সিলেট পৌরসভার সাবেক দুই বারের চেয়ারম্যান আ ফ ম কামাল এর ২য় মৃত্যুবার্ষিকী আজ ১৩ জুলাই মঙ্গলবার। তিনি ২০১৯ সালের ১৩ জুলাই রাত দশটার সময় সিলেট ওয়েসিস হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন। করোনার কঠোর লকডাউনের তেমন কোনো কর্মসূচী নেই, তবে পারিবারিক কিছু আয়োজন রয়েছে।
আ ফ কামাল ১৯৮৪ ও ১৯৮৯ সালে পরপর দুবার সিলেট পৌরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। প্রায় সোয়াশ বছরের প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী সিলেট পৌরসভাকে ২য় শ্রেণি থেকে ১ম শ্রেণির মর্যাদায় উন্নীত করেন আ ফ ম কামাল। জরাজীর্ণ পৌর ভবনের স্থলে নির্মাণ করেন ৫ তলা বিশিষ্ট সুরম্য অট্টালিকা। তৎকালীন সিলেট পৌরসভার উন্নয়নে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। শহরের উন্নয়নে তিনি নিরলসভাবে কাজ করে গেছেন এবং এই শহরের অলিতে-গলিতে অনেক উন্নয়ন কর্মকান্ড তাঁর আমলে সাধিত হয়। সিলেট নগরের উন্নয়নের অগ্রযাত্রা তাঁর আমলেই সূচিত হয়েছিল।
আ ফ ম কামাল চেয়ারম্যান থাকাকালীন সময়ে সিলেট পৌরসভাকে একটি আধুনিক শহর হিসাবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে বিভিন্ন সংস্কার, উন্নয়ন ও জনহিতকর প্রকল্প গ্রহণ করেন। তাঁর সময়কালে সম্পন্ন উল্লেখযোগ্য কর্মকান্ডের মধ্যে রয়েছে, অরক্ষিত হযরত শাহজালাল (রহ.) এর দরগা শরিফ সংলগ্ন কবরস্থান ও হযরত মানিক পীর (রঃ) মজার শরিফ সংলগ্ন কবরস্থান সীমানা প্রাচীরবেষ্টিতকরণ, শেখঘাট হযরত শাহজালালের ঘাট নির্মাণ, ঐতিহাসিক শাহী ঈদগাহকে আকর্ষণীয় করে তোলার লক্ষ্যে ঈদগাহ সংলগ্ন পয়েন্টে গোল চত্বর নির্মাণ, কাষ্টঘরে দ্বিতল সুইপার কলোনি নির্মাণ, আর্ত মানবতার কল্যাণে পৌর বিনোদনী দাতব্য চিকিৎসালয় ও পৌর এ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস চালু।
নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির বাইরেও সামাজিক কর্মকান্ডেও আ.ফ.ম. কামালের অনেক অবদান রয়েছে। আ ফ ম কামাল পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়ন সাথে যুক্ত ছিলেন, সে সময় তিনি সংগঠনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সহ-সভাপতি ছিলেন। মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ছিলেন আ ফ ম কামাল। তিনি মুক্তিযুদ্ধের সময় দেশের অভ্যন্তরে থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের বিভিন্নভাবে সাহায্য করেন।
আ ফ ম কামাল সিলেট ডায়াবেটিক সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ছিলেন ও মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়াও তিনি হার্ট ফাউন্ডেশন সিলেট এর সাংগঠনিক সম্পাদক, বসন্ত মেমোরিয়াল স্কুলের সভাপতি, মঈনউদ্দীন আর্দশ মহিলা কলেজের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের সহ-সভাপতি, নাটাব, সিলেটের নির্বাহী কমিটির সদস্য, জেলা ও আঞ্চলিক স্কাউটের সহ-সভাপতি (মেডেল অফ মেরিট প্রাপ্ত) সহ বিভিন্ন সংগঠনের সদস্য হিসেবে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করে গেছেন।
এছাড়াও তিনি ধোপাদীঘিরপার জামে মসজিদের মোতাওয়াল্লী ও মজলিশ আমিন চারাদীঘির পার জামে মসজিদের পরিচালনা কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। তিনি হযরত মানিক পীর (রঃ) কবরস্থান কমিটির সভাপতি ছিলেন। আ ফ ম কামাল শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ১৯৮৫ সালে জাতিসংঘে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের সদস্য হিসাবে আ ফ ম কামাল জাতিসংঘে ভাষণ দেন। বিজ্ঞপ্তি