স্টাফ রিপোর্টার :
শহরের বিভিন্ন এলাকায় আনাছে-কানাছে গড়ে ওঠেছে অসংখ্য আইসক্রীম কারখানা। নিম্ন আর মধ্যবিত্ত শিশুদের টার্গেট করে গড়ে ওঠা এসব কারখানার বেশিরভাগেরই নেই কোন সরকারি অনুমোদন।
মারাত্বক অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে কার্যক্রম চালানো এসব কারখানায় আইসক্রিম উৎপাদনের প্রধান উপকরণ হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে ক্ষতিকর রং, নোংরা পানি, এরারুট ও লেবেলবিহীন ফ্লেবার। পাশাপাশি এসব কারখানাগুলো তাদের আইসক্রিমের মোড়কের গায়ে উৎপাদন ও মেয়াদউত্তীর্ণের তারিখ না দিয়ে বিক্রি করছে কয়েক মাসের পুরোনো আইসক্রীমও।
গতকাল বৃহস্পতিবার দিনব্যাপী জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও র্যাব-৯ এর পরিচালিত এক যৌথ অভিযানে ফুটে ওঠে এই ভয়াবহ চিত্র। অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. আমিরুল ইসলাম মাসুদের নেতৃত্বে পরিচালিত এই অভিযানে নগরীর ৪টি আইসক্রিম কারখানাকে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন -২০০৯ এর বিভিন্ন ধারা অনুসারে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা জরিমানা আরোপ ও আদায় করা হয়।
এসময় নগরীরর নাইওরপুল এলাকায় শিল্পী আইসক্রিম কারখানায় গিয়ে দেখা যায় ময়লার ড্রেনের পাশে অবস্থিত একটি টিনের চাউনিতে গড়ে তুলা হয়েছে কারখানাটি। এখানে রং হিসেবে আইসক্রীমে মেশানো হচ্ছে ভয়াভহ ডাই কালার, পাশাপাশি দুধের বদলে মেশানো হচ্ছে কাপড়ে ব্যবহারযোগ্য এরারুট। এসময় কারখানাটিকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
অভিযান টিমটি জিন্দাবাজার এলাকার পিওর আইসক্রিম কারখানায় গেলে দেখা যায় যে দরজা বন্ধ করে মালিকসহ সবাই পালিয়ে গেছে। এসময় পেছনের দরজা দিয়ে প্রবেশ করে ধরা পড়ে আরো ভয়াবহ চিত্র। কারখানাটিতে বিষাক্ত রং ও এরারুটের পাশাপাশি মেশানো হচ্ছে বিভিন্ন অনুমোদনহীন ফ্লেবার। দুধের আইসক্রিমে ডিপ ফ্রিজ পূর্ণ থাকলে নেই দুধের কোন ছিটেফোটাও।
শ্রমিকদের ছিলনা কোন ধরণের সুরক্ষা সামগ্রীও। এসময় প্রতিষ্ঠানটিকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। একই ধরণের অপরাধ ও সরকারি লাইসেন্স না থাকায় অভিযানে নগরীর বাগবাড়ি এলাকার নূরানী আইসবারকে ৩০ হাজার ও তেমুখী এলাকায় বন্ধু আইসক্রিম কারখানাকে আরো ৩০ হাজার টাকা জরিমানা আরোপ করা হয়। এসময় অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ভোক্তা অধিকার বিষয়ক সচেতনতামূলক লিফলেট ও পাম্পলেট বিতরণ করা হয়। জনস্বার্থে এ ধরণের অভিযান অব্যহত থাকবে বলেও অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয়।