কাজিরবাজার ডেস্ক :
মিয়ানমারে সাধারণ ধর্মঘট ঠেকাতে দেশটির হাসপাতাল ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ঘিরে রেখেছে সেনা-পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনী।
বিক্ষোভকারীরা যাতে বের হয়ে রাস্তায় জড়ো হতে না পারে সেজন্য ফাঁকা গুলি ও তল্লাশি চালানো হচ্ছে।
বিক্ষোভকারীরা ঝুঁকি উপেক্ষা করেই রাজধানী ইয়াংগুন, মানদেলে, দেউয়াইসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে জড়ো হয়েছেন। কিছু বিক্ষোভকারী নারীদের পরিহিত ঐতিহ্যবাহী সারং ধুতি দিয়ে পতাকা উড়িয়ে জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান।
পুলিশ বিক্ষোভে স্টান গ্রেনেড, টিয়ারগ্যাস ও জলকামান ছুড়েছে।
সোমবার মিয়ানমারজুড়ে সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দেয় নির্মাণ, কৃষি, পণ্য উৎপাদনসহ অন্তত নয়টি খাতের ১৮টি ট্রেড ইউনিয়ন।
সেই আহ্বানের সাড়া দিয়ে সব দোকানপাট, শিল্পকারখানা, ব্যাংক, শপিংমল বন্ধ করে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
ব্যবসা ও অর্থনীতির চাকা সচল রেখে সামরিক সরকারকে সহযোগিতা করতে প্রত্যাখ্যান করে ট্রেড ইউনিয়নগুলো বলছে, ‘গণতন্ত্রের জন্য রুখে দাঁড়ানোর এখনই সময়।’ তবে ধর্মঘটের আগে রবিবার রাতেই ব্যাপক তল্লাশি ও গ্রেফতার অভিযান শুরু করে জান্তা সরকার।
দ্য ইরাবতী জানায়, রোববার রাতেই ইয়াংগুনের রাস্তায় রাস্তায় অতিরিক্ত সেনা-পুলিশ মোতায়েন করা হয়। শহরের সরকারি হাসপাতাল ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ঘিরে ফেলে তারা।
রাত ৮টার দিকে শহরের বেশ কিছু এলাকায় কারফিউ জারি করা হয়। এরপর রাতভর ফাঁকা গুলির শব্দ শোনা যায়। কখনো ভেসে আসে স্টান গ্রেনেড বিস্ফোরণের শব্দ। ঘরের পাশে বুটের আওয়াজ। কোথাও রাতের অন্ধকারে ধরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।
সব মিলে রাত থেকেই এক ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে মিয়ানমারজুড়ে। এসব ঘটনার বেশ কিছু ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়েছে।
দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, শহরের হাসপাতালগুলোর কাছেও গুলির শব্দ শোনা গেছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছে, ইয়াঙ্গুনে অবিস্থত ওয়েস্ট ইয়াঙ্গুন জেনারেল হসপিটাল দখলের লক্ষ্যে এর ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করে পুলিশের একটি দল। এভাবে শহরের আরও অন্তত পাঁচটি হাসপাতাল দখলে নিয়েছে পুলিশ।
একই ধরনের খবর পাওয়া গেছে মান্দালয়, মনিওয়া ও টঙ্গি শহর থেকেও। এসব এলাকায় ব্যারিকেড দিয়ে পুলিশ ও সেনার প্রবেশ বন্ধ করে দিয়েছে বাসিন্দারা।
নিরাপত্তা বাহিনী এর আগেও চিকিৎসকদের বিভিন্নভাবে হয়রানি করেছে। ডাক্তার ও নার্সদের আটকের পাশাপাশি অ্যাম্বুলেন্স ও চিকিৎসকদের গাড়িতে হামলার অভিযোগও উঠেছে।
স্থানীয় মানবাধিকার সংস্থা দ্য ইন্টারন্যাশনাল ফিজিশিয়ানস ফর হিউম্যান রাইটস এসব ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে।