কাজিরবাজার ডেস্ক :
২০২৩ শিক্ষাবর্ষের জন্য প্রথম থেকে নবম শ্রেণিতে ভর্তির আবেদন শুরু হয়েছে। ১৬ নভেম্বর বেলা ১১টা থেকে অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন শুরু হয়। এরপর আটদিনে অর্থাৎ বুধবার (২৩ নভেম্বর) পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারি স্কুলে ভর্তিতে আবেদন জমা পড়েছে দুই লাখ ৭৯ হাজার ৪১৮টি।
বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) থেকে জানা গেছে এ তথ্য। মাউশি থেকে জানা গেছে, সারাদেশে ৫৫০টি সরকারি বিদ্যালয়ে বুধবার পর্যন্ত দুই লাখ ১২ হাজার ৮২টি আবেদন জমা হয়েছে। একই সময় পর্যন্ত দুই হাজার ৮৫২টি বেসরকারি বিদ্যালয়ে আবেদন জমা পড়েছে ৬৭ হাজার ৩৩৬টি।
এবার ৫৫০টি সরকারি বিদ্যালয়ে প্রথম থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত এক লাখ সাত হাজার ৮৯টি আসনে ছাত্রছাত্রী ভর্তি নেওয়া হবে। আর দুই হাজার ৮৫২টি বেসরকারি বিদ্যালয়ে ভর্তি নেওয়া হবে ৯ লাখ ২৫ হাজার ৬৬টি আসনে।
নতুন নীতিমালা অনুযায়ী, এবারও প্রথম শ্রেণিতে ভর্তির জন্য একজন শিক্ষার্থীর বয়স ন্যূনতম ছয় বছরের বেশি হতে হবে। প্রথম শ্রেণিতে ছয় বছরের বেশি ধরে অন্যান্য শ্রেণিতে ভর্তির বয়স নির্ধারিত হবে। যেমন ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তির জন্য একজন শিক্ষার্থীর বয়স প্রথম শ্রেণির বয়স হিসেবে আনতে হবে। তবে শিক্ষার্থীর বয়সের ঊর্ধ্বসীমা সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নির্ধারণ করবে বলেও নীতিমালায় জানানো হয়েছে। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থীর ভর্তির সর্বোচ্চ বয়স নির্ধারণ করবে।
৬ ডিসেম্বর বিকেল ৫টা পর্যন্ত অনলাইনে আবেদন জমা দেওয়া যাবে। আবেদন প্রক্রিয়া শেষে লটারির মাধ্যমে নির্বাচন করা হবে শিক্ষার্থী। ১০ ডিসেম্বর সরকারি স্কুলগুলোতে ভর্তির লটারি হবে। আর বেসরকারি স্কুলগুলোর ভর্তির লটারি হবে ১৩ ডিসেম্বর। ২৮ ডিসেম্বরের মধ্যে ভর্তির সব কাজ শেষ করা হবে। মহানগর ও জেলা সদর উপজেলার বেসরকারি স্কুলগুলো কেন্দ্রীয় লটারির আওতায় আসবে। তবে যেসব বেসরকারি স্কুল কেন্দ্রীয়ভাবে অনুষ্ঠিত লটারিতে অংশ নেবে না তাদেরও শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদিত কমিটির মাধ্যমে লটারি করতে হবে।
মাউশির উপ-পরিচালক (বিদ্যালয়) মোহাম্মদ বেলাল হোসেন বলেন, অনলাইন ভর্তির কারণে অভিভাবক-শিক্ষার্থীদের কষ্ট কমে গেছে। ভর্তির জন্য প্রভাব বা তদবির বন্ধ হয়েছে। টেলিটকের মাধ্যমে এ ভর্তির সব কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।
আবেদন বিষয়ে তিনি বলেন, এবার সরকারি স্কুলে ভর্তির আবেদন স্বাভাবিক থাকলেও বেসরকারিতে ভর্তির জন্য তুলনামূলক কম আবেদন এসেছে। করোনার কারণে অনেক শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হওয়ার সংবাদ পাওয়া যাচ্ছে। অনেকে আবার স্কুল পরিবর্তন করতে আগ্রহী না হওয়ায় আবেদন সংখ্যা কমতে পারে।
এবার বিগত বছরের মতো বেসরকারি স্কুলে ভর্তির আবেদন ফি ২০০ টাকা এবং সরকারি স্কুলে ১৭০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি বাড়ানো হচ্ছে না। এছাড়া ভর্তি নীতিমালার অন্যান্য বিষয় আগের মতোই থাকছে। আগের মতোই থাকছে ভর্তি ফি। সে অনুযায়ী, রাজধানীর এমপিওভুক্ত স্কুলে এবারের ভর্তি ফি পাঁচ হাজার টাকা, নন-এমপিওতে সর্বোচ্চ আট হাজার এবং ইংরেজি মাধ্যমের স্কুলে ১০ হাজার টাকা নেওয়া যাবে। অন্যান্য মেট্রোপলিটন শহরে তিন হাজার টাকার বেশি নেওয়া যাবে না।
ভর্তির আবেদন করার ক্ষেত্রে বিজ্ঞপ্তিতে কয়েকটি শর্তের কথা বলা হয়েছে। সরকারি বিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে ঢাকা মহানগরীর সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলো তিনটি ভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত থাকবে। আবেদনের সময় একজন শিক্ষার্থী একটি গ্রুপের পাঁচটি বিদ্যালয় নির্বাচন করতে পারবে। সেখান থেকে লটারির মাধ্যমে একটি বিদ্যালয় নির্বাচন করা হবে।
ডাবল শিফটের প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে উভয় শিফট পছন্দ করলে দুটি পছন্দক্রম সম্পন্ন হয়েছে বলে বিবেচিত হবে। একই পছন্দক্রমের বিদ্যালয় কিংবা শিফট দ্বিতীয় বার পছন্দ করা যাবে না।
অন্যদিকে বেসরকারি বিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে ঢাকা মহানগরীর বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠান সংলগ্ন কমপক্ষে একটি এবং সর্বোচ্চ তিনটি প্রশাসনিক থানা ক্যাচমেন্ট এরিয়া হিসেবে নির্ধারণ করা যাবে।
আবেদনকারীরা আবেদনের সময় প্রতিষ্ঠান নির্বাচনে মহানগর পর্যায়ের জন্য বিভাগীয় সদরের মেট্রোপলিটন এলাকা এবং জেলা সদরের সদর উপজেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তালিকা পাবে। এক্ষেত্রে প্রার্থীরা প্রাপ্যতার ভিত্তিতে প্রতিটি আবেদনে সর্বোচ্চ পাঁচটি বিদ্যালয় পছন্দের ক্রমানুসারে নির্বাচন করতে পারবে।
এদিকে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তথ্য প্রদান করতে না পারায় সরকারি দুটি ও ৫০টি বেসরকারি স্কুলে আবেদন করা সম্ভব হচ্ছে না। তাদের ভর্তির সময় নিয়ম মেনে নির্ধারিত অর্থে ভর্তির ফরম বিক্রি করে এ কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। তবে ২৮ ডিসেম্বরের মধ্যে ভর্তির সব কাজ শেষ করতে নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।