কাজিরবাজার ডেস্ক :
অতিমারী করোনা নিয়ন্ত্রণে চলে আসায় আগামী ঈদুল ফিতরে ঘরমুখী মানুষের সংখ্যা বাড়বে। ঈদে বড় ছুটি এবং জনজীবন স্বাভাবিক হওয়ায় সবাই চাইবে প্রিয়জনের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করতে। গত বছর করোনাকালে কোটির ওপর মানুষ ঢাকা ছাড়লেও এবার সংখ্যা বাড়বে অনেক। শেকড়ের সন্ধানে গ্রামে ছুটে চলা মানুষের চাপ বাড়বে সড়ক, নৌ ও রেলপথের ওপর। সরকার মানুষের বাড়ি ফেরা নির্বিঘ্ন রাখার চেষ্টা করলেও একসঙ্গে মানুষের ঢলে যাত্রা অবশেষে ভোগান্তিতে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
মহাসড়কগুলোতে ফোরলেনের নির্মাণ কাজ অব্যাহত থাকা, নদীপথে যাত্রার ক্ষেত্রে নদীর নাব্য কমে যাওয়া, ফেরি সঙ্কট এবং রেলপথে সিডিউল বিপর্যয়ে মানুষ ভোগান্তিতে পড়তে পারে। হঠাৎ ঝড়-বৃষ্টিতে সড়ক ও নৌপথে চলাচল বাধাগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। একইসঙ্গে সড়কের নির্মাণ কাজকে পিছিয়ে দিতে পারে। সবমিলে আগামী ঈদযাত্রায় মানুষের আনন্দ বিষাদে পরিণত হতে পারে।
গত বছরে করোনার উচ্চ সংক্রমণের মধ্যেও ঈদের সময় রাজধানী ঢাকা ছেড়েছিল ১ কোটি ৬ লাখ ৪৫ হাজার ৬৯৭ মানুষ। ঢাকা ছেড়ে যাওয়া এবং ফিরে আসা মানুষের মোবাইলের সিমের ভিত্তিতে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় প্রতিবছরই ঢাকার বাইরে যাওয়া মানুষের তথ্য প্রকাশ করে থাকে। গত দুই বছরে ঈদে সময় করোনা প্রতিরোধে মানুষের চলাচলের ওপর কঠোর বিধিনিষেধ জারি ছিল। সরকারের কঠোর নজরদারি এবং হুঁশিয়ারির পরও কোটির বেশি মানুষ গ্রামে যায়। এবার সব ধরনের যানবাহনই চালু থাকবে। গণপরিবহন, ব্যক্তিগত গাড়ি, ট্রাকসহ মোটরসাইকেলে মানুষের যাতায়াতের সুযোগ থাকায় সব কিছুর ওপরই চাপ থাকবে। তাই সড়ক, নৌ ও রেলপথে সবক্ষেত্রেই অতিরিক্ত মানুষের চাপে সর্বক্ষেত্রেই বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা রয়েছে।
সরকার আশস্ত করেছে ঈদ যাত্রায় কোন ভোগান্তি হবে না। ইতোমধ্যে সড়ক, রেল ও নৌপথে যাত্রী পরিবহনের সব প্রস্তুতি নিচ্ছে। জনজীবন স্বাভাবিক হওয়ায় ঈদের যাত্রাপথ যেন সচল থাকে এবং কোন ধরনের ভোগান্তি না হয়, সে জন্য প্রস্তুতিরও কমতি নেই।
ঈদ ও বর্ষা সামনে রেখে সারাদেশের ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক ও মহাসড়কগুলো দ্রুত মেরামত করে যান চলাচলের জন্য সচল রাখার নির্দেশ দিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। দ্রুত সময়ের মধ্যে সড়কগুলোকে যত্নসহকারে মেরামতের সঙ্গে যানজট রোধে কঠোর মনিটরিংয়ের ওপর জোর দেন তিনি। সড়ক ও জনপদ অধিদফতর ঈদে সড়কে যেন নির্বিঘ্ন যানবাহন চলাচলে সর্বোচ্চ ২০ এপ্রিল পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছেন।
অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, আগামী ২০ এপ্রিলের মধ্যে মহাসড়কগুলোর খানাখন্দ ভরাট করে যান চলাচলের উপযোগী করা হবে। শুরুতে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয়া হয়েছিল। পরবর্তীতে তা ৫ দিন বাড়ানো হয়েছে। উত্তরাঞ্চলের যাত্রীদের জন্য ঢাকা-টাঙ্গাইল-এলেঙ্গা-রংপুর মহাসড়ক নিয়ে বড় প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। জনগণের স্রোত সামলাতে মহাসড়কের নির্মাণাধীন ব্রিজ, আন্ডারপাস খুলে দেয়ার চিন্তাভাবনা হচ্ছে। সিরাজগঞ্জের নতুন নকলা ব্রিজ ঈদের আগেই খুলে দেয়া হবে।
যাত্রীদের ভোগান্তি কমাতে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় রবিবার বৈঠক করে লঞ্চের টিকিট কাটতে জাতীয় পরিচয়পত্র বাধ্যতামূলক করে। বৈঠক শেষে নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলে দিয়েছেন, ঈদে নৌ-চলাচল নিরাপদ রাখতে লঞ্চযাত্রীদের জাতীয় পরিচয়পত্র বা এনআইডি কার্ড সঙ্গে রাখতে হবে। ঈদ থেকেই এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে। এনআইডি ছাড়া কাউকে লঞ্চের টিকিটও দেয়া হবে না।
নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় বলেছে, ভিড় কমাতে আগামী ঈদে ৫১টি ফেরি চলাচল করবে। ঈদের আগে রাতের বেলায় স্পিডবোট এবং বালুবাহী বাল্কহেড চলাচল বন্ধ থাকবে। ঈদের আগে পাঁচদিন এবং ঈদের পরের পাঁচদিন দিনের বেলায়ও বালুবাহী বাল্কহেড চলবে না। ঈদের আগে তিনদিন ও ঈদের পরে তিনদিন নিত্যপ্রয়োজনীয় ও দ্রুত পচনশীল পণ্যবাহী ট্রাক ছাড়া সাধারণ ট্রাক ও কাভার্ডভ্যানের ফেরি পারাপার বন্ধ থাকবে। কোন ক্রমেই লঞ্চের যাত্রী ও মালামাল পরিমাণের চেয়ে বেশি নেয়া যাবে না। লঞ্চের অনুমোদিত ভাড়ার চেয়ে বেশি ভাড়া আদায় করা যাবে না। কিন্তু কে দেখবে এসব?
বেশি ট্রেন চলবে : যাত্রীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে এবারও নিয়মিত ট্রেনের বাইরে ঈদ স্পেশাল নামের বিশেষ ট্রেন চালানোর কথা ভাবছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। এবার ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ৬ থেকে ৭ জোড়া বিশেষ ট্রেন পরিচালনা করা হবে। বর্তমানে ২০১টি ইঞ্জিন বিভিন্ন ট্রেনের সঙ্গে চলাচল করছে। ঈদের সময় আরও ১৮টি ইঞ্জিন দিতে পারবে লোকোমোটিভ বিভাগ। সেই হিসাবে মোট ২১৮টি ইঞ্জিন প্রস্তুত থাকবে। বর্তমানে সব মিলে মোট ৩৫১টি ট্রেন বিভিন্ন গন্তব্যে চলাচল করছে। ঈদের সময় এই ট্রেনের সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে।
