কাজির বাজার ডেস্ক
চার দিন আগে শুরু হয়েছে হজযাত্রা। প্রতিদিনই যাচ্ছে একের পর এক ফ্লাইট। তবু গত রবিবার রাত ৯টা পর্যন্ত নিবন্ধিত ১১ হাজার জনের বেশি হজযাত্রীর আবেদন বাকি ছিল। সেই সঙ্গে সৌদিকে দেওয়া বাংলাদেশের ধর্ম মন্ত্রণালয়ের চিঠির কোনো উত্তর আসেনি। ফলে মোট নিবন্ধনকারীর ১৩ শতাংশের বেশি হজযাত্রী আদৌ হজ করতে পারবেন কি না তা নিয়ে শঙ্কা রয়ে গেছে।
তবে হজ অ্যাজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) সূত্র জানায়, বেঁধে দেওয়া সময় শেষ হলেও ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া চলমান রেখেছে সৌদি সরকার। ফলে দ্রæতই শেষ করা যাবে বাকিদের আবেদন।
হাব সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম বলেন, ‘বেঁধে দেওয়া সময়ের পরও ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া চলমান রেখেছে সৌদি সরকার। ফলে আমরা আবেদন কার্যক্রমও চলমান রেখেছি। আর এখন পর্যন্ত ১১ হাজারের কিছু বেশি আবেদন বাকি আছে। যা আমরা খুব দ্রæতই শেষ করে ফেলতে পারব বলে আশা করছি।
তবে রবিবার ভোর ২টা ৫৯ মিনিটে হজ ব্যবস্থাপনা পোর্টালের আইটি হেল্পডেস্কের প্রকাশিত প্রতিদিনের বুলেটিনের তথ্য অনুযায়ী ওই সময় পর্যন্ত নিবন্ধিত ৮৫ হাজার ২৬২ জনের মধ্যে হজভিসার আবেদন করেছেন ৬৫ হাজার ২৫১ জন। অর্থাৎ এখনো হজভিসার আবেদন করতে বাকি আছেন ২০ হাজার ১১ জন।
সেখানে আরও বলা হয়েছে, সরকারি ব্যবস্থাপনার হজযাত্রীর ভিসা হয়েছে ৯২ শতাংশ এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনার হজযাত্রীদের মধ্যে এ সংখ্যা ৭৬ শতাংশ। সেক্ষেত্রে বেসরকারি ব্যবস্থাপনার ২৪ শতাংশের হজভিসা আবেদন এখনো সম্পন্ন হয়নি। আইটি হেল্পডেস্কের বুলেটিন অনুযায়ী রবিবার ভোররাত পর্যন্ত সৌদি পৌঁছেছেন ৯ হাজার ৪৩৪ জন হজযাত্রী। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় আছেন ৩ হাজার ৭৪৭ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় আছেন ৫ হাজার ৭৩৭ জন।
ভিসা আবেদনের ধীরগতিতে পরবর্তী সময়ে হজযাত্রীদের ব্যবস্থাপনায় কোনো প্রভাব পড়বে কি না জানতে চাইলে হজ অফিসের পরিচালক মুহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, ‘আমরা আশা করছি তেমন কোনো প্রভাব পড়বে না। কারণ ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া যেমন চলমান আছে তেমন ভিসা পাওয়াও চলমান রয়েছে। ফলে ধাপে ধাপে হজযাত্রীরা সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনায়ই সৌদি যেতে পারছেন।’
এখন ঘরে বসেই হজযাত্রীরা পাবেন প্রাক-নিবন্ধন রিফান্ডের টাকা। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্ভাবন ও সেবা সহজীকরণ কার্যক্রমের আওতায় স্মার্ট করা হয়েছে হজযাত্রীদের প্রাক-নিবন্ধন রিফান্ড প্রক্রিয়া।
প্রাক-নিবন্ধন বাতিলের জন্য আর যেতে হবে না হজ নিবন্ধন কেন্দ্রে। এখন ঘরে বসেই ই-হজবিডি (ব-ঐধলল ইউ) মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে বাতিল করা যাবে প্রাক-নিবন্ধন। নতুন এই প্রক্রিয়ায় নির্দিষ্ট অ্যাপ ব্যবহার করে প্রাক-নিবন্ধিত হজযাত্রী তার নিবন্ধন বাতিলের আবেদন করতে পারবেন। রিফান্ড আবেদন করলে সেটা স্বয়ংক্রিয়ভাবে পৌঁছে যাবে ঢাকা হজ অফিসের পরিচালকের দপ্তরে। এই অফিসের পরিচালক ও ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের পর আবেদনকারীর ব্যাংক হিসাবে জমা হবে রিফান্ডের টাকা।
আগে রিফান্ডের টাকা পেতে যেখানে চার কর্মদিবস সময় লাগত এখন সেটা ১ বা ২ কর্মদিবসে সম্ভব হবে। আগে হজে যাওয়ার জন্য প্রাক-নিবন্ধন সম্পন্নকারী হজযাত্রী কোনো কারণে তার নিবন্ধন বাতিল করতে চাইলে তাকে যেতে হতো হজ নিবন্ধন কেন্দ্রে। রবিবার দুপুরে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ই-হজ বিডি মোবাইল অ্যাপে সরকারি মাধ্যমের হজযাত্রীদের প্রাক-নিবন্ধন রিফান্ড সেবার উদ্বোধন করেন ধর্মমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান।
এ সময় তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনের উদ্দেশ্য ছিল জনগণের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছে দেওয়া। সে লক্ষ্যে হজ ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমকে আমরা ইতোমধ্যেই ডিজিটালাইজড করেছি। এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে এবার যুক্ত হলো সরকারি মাধ্যমের হজযাত্রীদের স্মার্ট প্রাক-নিবন্ধন রিফান্ড। এই সেবা হজযাত্রীদের সময়, অর্থ ও ভ্রমণ সাশ্রয় করবে।
ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মু. আ. হামিদ জমাদ্দারের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে হজ অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. মতিউল ইসলাম, বাজেট ও অনুদান অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. ফজলুর রহমান, ওয়াকফ প্রশাসক আবু সালেহ মো. মহিউদ্দিন খাঁ, হজ অনুবিভাগের যুগ্ম সচিব ড. মো. মঞ্জরুল হক, হাবের সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম ও অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
