যেভাবে ৫ লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকার জ্বালানি বাঁচালো দুবাই

6

কাজিরবাজার ডেস্ক :
উন্নত ও সুপরিকল্পিত পরিবহন অবকাঠামো তৈরি করায় ২০০৬ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে দুবাইয়ের জ্বালানি খরচ সাশ্রয় হয়েছে প্রায় ২২ হাজার কোটি দিরহাম, বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ দাঁড়ায় ৫ লাখ ১৩ হাজার ২৩৮ কোটি টাকারও বেশি। আর এ ধরনের অবকাঠামো গড়ে তুলতে একই সময়ে তাদের খরচ হয়েছে মাত্র ১৪ হাজার কোটি দিরহাম। সোমবার (৮ নভেম্বর) আমিরাতের সড়ক ও পরিবহন কর্তৃপক্ষের (আরটিএ) মহাপরিচালক, নির্বাহী পরিচালক বোর্ডের চেয়ারম্যান মাত্তার মোহাম্মদ আল তায়ের চমকপ্রদ এ তথ্য জানিয়েছেন।
দুবাইয়ে ‘১৮তম আইআরএফ (ইন্টারন্যাশনাল রোড ফেডারেশন) ওয়ার্ল্ড মিটিং অ্যান্ড এক্সিবিশন’-এ রাখা বক্তব্যে আল তায়ের জানান, ওই ১৪ বছরে দুবাইয়ে রেকর্ড সময়ে বিশাল বিশাল প্রকল্প সমাপ্ত হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ চার বছরে দুবাই মেট্রো প্রজেক্ট এবং তিন বছরেরও কম সময়ে দুবাই ওয়াটার ক্যানাল প্রজেক্ট শেষ করার কথা উল্লেখ করেন তিনি।
আরটিএ’র এ কর্মকর্তা জানান, একই সময়ে শহরটিতে পদচারী সেতু ও টানেলের সংখ্যা বেড়েছে প্রায় চারগুণ (২৬টি থেকে ১২৫টি)। ২০০৬ সালে যেখানে দুবাইয়ে সাইক্লিং ট্র্যাক ছিল মাত্র নয় কিলোমিটার, ২০২০ সাল নাগাদ তা ৪৬৩ কিলোমিটারে পৌঁছেছে। ২০২৫ সালের মধ্যে সাইক্লিং ট্র্যাক ৬৬৮ কিলোমিটারে পৌঁছাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
নিরাপদ সড়ক
আল তায়ের বলেন, আরটিএ’র প্রকল্পগুলো টানা পাঁচ বছর বিশ্বব্যাপী রাস্তার গুণমানে শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে। দুবাই পুলিশের সঙ্গে আরটিএ’র যৌথ প্রচেষ্টায় ২০০৬ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানির সংখ্যা প্রতি লাখে ২২টি থেকে কমে ১ দশমিক ৮ এবং প্রতি লাখে পথচারীর মৃত্যু ২০০৭ সালের ৯ দশমিক ৫ থেকে কমে ২০২০ সালে ০.৫ হয়েছে।
পরিবেশবান্ধব কর্মসূচি
আরটিএ কর্মকর্তা বলেন, পরিবেশগত স্থায়িত্ব আমিরাত সরকারের অন্যতম মূল এজেন্ডা। তারা ২০৫০ সালের মধ্যে জলবায়ু নিরপেক্ষ কৌশল গ্রহণে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তিনি জানান, বৈশ্বিক কার্বন নির্গমনের ২২ শতাংশ সরাসরি পরিবহন খাত থেকে আসে। তাই পরিবেশ সংরক্ষণে আরটিএ দুবাইয়ের ভবিষ্যৎ নির্দেশনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তুলেছে।
সংস্থাটি ২০৫০ সালের মধ্যে গণপরিবহন থেকে কার্বন নির্গমন শূন্যের কোটায় নামানোর রোডম্যাপ তৈরি করেছে এবং তাদের উদ্যোগগুলো ২০২০ সাল নাগাদ চার লাখ টন কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গমন কমাতে অবদান রেখেছে।
নগরায়নে মাস্টারপ্ল্যান
আল তায়ের বলেন, তারা দুবাইকে বিশ্বের সেরা শহর হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে দুবাই আরবান প্ল্যান ২০৪০-এর ভিত্তিতে কাজ করছেন। পরিকল্পনা অনুসারে, দুবাইকে ’২০ মিনিটের শহর’ হিসেবে গড়ে তোলা হবে। এর প্রত্যাশিত জনসংখ্যার ৫৫ শতাংশই মেট্রো স্টেশনের ৮০০ মিটারের মধ্যে বসবাস করবে, যেন বাসিন্দারা সর্বোচ্চ মাত্র ২০ মিনিট হেঁটে বা সাইকেল চালিয়েই দৈনিক কাজকর্মের ৮০ শতাংশে পৌঁছাতে পারেন। সেসময় শহরের মোট এলাকার ৬০ শতাংশ হবে প্রাকৃতিকভাবে সংরক্ষিত ও গ্রামীণ এলাকা।