‘গাঁজা না দেয়ায় রিক্সা চালক কালুকে খুন করে পালিয়ে যায় হাসান’

30
ওসমানীনগরে রিক্সা চালক খুনের ঘটনায় আটক হাসান মিয়া মনাই।

ওসমানীনগর থেকে সংবাদদাতা :
গাঁজা সেবনকে কেন্দ্র করে ওসমানীনগরে রিক্সা চালক কালু মিয়া খুন হয়েছেন। কালু খুনের ঘটনায় মূল হুতাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত হাসান মিয়া মনাই (২৬)। সে মৌলভীবাজারের মীলপুর মাঝপাড়া গ্রামের ইলিয়াছ আলীর পুত্র। গত শুক্রবার মৌলভীবাজারে অভিযান চালিয়ে ঘাতককে গ্রেফতার করা হয়। থানা পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে হত্যাকান্ডের সাথে সরাসরি জড়িত রয়েছে বলে জানিয়েছে। পুলিশ শনিবার আদালতে নিলে সে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়ে হত্যাকান্ডের সাথে সরাসরি জরিত বলে আদালতকে জানিয়েছে। পরবর্তীতে আদালত তাকে জেল হাজাতে প্রেরণ করেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ২১ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৭টার দিকে ভাড়ায় একটি ব্যাটারিচালিত রিক্সা নিয়ে গহরপুর মাদ্রাসার ওয়াজ মাহফিলে যাবার কথা বলে ঘর থেকে বের হন বালাগঞ্জ উপজেলার দেওয়ানবাজার ইউনিয়নের শিওরখাল গ্রামের মৃত জানু মিয়ার ছেলে কালু মিয়া। বালাগঞ্জ উপজেলার সিরাজপুর (গহরপুর) গ্রামের ছহুল আহমদের গরুর খামারের কাজে নিয়োজিত হাসান মিয়া মনাই এক সাথে কালু মিয়ার রিক্সা যোগে ওসমানীনগর উপজেলার তাজপুর বাজারে উদ্দেশ্যে রওয়া হয়। পথিমধ্যে কালু মিয়া পাঁচপাড়ার পোস্ট অফিসের কাছে আসলে দুর্ঘটনাবশত: পথচারীর গায়ে রিকশা তুলে দেয় চালক। যার ফলে কালু মিয়ার রিক্সাসহ দুইজনকেই আহত ব্যক্তির শ^শুর বাড়ীতে নিয়া আটকে রাখা হয়। তখন কালু মিয়াকে ছাড়ার জন্য যাত্রী হাসান মিয়া মনাইও অনুরোধ করে। এক পর্যায়ে রিক্সা আটকে রেখে চালক ও যাত্রী দুজনকেই ছেড়ে দেওয়া হয়। দুজনে পায়ে হেঁেট তাজপুর বাজারে পৌঁছে চালক কালু আলাদা হয়ে সরু একটি গলি দিয়ে ভিতরে যায়। কিছু সময় পর ফিরে এসে চালক কালু মিয়া বলে মাদ্রাসার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন। তারা দুইজনে পাঁয়ে হেঁটে কার ওয়াশের সামনে আসলে কালু মিয়ার কাছে ২৫০ গ্রাম গাঁজা আছে তা সে সেবন করবে বলে যাত্রীকে জানায়। এবং সাথে সাথেই কালু মিয়া বলে রাস্তার পাশে বসে গাঁজা খাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। যাত্রী হাসান চালক কালু মিয়ার কাছে কিছু গাঁজা চাইলে তাকে দিতে অপারগতা প্রকাশ করে চালক কালু। এবং সেখানেই সব গাঁজা সেবন করেন চালক একাই। তারপর তারা দুজনে পায়ে হেঁটে দয়ামীরের দিকে রওয়ানা হয়। কালু মিয়া গাঁজার নেশায় আচ্ছন্ন ছিল। হাওড়ের রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় রাত সাড়ে ১০টার দিকে দয়ামীর ইউনিয়নের চক মন্ডল কাপন চকেরবন্দ গ্রামে কালু মিয়া হেুাচট খেয়ে পড়ে যায়। তখন হাসান কালু মিয়ার কোন নড়াচড়া বা সাড়াশব্দ না পেয়ে কালু মিয়ার পরনে থাকা জ্যাকেট এর ফিতা ধরে কালু মিয়ার গলায় একটি গিট দিয়ে স্বজোরে টান দেয়। কালু মিয়াকে ঐ অবস্থায় ফেলে রেখে হাসান পালিয়ে যায়। পরদিন খুন হওয়ার চালকের পুত্র ছেলে কয়েছ আহমদ জাহেদ বাদি হয়ে ওসমানীগর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করলে থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে হত্যাকান্ডে জরিত থাকায় হাসানকে গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করে।
ওসমানীগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি)শ্যামল বনিক বলেন, খুন হওয়া চালকের পুত্র বাদি বাদি হয়ে থানায় মামলা দায়ের করলে পুলিশ এ খুনের রহস্য উদঘাটন করেছে। হত্যাকান্ডের সাথে সরিসরি জরিত থাকায় হাসানকে গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করলে আদালত তাকে জেল হাজতে পাটিয়েছেন।