রেলওয়ের বর্তমানের নিয়ম অনুযায়ী যাত্রার পাঁচদিন আগে অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু করা হবে। সেই হিসাবে রেলের পরিকল্পনা অনুযায়ী ২৩ এপ্রিল থেকে অগ্রিম টিকিট দেয়া শুরু হতে পারে। রেলের খসড়া একটি প্রস্তাব অনুযায়ী, ২৩ এপ্রিল দেয়া হতে পারে ২৭ এপ্রিলের অগ্রিম টিকিট। ২৪ এপ্রিল দেয়া হতে পারে ২৮ এপ্রিলের টিকিট। ২৫ এপ্রিল দেয়া হতে পারে ২৯ এপ্রিলের টিকিট। ২৬ এপ্রিল দেয়া হবে ৩০ এপ্রিলের টিকিট। ২৭ এপ্রিল দেয়া হতে পারে ১ মের অগ্রিম টিকিট। আগামী ২ মে ঈদুল ফিতর ধরে এই হিসাব করা হয়েছে। যদি ট্রেনের অগ্রিম টিকিট ১০ দিন আগে থেকে দেয়া হয়। সেক্ষেত্রে ১৮ এপ্রিল থেকে অগ্রিম টিকিট দেয়া শুরু হতে পারে।
চার মহাসড়কেই যানজটের আশঙ্কা : দেশের চার মহাসড়কের মধ্যে ঢাকা-ময়মনসিংহ ও ঢাকা-রংপুর মহাসড়কে যানজটের আশঙ্কা বেশি। ঢাকা-চট্টগ্রাম এবং ঢাকা-সিলেট মহাসড়কেও যানবাহনের যানজট তৈরির আশঙ্কা করছেন চালক ও যাত্রীরা।
সড়কে নির্মাণ কাজের জন্য ঢাকা-রংপুর ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে বড় ধরনের যানজটের আশঙ্কা রয়েছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে কুমিল্লার দাউদকান্দি অংশেও সংস্কারকাজ চলছে। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে নির্মাণ কাজ না চললেও যানবাহনের অবৈধ স্ট্যান্ড দুর্ভোগের কারণ হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
উত্তরাঞ্চলের যাত্রীদের সড়কপথে বাড়ি যেতে নবীনগর পার হতেই যানজটে ভুগতে হয়। চন্দ্রা-টাঙ্গাইল হয়ে মহাসড়কটিতে সবচেয়ে বেশি গাড়ির চাপ পড়ে বঙ্গবন্ধু সেতুতে। সেতুটি দুই লেনের হওয়ায় অতিরিক্ত গাড়ির চাপে প্রায় সময়ই যানজট লেগেই থাকে।
ঈদে তা আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। সেতু পার হয়ে নলকা ব্রিজ পর্যন্ত ফোর লেনের নির্মাণ কাজ এগিয়ে চলছে। নলকা ব্রিজের কাজের কারণে দুই পাশেই শতশত গাড়ির চাপ থাকে। আগামীতে নলকা ব্রিজ ও বঙ্গবন্ধু সেতুকেন্দ্রিক বড় ধরনের জ্যামের আশঙ্কা রয়েছে। স্বাভাবিক অবস্থায় প্রতিদিন ১২ থেকে ১৩ হাজার যানবাহন সেতু পার হয়। ঈদযাত্রায় তা ৩০ থেকে ৩২ হাজারে উন্নীত হয়। এবারও তার ব্যতিক্রম হবে না।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার চার লেনের সংস্কার কাজের কারণে দুই-তিন কিলোমিটার এলাকায় যানজট লাগছে। আর এ যানজট গিয়ে ঠেকছে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ পর্যন্ত ৫০ কিলোমিটার সড়কজুড়ে। ঢাকা-ময়মনসিংহ রোডের টঙ্গীর পর থেকেই রাস্তায় খানা-খন্দে ভর্তি। ঢাকা ছেড়ে যাওয়া যাত্রীরা টঙ্গী থেকেই দুর্ভোগে পড়ে থাকেন। উন্নয়ন কাজ চলায় এখনই রাস্তায় প্রতিদিনই হাজার হাজার গাড়ি জ্যামে পড়ে থাকে। গাজীপুর চৌরাস্তা পর্যন্ত রাস্তার ভোগান্তি নিয়মিত ব্যাপারে পরিণত হয়েছে। ঈদে আরও বাড়বে।
ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে রাস্তায় বড় কোন সমস্যা না থাকলেও সোনারগাঁওয়ের কাঁচপুর থেকে ভুলতা পর্যন্ত অবৈধ লেগুনা স্ট্যান্ডের কারণে ভোগান্তি বাড়বে। শ্যামবাজার বাসস্ট্যান্ড ও তারাব চৌরাস্তায় মহাসড়কে লেগুনা স্ট্যান্ডে যাত্রী ওঠানামার কারণে যানজট হয়ে থাকে। রুপসী মোড় ও ভুলতা উড়াল সড়কের নিচে রিক্সা, ইজিবাইক, সিএনজিচালিত অটোরিক্সা ও লেগুনার দখলে থাকায় মহাসড়কে জট বাড়বে।
দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যাত্রীদের বড় সমস্যা পদ্মা পাড়ি দেয়া। শিমুলিয়া-বাংলাবাজার ঘাটে ফেরিতে বাস ও ট্রাক পারাপার হচ্ছে না। পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ঘাটে ফেরি ও ঘাট চাহিদার তুলনায় কম। ফলে যাত্রীদের পড়তে হচ্ছে দুর্ভোগে। এবার ঈদে তা বাড়বে কয়েকগুণ। মূলত ঘাট সঙ্কট, ফেরি স্বল্পতা, নদীর নাব্য সঙ্কটের সমাধান না হলে এবার ঈদে ঘরে ফেরা মানুষের সীমাহীন ভোগান্তি পোহাতে হবে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
গত এক মাস থেকেই যানবাহনের অতিরিক্ত চাপ, ফেরি সঙ্কট ও নদীতে নাব্য সঙ্কটের কারণে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া রুটের উভয় ঘাটেই যানবাহনের দীর্ঘ সারি লেগে থাকছে। ঘাটে আসা যানবাহনগুলোর মধ্যে যাত্রীবাহী বাসকে ফেরিতে ওঠার সিরিয়াল পেতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে। এখনই যদি এমন পরিস্থিতি হয় তবে ঈদের দীর্ঘ ছুটিতে অকল্পনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হবে যাত্রীদের।
দৌলতদিয়া ঘাট সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রাজধানী ঢাকার সঙ্গে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার গুরুত্বপূর্ণ নৌপথ দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া। এ নৌরুটে গড়ে প্রতিদিন ছোট-বড় ১৮ থেকে ২০টি ফেরি দিয়ে চার থেকে পাঁচ হাজার যানবাহন পারাপার হয়ে থাকে। এছাড়া দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে বর্তমানে ৩০টির মতো লঞ্চ চলাচল করে থাকে। যেখানে প্রতিদিন ৪০-৫০ হাজার যাত্রী নদী পার হয়ে গন্তব্যে পৌঁছায়। ঈদে এই রুটে যানবাহন ও যাত্রী কয়েকগুণ বেড়ে যায়।
জানা গেছে, দৌলতদিয়া লঞ্চ ঘাটের অর্ধেক অংশ পদ্মা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙ্গনের তা-বে লঞ্চে ওঠানামার একমাত্র কাঠের ব্রিজটিও বিকল হয়ে গেছে। বর্ষা মৌসুমে জরুরী ভিত্তিতে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও বিআইডব্লিউটিএ বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে কোন রকম লঞ্চঘাটটি সচল করে রাখে।
