শেওলা স্থলবন্দরের উন্নয়ন কাজের উদ্বোধনকালে নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী ॥ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিশ্বে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল

27
বিয়ানীবাজারের শেওলা স্থলবন্দর উন্নয়ন কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠান ও মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখছেন নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি।

বিয়ানীবাজার থেকে সংবাদদাতা :
নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি বলেছেন, বর্তমান সরকার উন্নয়নে বিশ্বাসী এবং শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এখন উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় রোল মডেল হিসেবে বিশ্বের দরবারে প্রশংসিত হয়েছে। সরকারের অব্যাহত উন্নয়ন অগ্রযাত্রার অংশ হিসেবে ৬৯৩ কোটি টাকা ব্যয়ে শেওলাসহ দেশের চারটি স্থলবন্দরকে আধুনিকায়ন ও উন্নয়নে কাজ শুরু হয়েছে।
তিনি বলেন, শেওলা স্থলবন্দর আধুনিকায়ন ও উন্নয়নমূলক কাজ সমাপ্ত হলে বিয়ানীবাজার তথা সিলেট অঞ্চলের জন্য বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অপার সম্ভাবনা সৃষ্টি হবে।
তিনি বলেন, আমরা সিলেট-শেওলা স্থলবন্দর সড়ক চারলেনে উন্নীত করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। ইতোমধ্যে বিশ্বব্যাংকও অর্থায়ন করতে ইচ্ছা পোষণ করেছে। সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার দুবাগ ইউনিয়নের কোনাগ্রাম সীমান্ত এলাকার শেওলা স্থলবন্দর আধুনিকায়ন ও উন্নয়নমূলক কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন পরবর্তী মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি আরও বলেন, বিরোধীরা বলে তারাও উন্নয়ন করেছে। হ্যা, আমিও মানি তারা উন্নয়ন করেছে। তবে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার যে উন্নয়নযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে সেটা হচ্ছে পরিকল্পিত। ১৯৯৭ সালে বিয়ানীবাজারের শেওলা সেতু থেকে শুরু করে স্বপ্নের পদ্মা সেতু- এটা বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের পরিকল্পিত উন্নয়নের অনন্য দৃষ্টান্ত।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার উন্নয়নে বিশ্বাসী বলেই ‘শেওলা থেকে পদ্মা সেতু’ আজ বাংলাদেশের মানূষের কাছে এক অনুভূতির নাম।
সভার শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কে এম তারিকুল ইসলাম।
এ সময় তিনি বলেন, ২০১৮ সালে বিয়ানীবাজারের শেওলা কাস্টমস স্টেশনকে একটি স্থলবন্দর হিসেবে ঘোষণা দেয়া হয়। এরপর বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে শেওলাসহ চারটি স্থলবন্দরের আধুনিকায়ন ও উন্নয়নে কাজ করতে বাংলাদেশ রিজিওনাল কানেকটিভিটি প্রজেক্ট-১ এর আওতায় স্থলবন্দরগুলোর অবকাঠামো উন্নয়ন কাজে হাত দেয় সরকার। এর মধ্যে বিয়ানীবাজারের শেওলা স্থলবন্দর আধুনিকায়ন ও উন্নয়নের জন্য ব্যয় হচ্ছে ১২৪ কোটি টাকা। দীর্ঘ জটিলতার পর আমরা প্রস্তাবিত ২২.১০ একর ভূমি অধিগ্রহণ করতে সক্ষম হয়েছি।
তিনি আরও বলেন, শেওলা স্থলবন্দরের উন্নয়মূলক কাজের মধ্যে রয়েছে ওয়ার হাউজ, অভ্যন্তরীণ রাস্তা, ওপেন স্ট্যাক ইয়ার্ড, পার্কিং ইয়ার্ড, ট্রান্সশিপমেন্ট শেড, ভবন নির্মাণ, ড্রেন, টয়লেট কমপ্লেক্স, ওয়েব্রিজ স্কেল, পানি সরবরাহ, বৈদ্যুতিকীকরণ, ওয়াচ টাওয়ার ও অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা।
বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কে এম তারিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন- সিলেটের বিভাগীয় কাস্টমসের অতিরিক্ত কমিশনার রাশিদুল হাসান, সিলেটের জেলা প্রশাসক এম কাজী এমদাদুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদীপ্ত রায়, বিয়ানীবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মৌসুমী মাহবুব ও বিয়ানীবাজার উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আতাউর রহমান খান।
বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানের একান্ত সচিব কবির খানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রজক্টের সার্বিক বিষয় সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত তথ্য উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ রিজিওনাল কানেকটিভিটি প্রজেক্টের প্রকৌশলী সরোয়ার আহমদ।
তিনি বলেন, সরকার আঞ্চলিক কানেক্টিভিটির মাধ্যমে ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য বৃদ্ধি করতে শেওলা স্থলবন্দরের অবকাঠামো উন্নয়নে প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়েছে। পাশাপাশি এই প্রকল্পের অধীন শেওলা স্থলবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আধুনিকায়ন করা হচ্ছে।
সভায় জনপ্রতিনিধি, প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ, কাস্টমস কর্মকর্তা, সুশীল সমাজ ও সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।