কাজিরবাজার ডেস্ক :
মৌলভীবাজারের বড়লেখায় মুজিব জন্মশতবর্ষের উপহারের ঘরে ৭ মাসেও বিদ্যুৎ পায়নি দরিদ্র উপকারভোগীরা। ৪ মাস আগে ভুক্তভোগীরা নির্ধারিত ফরমে বিদ্যুৎ সংযোগের আবেদনপত্র কুলাউড়া বিদ্যুৎ অফিসে পাঠালেও রহস্যজনক কারণে বিদ্যুৎ অফিস তা গ্রহণ করেনি।
উপজেলা প্রশাসন আশ্রয়ণ প্রকল্পের সরকারী ঘরে বিদ্যুৎ সংযোগের ব্যবস্থা নিতে গত ৩১ জুলাই তৃতীয় দফা চিঠি প্রেরণ করলেও আজও নেই কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি। অভিযোগ উঠেছে উপরি রোজগারের উদ্দেশ্যে পিডিবি’র লোকজন দরিদ্র উপকারভোগীদের বিদ্যুৎ প্রদানে দীর্ঘদিন ধরে টালবাহানা করছে।
জানা গেছে, মুজিব জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের দুর্যোগ সহনীয় বাসগৃহ নির্মাণ (‘ক’ শ্রেণি) পুনর্বাসন প্রকল্পের আওতায় চলতি বছরের ২৩ জানুয়ারি ভূমি ও গৃহহীনদের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ৫০টি ঘর হস্তান্তর করা হয়। এরমধ্যে ১৫টি ঘর পড়েছে উপজেলার দক্ষিণভাগ দক্ষিণ ইউনিয়নের কাশেমনগর গ্রামে পিডিবির আওতাধীন এলাকায়। আশ্রয়ণ প্রকল্পের উপকারভোগীদের ঘরে উঠার প্রায় ৭ মাস পেরিয়ে গেছে। কিন্তু ঘরগুলোতে আজও বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়নি বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড। ফলে দুর্বিসহ গরমের দুর্ভোগ নিয়ে কোনোমতে তারা বসবাস করছে। অথচ তাদের ওপর আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে দ্রুত সময়ে বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদানের অফিসিয়েল নির্দেশনা রয়েছে।
সরেজমিনে গেলে কাশেমনগর গ্রামের দরিদ্র উপকারভোগী মনি বেগম, ফাতির আলী, সাহাব উদ্দিন, ছলিম উদ্দিন, লিপি বেগম, নাসিমা বেগম, নাজমা বেগম প্রমুখ জানান, প্রায় ৭ মাস আগে নির্মিত ঘরগুলো তাদের নিকট হস্তান্তর করা হয়। বিদ্যুৎ সংযোগ না দেওয়ায় তারা মারাত্মক ভোগান্তির মধ্যে ছেলে-মেয়েদের নিয়ে বসবাস করছেন। কর্মকর্তারা এসে শুধু আশ্বাস দিয়ে যান, কিন্তু বিদ্যুতের কোনো ব্যবস্থা হয়নি। ধার-দেনা করে আমরা ঘরে ওয়ারিং সম্পন্ন করেছি।
প্রায় ৪ মাস আগে বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য স্থানীয় আবুল মিয়া নামক প্রাইভেট লাইনম্যানের মাধ্যমে পিডিবির কুলাউড়া অফিসে আবেদনপত্র পাঠিয়েছি। কিন্তু রহস্যজনক কারণে আমাদের আবেদন গ্রহণ করা হয়নি। আমরা গরীব মানুষ, বাচ্চা-কাচ্চা নিয়ে ঠিকমতো ভাতই খেতে পারছি না, তাদেরকে উপরি টাকা কোত্থেকে দিব। এজন্যই পিডিবির লোকজন আমাদের বিদ্যুৎ দেওয়ার ব্যাপারে খোঁজ-খবরই নিচ্ছে না। পাকা ঘর করে দেওয়ায় উপকারভোগীরা প্রধানমন্ত্রীর প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, দুর্বিসহ গরমে বিদ্যুৎহীন ঘরে বসবাস করা তাদের কঠিন হয়ে পড়েছে।
ইউএনও খন্দকার মুদাচ্ছির বিন আলী জানান, প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নের আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘরে দ্রুত বিদ্যুৎ সংযোগের ব্যবস্থা নিতে তার দপ্তর থেকে গত ১২ জুলাই তালিকাসহ পিডিবির নির্বাহী প্রকৌশলীকে চিঠি দেন। দৃশ্যমান অগ্রগতি না থাকায় গত ৩১ জুলাই পুনরায় তাগিদপত্র পাঠান। কিন্ত তাপরও কোনো তৎপরতা লক্ষ করা যাচ্ছে না। যা খুবই হতাশাজনক। বিষয়টি তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে অবিহত করেছেন।
পিডিবির উপ-সহকারী প্রকৌশলী (জুড়ী সাইট অফিস) আনছারুল কবীর শামীম জানান, এখানকার আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘরগুলোতে বিদ্যুৎ সংযোগের ব্যবস্থা নিতে পিডিবির প্রকল্প বিভাগকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এর আগে তিনিসহ প্রকৌশলীরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এখানে বিদ্যুৎ দেওয়া সময়সাপেক্ষ ব্যাপার।