দৌলতদিয়ায় সাতটি ফেরিঘাট রয়েছে। এর মধ্যে চারটি ঘাট সচল রয়েছে। ১ ও ২ নং ঘাট উদ্বোধনের পর থেকেই প্রায় পাঁচ বছর ধরে পদ্মার ভাঙ্গনের শিকার হয়। সর্বশেষ ২০১৯ সালের অক্টোবরে নদীভাঙ্গনে দৌলতদিয়ার ১ ও ২ নম্বর ঘাট বিলীন হয়ে যায়। এছাড়া গত বর্ষা মৌসুমের পর থেকে ৬ নং ফেরিঘাটও বিকল হয়ে পড়ে আছে। অবশিষ্ট ৩, ৪, ৫ ও ৭ নম্বর ঘাট সচল রয়েছে।
বর্তমানে পদ্মা নদীর নাব্য কমে যাওয়ায় ফেরি থেকে ভারি যানবাহন ওঠানামা করতে সমস্যা হচ্ছে। নদীর কয়েকটি চ্যানেলে চর পড়ে যাওয়ায় উভয় ঘাটেই ফেরি ভিড়তে স্বাভাবিকের থেকেও দ্বিগুণ সময় লাগছে। এতে যানবাহনের দীর্ঘ সারি তৈরি হচ্ছে।
দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া লঞ্চঘাটের ম্যানেজার নুরুল আনোয়ার বলেন, গত বর্ষা মৌসুমে লঞ্চঘাটের কিছু অংশ ভেঙ্গে যায়। ঘাট ভেঙ্গে যাওয়ার পর থেকে যাত্রীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করে। প্রতিনিয়ত এখান দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে অনেকে নিচে পড়ে যায়। তিনি আরও বলেন, লঞ্চঘাট থেকে বিআইডব্লিউটিএ প্রতি বছর রাজস্ব আদায় করলেও কী কারণে তারা নীরব রয়েছে তা বুঝতে পারছি না। গত বর্ষা মৌসুমের পর থেকে টানা দুর্ভোগ শিকার করে যাত্রীরা চলাচল করছে। লঞ্চঘাটের সংযোগ সড়ক মেরামত না করলে এবার রোজার ঈদে ঘরে ফেরা মানুষ ও ঈদ শেষে কর্মস্থলে যাত্রীদের কয়েকগুণ দুর্ভোগ পোহাতে হবে।
ফেরি সমস্যা নিয়ে বিআইডব্লিউটিসির আরিচা কার্যালয়ের উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) শাহ মোঃ খালেদ নেওয়াজ সাংবাদিকদের বলেন, ঢাকামুখী যানবাহনের চাপ বেড়ে যাওয়ায় দৌলতদিয়ায় ভোগান্তির সৃষ্টি হয়েছে।
বর্তমানে যে পরিমাণ যানবাহন রয়েছে, তার জন্য প্রয়োজনীয় ফেরির সংখ্যা কম। কয়েকটি ফেরি মেরামতের জন্য ডকইয়ার্ডে থাকায় এই ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। তবে মেরামত শেষে ১৫-১৭ এপ্রিল দুটি রো রো (বড়) ফেরি আসার কথা রয়েছে। এছাড়া ঈদের আগে আরও তিন-চারটি বড় ফেরি বহরে যুক্ত হওয়ার কথা রয়েছে। ঈদযাত্রার চাপ সামাল দিতে মোট ২৩টি ফেরি চলাচল করবে। তখন আর ফেরি সঙ্কট থাকবে না। আশা করছি ঈদে ঘরমুখো মানুষ ভোগান্তি ছাড়াই নদী পার হতে পারবে।
একদিন নিলেই মিলবে টানা ৯ দিনের ছুটি : এবারের রমজানে একদিনের অফিস ছুটি নিলেই টানা নয়দিনে ছুটি পাওয়া যাবে। গত ৩ এপ্রিল রোজা শুরু হয়ে ৩০ রমজান পূর্ণ হলে ঈদুল ফিতর হবে ৩ মে। সাধারণত ঈদে সরকারী ছুটি থাকে তিনদিন। ২৯ রমজান হলে ঈদ হবে ২ মে আর ৩০ রমজান পূর্ণ হলে হবে ৩ মে। ৩ মে ঈদ হলে ছুটি হবে ৬ দিন। এরপর একদিন ছুটি নিলেই টানা ৯ দিন ছুটি কাটানো যাবে।