গত বৃহস্পতিবার থেকে সারা দেশে ওএমএস ও খাদ্যবান্ধব এবং টিসিবির কার্ডহোল্ডারদের মধ্যে ন্যায্য মূল্যে চাল বিক্রি কার্যক্রম শুরু হয়েছে। সরকার নির্ধারিত ৫০ লাখ ১০ হাজার ৫০৯টি পরিবারের সদস্য এই কর্মসূচির আওতায় প্রতি মাসে এক দফায় ১৫ টাকা দরে ৩০ কেজি চাল কিনতে পারবেন। খোলাবাজারে (ওএমএস) ৩০ টাকা কেজি দরে সর্বোচ্চ পাঁচ কেজি চাল কেনা যাচ্ছে দুই হাজার ৩৬৩টি কেন্দ্রের মাধ্যমে। আর টিসিবির কার্ডধারী এক কোটি পরিবার একই দরে পাক্ষিক ভিত্তিতে পাঁচ কেজি করে মাসে মোট ১০ কেজি চাল ওএমএস ডিলারের কাছ থেকে কেনার সুযোগ পাবেন।
লাগামহীন বাজারের কারণে জনজীবনে রীতিমতো নাভিশ্বাস উঠে গেছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের সঙ্গে সাধারণ মানুষ কিছুতেই তাল মেলাতে পারছে না। দফায় দফায় জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে। বাজারে পণ্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখার কৌশল হিসেবে সরকার টিসিবিকে আরো কার্যকর করতে পারত। কিন্তু সেভাবে টিসিবিকে একটি কার্যকর বিকল্প বাজারব্যবস্থা হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব হয়নি। অভিযোগ আছে, টিসিবিকে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে দেওয়ার কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। বাজারে যখন নিত্যপণ্যের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যায় তখন ভোক্তারা একটি বিকল্প খোঁজে, যেখানে ন্যায্য মূল্যে মানসম্মত পণ্য পাওয়া যাবে। ভোক্তাদের এই চাহিদার বিষয়টি বিবেচনায় রেখে টিসিবির কার্যক্রম সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে পারলে সাধারণ ভোক্তাদের কিছুটা হলেও স্বস্তির জায়গা তৈরি হতো।
স্বাধীনতার অব্যবহিত পরে দেশে টিসিবির পাশাপাশি কসকর ও রেশন ব্যবস্থা চালু ছিল। এখন রেশনব্যবস্থাও নেই, কসকরও নেই।
আমরা একটি স্থিতিশীল বাজারব্যবস্থা চাই। এ ক্ষেত্রে সরকারের দৃঢ় পদক্ষেপ প্রয়োজন বলে আমরা মনে করি। একটি বিকল্প বাজার ব্যবস্থা গড়ে তোলা গেলে বাজার সিন্ডিকেট প্রভাব বিস্তার করতে পারত না। পণ্যমূল্য স্থিতিশীল থাকত। ন্যায্য মূল্যে পণ্য বিক্রির ব্যবস্থা করা গেলে ভোক্তাদের মধ্যেও আস্থা সৃষ্টি হতো। সে ক্ষেত্রে সবার আগে টিসিবির নাম আসে। সেই টিসিবি তাদের পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। সাধারণ মানুষ তাহলে যাবে কোথায়?
সরবরাহ ও চাহিদার ভারসাম্য সৃষ্টি করে দ্রব্যমূল্য কমানো হবে এবং স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা করার অংশ হিসেবে টিসিবিকে কার্যকর করতে হবে। বাজার মনিটরিং জোরদার করতে হবে।