আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো…..

12

জেড.এম. শামসুল :

মাতৃভাষা রাষ্ট্রীয় ভাষায় পরিণত করতে বাঙালি জাতি অনেক জেল জুলুম নির্যাতন আর রক্তস্রোত বইয়ে অর্জিত রাষ্ট্রীয় ভাষা বাংলা প্রতিষ্ঠা লাভ করলেও আমরা পুরোপুরি মর্যাদার সাথে কতটুকু পালন করছি। যদিও বিশ্বের মানবতাবাদীরা বাঙালি জাতির মাতৃভাষাকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসাবে পালনের মধ্য দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করছে, কিন্তু আমরা শুধু ভাষার মাস আসলে শহীদদের জন্যে ফুলের শুভেচ্ছা, শহীদ মিনারে গিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণ, আলোচনা সভার মধ্য দিয়ে দিবসের কার্যক্রম সম্পন্ন করি। কিন্তু সেদিনের ভাষা বিরোধীচক্রের নির্মমতার ইতিহাস ভুলে গিয়ে পরদেশী ভাষায় এখনো বক্তৃতা ও বিবৃতি দিতে ভুলিনি। পৃথিবীর প্রত্যেক জাতি তার মাতৃভাষা ও রাষ্ট্রীয় ভাষায় রাষ্ট্রীয় সমস্ত কাজকর্ম করলেও আমাদের ব্যাপারে অন্যরকম। এখনও এই ভাষা আন্দোলনের মাসে পরদেশী ভাষায় বক্তৃতা দিতেও এ বাঙালি নামক কতিপয় ব্যক্তিদের লজ্জা পায় না। যারা তাদের অতীত ভুলে যায়, তারা কিন্তু উন্নতি করতে পারে না। যদি পারে তবে তাহা সাময়িক সময়ের জন্যে। এ ভাষা আন্দোলন করতে গিয়ে বাঙালি জাতি অনেক ত্যাগ-তিতিক্ষার মধ্য দিয়ে বাংলাভাষা প্রতিষ্ঠা করতে হয়েছে। আজ থেকে অর্ধ শতাব্দি বর্ষের পূর্বে মাতৃভাষা প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম শুরু হয়েছিল। মাৃতভাষা প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম অব্যাহত আন্দোলনের প্রেক্ষিতে ১৯৫১ সালের ডিসেম্বর পশ্চিম পাকিস্তানের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলাভাষা রহিতকরণ করা হয়। এ বিষয় পত্র পত্রিকায় তেমন কোন আলোচিত হয়নি। কিন্তু ১৯৫০ সালের বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্য তালিকায় বাংলাভাষা থাকলেও ১৯৫১ সালে পরিকল্পিতভাবে পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলাভাষা পাঠ্য তালিকা থেকে বাদ দিয়ে দেয়। শত চেষ্টা করেও বাঙালি ছাত্ররা বি.এ পরীক্ষায় বাংলাভাষায় পরীক্ষা দিতে পারেনি। অথচ হাজার হাজার টাকা খরচ করে বিদেশী ফরাসি, স্পেনীয়, জার্মানীভাষা শিক্ষা দেয়ার ব্যবস্থা ছিল। যা পশ্চিম পাকিস্তানীর বাংলা ভাষার প্রতি হিংসাত্মক মনোভাব। বাঙালি ছাত্রদের আন্দোলন সংগ্রামের চলমান গতিকে বিভ্রান্ত করার নানা কৌশল পদ্ধতির মধ্যে ১৯৫১ সালের ৯ ফেব্রুয়ারী পশ্চিম পাকিস্তানের ইসমাইলি সম্প্রদায়ের নেতা আগা খান এক সম্মেলনে যুক্তিপ্রদর্শন করে আরবীকে রাষ্ট্রীয় ভাষায় রূপান্তরিত করার দাবী জানান।