সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন ॥ কোম্পানীগঞ্জ শিবির সেক্রেটারীর দলীয় মনোনয়ন বাতিলের দাবি

3
সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করছেন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ রণিখাই ইউনিয়নের পূর্ণা ছগাম গ্রামের সাইফুল ইসলাম।

স্টাফ রিপোর্টার :
জামায়াত-শিবিরের প্রতিষ্ঠান গ্রাম বাংলা এসোসিয়েটের অর্থতহবিল থেকে বড় অংকের টাকা নিয়ে ইকবাল হোসেন ইমাদের নিজস্ব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আব্দুস সালাম অটো ব্রিক্সে বিনিয়োগ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া জামায়াত সংশ্লিষ্টতা এবং ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী চূড়ান্ত করায় হতাশা প্রকাশ করেছেন তৃণমূল আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ। গতকাল বৃহস্পতিবার সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এসব অভিযোগের কথা জানান তারা। সংবাদ সম্মেলনে তৃণমূল আওয়ামী লীগের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন কোম্পানিগঞ্জের দক্ষিণ রণিখাই ইউনিয়নের পূর্ণা ছগাম গ্রামের সাইফুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ২০১৮ সালের শেষ দিকে খোলস পাল্টে ইকবাল হোসেন ইমাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাসিমকে ম্যানেজ করে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগে যোগদান করেন। ২০১৯ সালে তিনি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য হন। সে সময় তৃণমূলের তীব্র প্রতিবাদেও পরও সভাপতি আব্দুল হাসিম বিষয়টি এড়িয়ে যান। সর্বশেষ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাসিমকে ম্যানেজ করে দক্ষিণ রণিখাই ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থীতা চান এবং কেন্দ্র চরম আওয়ামবিদ্বেষী ও স্বাধীনতাবিরোধী রাজনীতির একসময়ের তুখোড় ছাত্রনেতা ইকবাল হোসেন ইমাদকে নৌকার প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করে।
তিনি বলেন, ইমাদ দক্ষিণ রণিখাই ইউনিয়নের খাগাইল গ্রামের মো. আব্দুস সালামের ছেলে। ২০০৩ সালে দলইরগাও স্কুল থেকে এসএসসি পাশ করে ইকবাল হোসেন ইমাদ এম. সাইফুর রহমান কলেজে ভর্তি হয়ে ২০০৪ সাল থেকে ইসলামি ছাত্রশিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে যান। পরবর্তীতে ২০০৬ সালের (আংশিক) তিনি কোম্পানীগঞ্জ থানা শিবিরের সক্রেটারির দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৬ ও ২০০৭ সাল পুরোটাই ইকবাল হোসেন ইমাদ কোম্পানীগঞ্জ থানা শিবিরের সেক্রেটারি ছিলেন। বিষয়টি শিবিরের সাংগঠনিক ডায়েরিতে লিপিবদ্ধ রয়েছে। ইকবাল হোসেন ইমাদ ২০১০ সালের মার্চে যুক্তরাজ্য যাওয়ার আগ পর্যন্ত জামায়াত-শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন।
যুক্তরাজ্যে থাকা অবস্থায় ইকবাল হোসেন ইমাদ তার ব্যবহৃত  Ikbal H. Imad   নামক আইডি থেকে নিয়মিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, আওয়ামী লীগ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে কটুক্তিমূলক নানা পোস্ট করতেন বলেও সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন এ তৃণমূল আওয়ামীলীগ নেতা। আওয়ামীবিরোধী পোস্ট দেওয়া সেই আইডি তিনি ডিঅ্যাক্টিভ করে দিয়েছেন বলেও জানান তিনি।
সাইফুর বলেন, ২০১৬ সালে ইকবাল হোসেন ইমাদ দেশে ফিরে জামায়াত-শিবিরের বিভিন্ন প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করেন। এ সংক্রান্ত একাধিক ছবি রয়েছে। স্বাধীনতাবিরোধী এ দলের অর্থতহবিলে অনেক টাকা-পয়সা দান করেছেন। যার মধ্য থেকে একটি রশিদও রয়েছে। এছাড়াও জামায়াত-শিবিরের প্রতিষ্ঠান গ্রাম বাংলা এসোসিয়েটের অর্থতহবিল থেকে বড় অংকের টাকা নিয়ে তিনি নিজস্ব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আব্দুস সালাম অটো ব্রিক্সে বিনিয়োগ করেন।
সাইফুল ইসলাম সংবাদ সম্মেলনে বলেন, নৌকার প্রার্থী চূড়ান্ত হওয়ার পর তৃণমূল আওয়ামী লীগে যখন নিন্দা ও সমালোচনা ঝড় ওঠে তখন তড়িঘড়ি করে সংবাদ সম্মেলন করে ইকবাল হোসেন ইমাদ বেশ কিছু মিথ্যা তথ্য সাংবাদিকদের সামনে উপস্থাপন করেন। তিনি যে শিবির নেতা ইকবাল হোসেনের তার নাম ইকবাল হোসেন। ওই ইকবাল দক্ষিণ রণিখাই ইউনিয়নের পশ্চিম বর্ণী গ্রামের মাওলানা মুহাম্মদ আব্দুন নুরের ছেলে। কিন্তু চেয়ারম্যান প্রার্থী ইকবাল হোসেন ইমাদ দক্ষিণ রণিখাই ইউনিয়নের খাগাইল গ্রামের মো. আব্দুস সালামের ছেলে। এর প্রমাণ হিসেবে দুজনের এসএসসি সার্টিফিকেট রয়েছে। তাছাড়া চেয়ারম্যান প্রার্থী ইকবাল হোসেন ইমাদের সঙ্গে সেই ইকবালের বয়সের ৭ বছরের ব্যবধান রয়েছে।
তিনি বলেন, ইকবাল হোসেন ইমাদ মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে এখন আওয়ামী লীগ নেতা ও দক্ষিণ রণিখাই ইউনিয়নের নৌকার কান্ডারি হওয়ার অভিযোগ তোলে বিষয়টি জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ এবং দলের হাইকমান্ডকে নজরে নেওয়ার অনুরোধ জানান। একই সঙ্গে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে লালিত দল আওয়ামী লীগের মঙ্গলের জন্য এবং স্বাধীনতাবিরোধী অনুপ্রবেশকারীদের হাত থেকে দলকে রক্ষা করতে দক্ষিণ রণিখাই ইউনিয়নের নৌকার প্রার্থীর বিষয়টি গুরুত্বসহকারে পুনর্বিবেচনারও অনুরোধ জানান।