স্পোর্টস ডেস্ক :
শারজায় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে আজ থেকে শুরু হচ্ছে টাইগারদের ‘মিশন সুপার টুয়েলভ’। বাংলাদেশের অগণিত ক্রিকেটপাগল মানুষের দৃষ্টি এই ম্যাচের ওপর। আর দুবাইয়ে রাতে উন্মাদনার দ্বৈরথে মুখোমুখি ভারত ও পাকিস্তান। যে দ্বৈরথ ঘিরে পুরো ক্রিকেট বিশ্বই উত্তেজনায় কাঁপছে। ওয়ানডে কিংবা টি২০- কোনো ফরমেটের বিশ্বকাপে এ পর্যন্ত ভারতকে হারাতে পারেনি পাকিস্তান। আমিরাতের চিরচেনা কন্ডিশনে এবার ব্যর্থতার ইতিহাস বদলে দিতে মরিয়া বাবর আজম ও তার দল। ক্রিকেটারদের নির্ভার রাখতে একদিন আগেই একাদশের ১২ খেলোয়াড়ের নাম ঘোষণা করে দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে রহস্য রেখে ম্যাচের আগে চূড়ান্ত স্কোয়াড বেছে নেবে ভারত। মাঠের দ্বৈরথের আগে অধিনায়ক কোহলি অবশ্য প্রতিপক্ষকে সমীহর চোখে দেখছেন। এই ম্যাচ দিয়ে শুরু শিরোপা প্রত্যাশী দুই পরাশক্তির টি২০ বিশ্বকাপ মিশন। দুবাই ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে খেলা শুরু বাংলাদেশ সময় রাত আটটায়।
ভারতের বিপক্ষে ম্যাচের জন্য একদিন আগেই ১২ সদস্যেরই নাম জানিয়ে দিয়েছেন পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর আজম। যেখানে রয়েছেন দুই অভিজ্ঞতম ক্রিকেটার শোয়েব মালিক এবং মোহাম্মদ হাফিজ। দুজনই এর আগে ভারতের বিপক্ষে অনেক ম্যাচ খেলেছেন। বাবর মনে করেন মালিক ও হাফিজের অভিজ্ঞতা তাদের এ ম্যাচে কাজে লাগবে এবং তারা ভালো কিছু করবেন। সর্বশেষ পাকিস্তান সুপার লীগে (পিএসএল) দুর্দান্ত বোলিং করা তরুণ বাঁহাতি পেসার শাহিন শাহ আফ্রিদিও স্বাভাবিকভাবেই রয়েছেন দলে। বিশ্বকাপ পূর্ব প্রস্তুতি ম্যাচে তিনি চার উইকেট নিয়েছেন। এছাড়া পেস ডিপার্টমেন্টে রয়েছেন অভিজ্ঞ পেসার হাসান আলিও। যার বোলিং ভারতকে কাবু করতে পারবে বলে মনে করেন অধিনায়ক, ‘দুবাইয়ের ধীরগতির উইকেটে হাসান আলির বোলিং বেশ ভালো। হাসান আলির সামনে প্রতিপক্ষকে সতর্ক থেকে দেখেশুনে খেলতে হবে।’ ভারতের বিপক্ষে পাকিস্তানের ১২ সদস্যের দল- বাবর আজম (অধিনায়ক), মোহাম্মদ রিজওয়ান, ফখর জামান, মোহাম্মদ হাফিজ, শোয়েব মালিক, আসিফ আলি, ইমাদ ওয়াসিম, শাদাব খান (সহ-অধিনায়ক), হাসান আলি, হায়দার আলি, হারিস রাউফ এবং শাহিন আফ্রিদি।
তবে বিরাট কোহলি তার একাদশ নিয়ে ধোঁয়াশা রেখে দিয়েছেন, ‘এখানে (সংবাদ সম্মেলন) কম্বিনেশন প্রকাশ করব না। আমাদের দলে যথেষ্টই ভারসাম্য রয়েছে। প্রত্যেকেই নিজেদের ভূমিকা সম্পর্কে সচেতন। মাঠে নেমে পরিস্থিতি অনুযায়ী পরিকল্পনা যথাযথভাবে প্রয়োগ করতে হবে। তবে আমরা পুরোপুরিভাবে তৈরি।’ প্রতিপক্ষকে সমীহ করে তিনি আরও বলেন, ‘পাকিস্তান যথেষ্ট শক্তিশালী। আমাদেরও মজবুত পরিকল্পনা রয়েছে। তার সফল প্রয়োগ ঘটাতে হবে। সব সময় পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সেরাটা দিতে হয়। ওদের দলেও কয়েকজন গেম চেঞ্জার রয়েছেন। আমাদের তাই সেরাটা দিতে হবে।’ হারদিক পান্ডিয়ার ফিটনেসের প্রসঙ্গ এলে কোহলি বলেন, ‘হারদিকের ফিটনেস এখন বেশ ভালো জায়গায় রয়েছে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে ও আরও ফিট হয়ে উঠবে। আশা করি পরের কয়েকটি ম্যাচে ও ব্যাটিংয়ের সঙ্গে বোলিংও করতে পারবে।’ ২০০৭ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত মুখোমুখি ৮ ম্যাচের ৬টিতেই জয় ভারতের। পাকিস্তানের জয় ১। টাই ১। তবে ওয়ানডে কিংবা টি২০ কোনো ফরমেটের ক্রিকেটেই পাকিস্তান কখনো ভারতকে হারাতে পারেনি!
ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ এলেই ক্রিকেটপ্রেমীদের স্মৃতিতে ভেসে ওঠে ২০০৭ সালে প্রথম সেই টি২০ বিশ্বকাপ ফাইনাল ম্যাচটির কথা। জোহানেসবার্গে মহেন্দ্র সিং ধোনির নেতৃত্বাধীন ভারতের কাছে অল্পের জন্য শিরোপা হাতছাড়া করেছিলেন মিসবাহ-উল-হকরা। এরপর আরও তিনবার টি২০ বিশ্বকাপে ভারতের মুখোমুখি হয়ে তিনবারই হারে পাকিস্তান। আগের পাঁচ ম্যাচ ধোনি খেললেও এবার আর ২২ গজে থাকছেন না ভারতের সফলতম অধিনায়ক। ধোনি মেন্টর হিসেবে থাকলেও মাঠে পারফর্ম করতে হবে কোহলিদেরই। মোহাম্মদ শামি, জাসপ্রিত বুমরাহ, ভুবনেশ্বর কুমার, রবিচন্দ্রন অশ্বিন, রবীন্দ্র জাদেজাদের নিয়ে গড় বোলিং লাইন-আপকে চ্যালেঞ্জ জানাতে প্রস্তুত বাবর-রিজওয়ানরা। ব্যাটিং লাইনআপের অন্যতম ভরসা এই দুইজন। রোহিত শর্মা, কোহলিদের চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে প্রস্তুত শাহিন শাহ আফ্রিদি, হাসান আলি ও হারিস রউফরা। আর ইমাদ ওয়াসিমের তো আমিরাতে রেকর্ড দুর্দান্ত। পাওয়ারপ্লে ও মিডল ওভারে বলের গতি কাজে লাগিয়ে সূর্যকুমার যাদব ও রিশভ পান্থের মতো ব্যাটারকে আটকাতে বাঁ-হাতি স্পিনারের ওপর নির্ভর করবেন বাবর। পার্থক্য গড়ে দিতে পারেন অভিজ্ঞ হাফিজ ও মালিক।