আগাম নির্বাচনের প্রস্তাবও আটকে দিলেন ব্রিটিশ এমপিরা

16

কাজিরবাজার ডেস্ক :
ব্রিটিশ পার্লামেন্টের ভোটাভুটিতে টানা দ্বিতীয় দফা হারতে হলো প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনকে, তার আগাম নির্বাচনের প্রস্তাবও আটকে দিলেন এমপিরা। জনসন চাইছেন, বাণিজ্য ও সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে কোন সমঝোতায় পৌঁছানো না গেলেও ৩১ অক্টোবর নির্ধারিত তারিখে কোন চুক্তি ছাড়াই ২৮ জাতির এই জোট থেকে বেরিয়ে যাক ব্রিটেন। এটাকে বলা হচ্ছে ‘নো-ডিল ব্রেক্সিট’।
এর বিরোধিতায় মঙ্গলবার পার্লামেন্টে একটি প্রস্তাব তোলে বিরোধী দল, যাতে ব্রেক্সিট আরও পিছিয়ে দিয়ে যুক্তরাজ্যের স্বার্থ রক্ষা করে একটি বিচ্ছেদ চুক্তি চূড়ান্ত করার সময় পাওয়া যায়। ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির ২১ জন এমপি তাতে সমর্থন দিলে হাউস অব কমন্সের ভোটাভুটিতে প্রথম দফা হারতে হয় জনসনকে। বিরোধী এমপিদের ওই বিল ব্রেক্সিট আলোচনার নিয়ন্ত্রণ ইউরোপীয় ইউনিয়নের হাতে তুলে দেবে- এমন যুক্তি দেখিয়ে প্রয়োজনে আগাম নির্বাচন ডাকার হুমকি দিয়ে আসছিলেন প্রধানমন্ত্রী জনসন। কিন্তু বুধবার হাউস অব কমন্সে তিনি ১৫ অক্টোবর সাধারণ নির্বাচনের প্রস্তাব তুললে সেটাও নাকচ হয়ে যায়। ২০১১ সালের একটি আইনে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের মেয়াদ পাঁচ বছর নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। ওই মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে নির্বাচন দিতে গেলে ৬৫০ সদস্যের পার্লামেন্টের দুই-তৃতীয়াংশের সমর্থন প্রয়োজন বরিস জনসনের। সেজন্য তার বিরোধী দলে লেবার পার্টির সমর্থন দরকার ছিল। কিন্তু লেবার নেতা জেরেমি করবিন সাফ জানিয়ে দেন, ‘নো-ডিল ব্রেক্সিট’ ঠেকানোর বিল পাস হলেই তার দল আগাম নির্বাচনে সমর্থন দেবে, তার আগে না। প্রধানমন্ত্রী জনসন ব্রিটেনকে ‘নো-ডিল’ ব্রেক্সিটে বাধ্য করতে খামখেয়ালির খেলায় মেতেছেন বলেও অভিযোগ করেন করবিন। স্কটিশ ন্যাশনালিস্ট পার্টি এবং লিবারেল ডেমোক্রেটরাও জনসনের আগাম নির্বাচনের প্রস্তাবকে ‘নো-ডিল ব্রেক্সিট বাস্তবায়নের ষড়যন্ত্র’ আখ্যায়িত করে। প্রধান বিরোধী দল লেবার পার্টির অধিকাংশ এমপির পাশাপাশি স্কটিশ ন্যাশনালিস্ট পার্টির এমপিরা জনসনের প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটি থেকে বিরত থাকে। শেষ পর্যন্ত দেখা যায়, আগাম নির্বাচনের প্রস্তাবের পক্ষে ভোট পড়েছে ২৯৮। আর বিপক্ষে পড়েছে ৫৬। দুই- তৃতীয়াংশের সমর্থন পাওয়ার জন্য আরও ১৩৬ ভোট দরকার ছিল জনসনের। এই হারের পর লেবার নেতার সমালোচনায় জনসন বলেন, যুক্তরাজ্যের গণতন্ত্রের ইতিহাসে করবিনই হলেন প্রথম বিরোধীদলীয় নেতা যিনি একটি নির্বাচনের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলেন।
মন্ত্রিত্ব ছাড়ছেন প্রধানমন্ত্রীর ভাই : ব্রেক্সিট ইস্যুতে পার্লামেন্টের নিয়ন্ত্রণ হারানোর পর এবার পারিবারিক সঙ্কটেও পড়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। বৃহস্পতিবার তার ছোট ভাই জো জনসন সংসদ সদস্য ও মন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। জো বলেছেন, পারিবারিক আনুগত্য ও জাতীয় স্বার্থের সংঘাতের কারণেই তিনি পদত্যাগ করেছেন।