পরিবহন শ্রমিকদের টিকার আওতায় আনা হউক

5

প্রচার মাধ্যমে এসেছে খুব ছোট্ট অথচ গুরুত্বপূর্ণ একটি খবর। গণপরিবহনের চালক-শ্রমিকদের টিকার আওতায় আনতে চালু হচ্ছে ক্র্যাশ প্রোগ্রাম। শুরু হয়েছে তালিকা তৈরির কাজ। তালিকা প্রস্তুত হলেই টার্মিনালগুলোতে চালক-শ্রমিকদের করোনাভাইরাসের টিকা দেয়া হবে। তথ্যটি জানিয়েছেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান। ওমিক্রনের প্রভাবে করোনার দ্রুত সংক্রমণের প্রেক্ষাপটে এই সিদ্ধান্ত খুব গুরুত্বপূর্ণ। চালক-শ্রমিক কিংবা এই শ্রেণীর মধ্যে সচেতনতার অভাব রয়েছে। করোনা সংক্রমণের শুরুতে এই শ্রেণীর অধিকাংশ মানুষের মনে ধারণা ছিল, রোগটি শুধু ধনীদের মধ্যেই ছড়ায়। খেটে খাওয়া মানুষের মধ্যে করোনা খুব একটা সুবিধা করতে পারে না। করোনার প্রথম ঢেউয়ের ক্ষেত্রে এই ধারণা সত্য ছিল অনেকটাই। কায়িক পরিশ্রমী লোকদের মধ্যে করোনার সংক্রমণ খুব একটা দেখা যায়নি। তবে দ্বিতীয় ঢেউ করোনার ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট দরিদ্র খেটে খাওয়া মানুষকেও বাদ দেয়নি। তান্ডব চালিয়েছে গ্রাম-গঞ্জেও। হাজার হাজার মানুষ আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসার জন্য শহরমুখী হয়েছেন। অনেকে চিকিৎসা না পেয়ে রাস্তায় মৃত্যুবরণ করেছেন।
এখন করোনার তৃতীয় ঢেউ শুরু হয়েছে। এটি করোনার ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট। সংক্রমণ ক্ষমতা ডেল্টার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি। সংক্রমণের হার বৃদ্ধি পাচ্ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের কথা মাথায় রেখে সরকার এখন পর্যন্ত লকডাউনের মতো কঠোর সিদ্ধান্তের দিকে যায়নি। স্বাস্থ্যমন্ত্রী অবশ্য হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, স্বাস্থ্যবিধি না মানলে পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাবে। তখন সরকার লকডাউনের মতো কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হবে। আপাতত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য কিছু নির্দেশনাও জারি করা হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি পালন সাপেক্ষে সচল রাখা হয়েছে গণপরিবহন। এক্ষেত্রে গণপরিবহনের চালক এবং শ্রমিকদের টিকা দেয়া না হলে চলাচলকারী যাত্রীরা থাকবে ঝুঁকিতে। নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে কিংবা হাত স্যানিটাইজ করেও যাত্রীরা করোনার ঝুঁকি থেকে মুক্ত থাকতে পারবে না। প্রতিদিন লাখ লাখ লোক গণপরিবহনের যাত্রী হচ্ছেন। এজন্য ড্রাইভার ও শ্রকিমদের টিকা নিশ্চিত করা খুব গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত।
শুধু ড্রাইভার শ্রমিক নয়, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও বাসাবাড়ির কাজে নিয়োজিত কর্মীরাও টিকার ব্যাপারে খুব একটা সচেতন নয়। তাদের অনেকের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) পর্যন্ত নেই। চাইলেও তারা এনআইডির অভাবে টিকার রেজিস্ট্রেশন করতে পারছেন না। এই সমস্যার সমাধানে স্বাস্থ্য বিভাগ সম্প্রতি বস্তিতে টিকা অভিযান পরিচালনা করেছে। এতে রেজিস্ট্রেশনের বিষয়টি খুব একটা গুরুত্ব দেয়া হয়নি। বস্তিতে টিকা দেয়ার কর্মসূচী এখন আর নেই।