চালের দাম

10

সরকারের নানা উদ্যোগ এবং প্রচেষ্টা সত্ত্বেও বাজারে চালের দাম কমছে না কিছুতেই। খুচরা বাজারে মোটা চালের দাম প্রতিকেজি সর্বনিম্ন ৫০-৫২ টাকা। মাঝারি মানের চালের দাম প্রতিকেজি ৬৫ ও তদুর্ধ। নাজির শাইল-কাটারীভোগের দাম আরও বেশি। অতীতে ভাদ্র-আশ্বিন মাসে বহু কথিত মঙ্গার কথা শোনা গেলেও বর্তমান সরকার তা দূর করতে সক্ষম হয়েছে। গত কয়েক বছর ধরে বিশেষ করে বোরোর বাম্পার ফলন হলেও প্রধানত ব্যবসায়ী, মিলমালিক, আড়তদার ও আমদানিকারকদের কারসাজিতে চালের দাম নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না কিছুতেই। ফলে করোনার মহামারীকালে বিশেষ করে আয়-উপার্জনহীন মানুষের মধ্যে প্রায় দিশেহারা অবস্থা পরিলক্ষিত হচ্ছে। দাম নিয়ন্ত্রণে সারা দেশে ন্যায্যমূল্যে চাল বিক্রিসহ ওএমএসের পরিধি ও কার্যক্রম বাড়িয়েও ইতিবাচক ফল পাওয়া যাচ্ছে না। এমতাবস্থায় সরকার চালের শুল্ক কমিয়ে ১০ শতাংশ নির্ধারণসহ যাবতীয় রেগুলেটারি ডিউটি থেকে অব্যাহতি দিয়েছে চাল আমদানিকারকদের। তবু খুশি নন চাল আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীরা। তারা চাল আমদানি অবাধ তথা উন্মুক্ত করে দেয়ার দাবি জানিয়েছেন। তাতে চাল আমদানিতে উৎসাহিত হতে পারেন ছোট-বড় ব্যবসায়ীরা এবং বাজারে এর ইতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
দেশে বোরো-আমনের ফলন আশানুরূপ হলেও কমেনি চালের দাম। বরং মোটা চালসহ সব রকম চালের দাম বেড়েছে। এমতাবস্থায় সরকার চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে বাধ্য হয় আমদানি শুল্ক কমানোসহ ভারত-মিয়ানমার থেকে চাল আমদানিতে সরকারী-বেসরকারী ভিত্তিতে। সেই চাল আসছেও, তবে ধীরগতিতে। তবে মিয়ানমারে সম্প্রতি সেনা অভ্যুত্থান সংঘটিত হওয়ায় চাল আমদানি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এর বিকল্প হতে পারে ভিয়েতনাম-কাম্পুচিয়া-ভারত। সত্য বটে, সরকার এবার ধান-চালের সংগ্রহ বাড়ানোর লক্ষ্যে এর ক্রয়মূল্য বাড়িয়েছে। এতে কৃষকরা ধান-চালের ভাল দাম পাচ্ছেন। তাই বলে ধানের দাম বাড়ার অজুহাতে দফায় দফায় চালের দাম বাড়ানো সমর্থনযোগ্য নয়। মিল মালিকরা খাদ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করলেও অনতিপরেই জোটবদ্ধ হয়ে দাম বাড়াচ্ছেন চালের। করোনা মহামারীতে বাংলাদেশসহ সারা পৃথিবীতে যখন লকডাউন চলেছে, অর্থনীতি প্রায় অচল হয়ে পড়েছে, তখন বাংলাদেশে অন্তত মূল্যস্ফীতি ঘটেনি। খাদ্যসহ নিত্যপণ্যের দাম তেমন বাড়েনি। ধান-চালের সংগ্রহমূল্য বাড়িয়ে দিয়ে সরকার সহায়তা করেছে কৃষককে, যাতে তারা লাভবান হতে পারেন।