দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে নতুন করে আবার মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। রাজধানী ঢাকা সহ সারাদেশে কুয়াশাচ্ছন্ন ছিল। তাপমাত্রা কমতে শুরু করেছে। তাপমাত্রা ৬ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে মাঝারি এবং তাপমাত্রা ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে তাকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বলে। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে গেলে তাকে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ হিসেবে ধরা হয়। এবারের শীত মৌসুমে ডিসেম্বরের শেষার্ধে দুটি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যায় দেশের বিভিন্ন এলাকায়। জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহেও ছিল এক দফা শৈত্যপ্রবাহ। শনিবারের শৈত্যপ্রবাহ এ মৌসুমের চতুর্থ। শৈত্যপ্রবাহ পাঁচ-ছয় দিন পর্যন্ত চলতে পারে। তবে তা একই সঙ্গে সারা দেশে বিস্তৃত হবে না। মূলত উত্তরাঞ্চল ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে শীতের অনুভূতি বেশি থাকতে পারে। আকাশে মেঘ না থাকায় দিনের বেলা সূর্যের আলো পাওয়ার সম্ভাবনা আছে। ফলে তখন শীতের অনুভূতি কম থাকতে পারে। তবে শহরের চেয়ে গ্রাম এলাকায় শীত বেশি থাকতে পারে।
শীতের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় দরিদ্র মানুষের ভোগান্তির অন্ত নেই। বিশেষ করে, দিনমজুর শ্রেণির মানুষের কাজের অভাব দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া শীতের রোগ ছড়াতে শুরু করেছে। শীতের সময় সাধারণত সর্দি-জ্বর, কাশি, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট বা অ্যাজমা, অ্যালার্জি, চোখ উঠা, ডায়রিয়া, খুশকি, খোসপাঁচড়া বা চর্মরোগ প্রভৃতিরও প্রকোপ বেশি দেখা দেয়। এদিকে কৃষকদের চিন্তায় ফেলে দিয়েছে শৈত্যপ্রবাহ। আবহাওয়া অধিদপ্তর ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, ফসল ও গবাদি পশুর শীতজনিত নানা রোগবালাই দেখা দিতে পারে। কৃষকদের কিছু পরামর্শ দিয়ে বলা হয়েছে, এ ধরনের পরিস্থিতিতে রোগ প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম ও বালাইনাশক ব্যবহার করতে হবে। টানা শৈত্যপ্রবাহের কারণে বোরো ধানের বীজতলা হলদে হয়ে যাওয়াসহ এ সময়ের সবজিও শীতের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। অন্যদিকে ঘন কুয়াশার কারণে দেশের বিভিন্ন স্থানে সড়কে যানবাহন এবং নদীতে ফেরি ও লঞ্চ চলাচল বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
এই সময়ে দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে। যাদের শীতের কাপড় নেই, তাদের হাতে পৌঁছে দিতে হবে গরম কাপড়, বিশেষ করে কম্বল। এ ছাড়া শীতজনিত রোগের ওষুধ ও সেবা পৌঁছে দেওয়া জরুরি। সবাই মিলে শীতার্তদের পাশে দাঁড়ানো এখন প্রধান কর্তব্য।