সোয়েব বাসিত :
সিলেট নগরীতে ছোট ছোট শিশুদের দিয়ে বেলুন বিক্রির আড়ালে চলছে মাদক ও ভিক্ষাবৃত্তি। নগরীর গুরুত্বপূর্ণ দুটি বাণিজ্যিক এলাকা ও একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক কেন্দ্র করে প্রায় দেড় শতাধিক শিশু কিশোরদের নিয়ে গড়ে উঠেছে এ চক্রটি। অনুসন্ধানে দেখা গেছে নিজ সন্তানকে বেলুন বিক্রির নামে সড়কে নামিয়ে মায়েরা নিজেরাই সেই সন্তানকে দিয়ে মাদক বিক্রি করাচ্ছেন নয়তো ভিক্ষার থলি হাতে ধরিয়ে দিয়ে নিজেরা প্রতিদিন বসে বসে আয় করে নিচ্ছেন ৫০০ থেকে এক ১০০০ হাজার টাকা। নগরীর জিন্দাবাজার ও জল্লারপার এই দুটি বাণিজ্যিক এলাকাকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে বেলুন বিক্রির সবচেয়ে বড় চক্রটি। যারা শুধু বেলুন বিক্রিই নয় এর আড়ালে ছিচকে চুরি ছিনতাই ভিক্ষাবৃত্তি মাদক বিক্রি এমনকি নিজেরাও ডেন্ডি ও গাঁজা সহ নানা মাদক সেবনের পাশাপাশি জড়িয়ে পড়ছে নানা অপরাধ মূলক কর্মকান্ডে। জিন্দাবাজার ও জল্লারপার ছাড়াও বেলুন বিক্রির ২০/২৫ জনের আরেকটি চক্র নগরীর আরেক অভিজাত বাণিজ্যিক এলাকা নয়াসড়ককে কেন্দ্র করে চক্র করে গড়ে উঠেছে। দেখা গেছে যেখানে ছোট শিশুদের চাইতে কিশোর কিশোরীদের সংখ্যা তুলনামূলক বেশি। এছাড়া নগরীর জিন্দবাজার থেকে চৌহাট্টাগামি সড়কে উঠতি বয়সি কিশোর কিশোর একটি চক্র রয়েছে যারা শুধু বেলুন বিক্রিই নয় এরা জিন্দাবাজার জল্লারপার নয়াসড়ক এলাকার পুরো চক্রটি কেউ নিয়ন্ত্রণ করে। বেলুন বিক্রি করে এমন বেশ কিছু শিশু ও কিশোর কিশোরীদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে ফারহানা ও চুমকি নামে দুই কিশোরী নিয়ন্ত্রণ করে পুরো এলাকা। যারা নিজেরাও নিয়মিত ডেন্ডি সেবন করে পাশাপাশি নগরীর কাস্টঘর সহ কয়েকটি এলাকা থেকে গাঁজা ও ইয়াবা সহ নানা ধরনের মাদক সংগ্রহ করে এই চক্রের শিশু কিশোরদের দিয়ে এ সব এলকায় বিক্রি করিয়ে থাকে। ফারহানা ও চুমকির সাথে আলাল হাসান কামাল জুয়েল সহ আরও কিছু কিশোর রয়েছে যারা এদের সহযোগি হিসাবে কাজ করে। চুমকি ও ফারহানার মধ্যে এক সময় গভীর সখ্যতা থাকলে ইদানিং সেটি আর নেই আর আর পেছনেও রয়েছে নিজেদের ভাগ বাটোয়ারার হিসাব। চৌহাট্টা এলাকার একাধিক ব্যবসায়ি জানিয়েছেন এসব কিশোর কিশোরীরা প্রায়ই টাকার ভাগবাটোয়ারা কিংবা মাদক নিয়ে নিজেদের মধ্যে মারামারি করে থাকে এমনকি এরা একেবারে প্রকাশ্যে ডেন্ডি সেবন করলেও পুলিশ কিংবা অন্য কোনো আইন শৃংখলা বাহিনীর লোকজনকে এদের কিছু বলতে দেখা যায় না। অনুসন্ধানে দেখা নগরীর জিন্দাবাজার থেকে জল্লারপার এলকায় যে সব শিশুদের দিয়ে তাদের মায়েরা বেলুন বিক্রি কিংবা ভিক্ষাবৃত্তি করায় সে সব মায়েরা জল্লারপার সিটি করপোরেশনের ওয়াক ওয়েতে প্রবেশের বাম দিকে বসে দুপর বেলা এক সাথে খাওয়া দাওয়া করতে দেখা যায়। অনুসন্ধানে আরও দেখা গেছে শিশুরা বেলুন বিক্রি কিংবা ভিক্ষা করে পাওয়া টাকা ঘন্টা দু’ ঘন্টা পরপর তাদের মায়েদের কাছে জমা দিয়ে আবার রাস্তায় নেমে পড়ে। ৮/১০ বছরের নয়ন নামের এক শিশু জানালো তার মা বলে দিয়েছে যদি কোনো গাড়িতে মহিলা যাত্রী থাকে এবং তিনি যদি বেলুন না নিতে চান তাহলে সে যেনো সেই গাড়িতে বেলুন ছুঁড়ে দিয়ে টাকার জন্য গাড়ির পেছনে পেছনে দৌড়াতে থাকে। তখন নাকি গাড়ির যাত্রী বাধ্য হয়েই টাকা দেবে। নয়ন জানালো সে শুধু বেলুন নয় মাঝে মাঝে ভিক্ষা ও করে। নয়ন বললো” মা যেইটা কয় হেইটাই করি, তয় বেলুন হক্কলে নিবার চায় না, হের লাইয়া ভিক্ষায় লাভ বেশি”