স্টাফ রিপোর্টার :
একে একে তিনটি প্রাইভেট ক্লিনিক ও একটি সরকারি হাসপাতাল ঘুরে ভর্তি হতে না পেরে নির্মম পরিণতি মেনে নিতে হলো এক আওয়ামী লীগ নেতার স্ত্রীকে। মৃত্যুবরণকারী মহিলা দক্ষিণ সুরমা উপজেলার কুচাই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আখতার হোসনের স্ত্রী। তিনি মৃত্যুর আগ পর্যন্ত বুকে ব্যথা ও শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন।
জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার (৪ জুন) দুপুরে কুচাই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আখতার হোসনের স্ত্রীর বুকে প্রচণ্ড ব্যথা ও শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। স্ত্রীকে নিয়ে আখতার হোসেন দক্ষিণ সুরমার নর্থ-ইস্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আসেন। সেখানের কর্তব্যরত ডাক্তার তার স্ত্রীকে দুটি টেস্ট দিয়ে ভর্তি না করে বাসায় পাঠিয়ে দেন।
এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক বলেন, ‘টেস্টগুলোর রিপোর্ট আসার পরে রোগীকে নিয়ে (শুক্রবার) আসবেন। প্রয়োজনে কাল ভর্তি করবো।’
এদিকে, গত শুক্রবার ভোরেই রোগীর শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। তখন স্বামী আখতার হোসেন নর্থ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছুটে আসেন এবং সেখানে তার স্ত্রীকে ভর্তি করাতে চান। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীকে ‘সিট নেই’ অজুহাতে ভর্তি করেনি।
পরে আখতার হোসেন গতকাল দুপুর পর্যন্ত একে একে সিলেট নগরেরর পার্ক ভিউ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ‘করোনা হসপিটাল’ খ্যাত শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতাল ও ইবসে সিনা হাসপাতালে চেষ্টা করে স্ত্রীকে ভর্তি করাতে পারেননি।
পরে আখতার হোসেন বাধ্য হয়ে প্রতিবেশী এক নার্সের সহযোগিতায় প্রায় ২০ হাজার টাকা দিয়ে একটি অক্সিজেন বটল কিনে বাড়িতে নিয়ে গিয়ে স্ত্রীকে দিতে শুরু করেন। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা না পেয়ে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে স্বামী-সন্তান ও প্রিয়জনদের ছেড়ে পরপারে পাড়ি জমান আখতার হোসেনের স্ত্রী।
শনিবার আখতার হোসেন কান্নাজড়িত কণ্ঠে এ প্রতিবেদককে বলেন, আমরা বড় অসহায়। জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আমরা যদি স্বাস্থ্যসেবা না পাই, তবে এই শহরে এত উন্নত হসপিটালগুলো দিয়ে কী হবে?
তিনি এ বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে কঠোর পদক্ষেপের দাবি জানান।