠিক করতে আগামী ২৭ মে এক কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে। সেখান থেকে চ‚ড়ান্ত হতে পারে নতুন কারিকুলামে মূল্যায়ন পদ্ধতি।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার বলেন, বছরের শুরুতেই এসএসসি পরীক্ষা না নিয়ে, বছরের শেষে নিলে শিক্ষার্থী শিক্ষাবর্ষ পুরোপুরি ব্যবহার করতে পারবে। এসব দিক বিবেচনায় ফেব্রæয়ারির পরিবর্তে এসএসসি পরীক্ষা ডিসেম্বর নেওয়ার সুপারিশ রয়েছে। তবে তা এখনও চ‚ড়ান্ত নয়। চলতি মাসে চ‚ড়ান্ত বৈঠকের পর তা বলা যাবে।
এসএসসি পরীক্ষা ৫ ঘণ্টা : এর আগে মূল্যায়ন কমিটির সুপারিশের বলা হয়, নতুন শিক্ষাক্রমে হবে ২০২৬ সালের এসএসসি পরীক্ষা। এই পাবলিক পরীক্ষায় মোট ১০টি বিষয়ের ওপর শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করা হবে। এতে থাকবে লিখিত পরীক্ষাও। প্রতিটি বিষয়ের মূল্যায়নে বিরতিসহ ৫ ঘণ্টা পরীক্ষা কেন্দ্রে থাকতে হবে শিক্ষার্থীদের। বর্তমান সময়ের মতো আলাদা পরীক্ষা কেন্দ্রে মূল্যায়নে অংশ নেবে শিক্ষার্থীরা। আর এসএসসি পরীক্ষা হবে কেবল দশম শ্রেণির বিষয়ের ওপর। অর্থাৎ আগে নবম-দশম এই দুই শ্রেণির ওপর পরীক্ষা হলেও নতুন শিক্ষাক্রমে শুধু দশম শ্রেণির ওপর পরীক্ষা হবে। এই শ্রেণিতে মোট ১০টি বিষয় পড়বে শিক্ষার্থীরা। বিষয়গুলো হলোÑ বাংলা, ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞান, ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান, ডিজিটাল প্রযুক্তি, জীবন ও জীবিকা, ধর্মশিক্ষা, স্বাস্থ্য সুরক্ষা, শিল্প ও সংস্কৃতি।
এসএসসি পরীক্ষা নেওয়ার সার্বিক আয়োজনের জন্য বিষয়ভিত্তিক ৬০০ শিক্ষকের সমন্বয়ে রিসোর্সপুল (বিশেষজ্ঞ দল) গঠন করা হবে। প্রথমে তাদের বোর্ডের আয়োজনে এনসিটিবির বিশেষজ্ঞদের তত্ত¡াবধানে সাত দিনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। আর ১১টি শিক্ষা বোর্ডের প্রতিটির জন্য প্রতি বিষয়ে চারজন করে মোট ৪৪ জন শিক্ষককে চ‚ড়ান্ত করা হবে।